আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থার (আইএইএ) সঙ্গে সব ধরনের সহযোগিতা বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে ইরান। দেশটির প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান এ ঘোষণা দেন। বুধবার (২ জুলাই) রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম প্রেস টিভির বরাতে কাতারভিত্তিক আলজাজিরা এই খবর দিয়েছে।
এদিকে, ইরানের আধা-সরকারি বার্তাসংস্থা তাসনিম জানিয়েছে, সম্প্রতি পার্লামেন্টে পাস হওয়া একটি আইনে আইএইএ-র সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার নির্দেশনা ছিল, যেটি প্রেসিডেন্ট এখন অনুমোদন দিয়ে কার্যকর করেছেন। ফলে দেশটির সরকারের জন্য আইএইএ-র সঙ্গে সব ধরনের সহযোগিতা বন্ধ রাখা এখন আইনত বাধ্যতামূলক।
বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপ পারমাণবিক পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থায় বড় ধরনের বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে এবং তেহরানের পরমাণু কর্মসূচি ঘিরে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ আরও বাড়াবে।
ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘর্ষের পর ইরান ও জাতিসংঘের পারমাণবিক সংস্থার মধ্যে সম্পর্ক আরও অবনতির দিকে যায়।
উল্লেখ্য, গত ১৩ জুন ইরানের একটি সামরিক ও পারমাণবিক গবেষণা স্থাপনায় বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। এর জবাবে তেহরানও ইসরায়েল লক্ষ্য করে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ছোড়ে। সংঘাতের এক পর্যায়ে ইসরায়েলের পক্ষ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় বোমা হামলা চালায়। যদিও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দূতিয়ালিতেই ১২ দিনব্যাপী স্থায়ী ওই সংঘাত ২৪ জুন যুদ্ধবিরতির মধ্য দিয়ে শেষ হয়।
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও, আইএইএ-র সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্নের ইরানের এই ঘোষণায় পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।
তারা বলছেন, আইএইএ-র পর্যবেক্ষণ ছাড়া ইরানের পরমাণু কর্মসূচির স্বচ্ছতা বজায় রাখা কঠিন হয়ে পড়বে। সংস্থাটি দীর্ঘদিন ধরেই তেহরানের ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে আসছিল। পশ্চিমা দেশগুলোর আশঙ্কা, ইরান বেসামরিক কর্মসূচির আড়ালে পরমাণু অস্ত্র তৈরির পথে এগোতে পারে। যদিও তেহরান বরাবরই বলে আসছে, তাদের পরমাণু কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে ব্যবহারের জন্য।
কেকে