ঢাকা ০৪:১৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ জুলাই ২০২৫, ৪ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়েছিল: ট্রাম্প

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার সাম্প্রতিক সংঘাতে অন্তত পাঁচটি যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছিল।

ওই সংঘাতের সূত্রপাত হয়েছিল এপ্রিলে, ভারতশাসিত কাশ্মীরে জঙ্গিদের হামলার পর। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ভারত পাকিস্তানে ‘জঙ্গি আস্তানায়’ হামলা চালালে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা তীব্র হয়। পরে মে মাসে অস্ত্রবিরতির মধ্য দিয়ে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়।

ট্রাম্প শুরু থেকেই দাবি করে আসছেন, এই অস্ত্রবিরতি তার কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফল। তবে ভারত জানিয়েছে, এটি ছিল দুই দেশের পারস্পরিক আলোচনার ফসল—তৃতীয় কোনো পক্ষ এতে মধ্যস্থতা করেনি।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, হোয়াইট হাউসে এক নৈশভোজে রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, ‘বিমানগুলোকে আকাশেই গুলি করা হয়েছিল। পাঁচটি, পাঁচটি, চার কি পাঁচটি, তবে আমার মনে হয় প্রকৃতপক্ষে পাঁচটি যুদ্ধবিমান গুলি করে নামানো হয়।’

তবে তিনি স্পষ্ট করেননি, ভারত বা পাকিস্তান—কোন পক্ষের কতটি বিমান ভূপাতিত হয়েছে।

পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। অন্যদিকে ভারতও পাকিস্তানের ‘কিছু বিমান’ গুলি করে নামানোর কথা বলেছে। ইসলামাবাদ অবশ্য কোনো বিমান হারানোর কথা অস্বীকার করেছে, তবে স্বীকার করেছে যে, তাদের একাধিক বিমানঘাঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

মে মাসের শেষ দিকে ভারতের এক শীর্ষ জেনারেল জানান, সংঘাতের প্রথম দিনে আকাশে ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়ার পর ভারত কৌশল পরিবর্তন করেছিল। অস্ত্রবিরতির আগ পর্যন্ত তারা নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করেছিল বলেও দাবি করেন তিনি।

ট্রাম্পের ভাষ্যমতে, ১০ মে তিনি নিজেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রথমবারের মতো ভারত-পাকিস্তান অস্ত্রবিরতির ঘোষণা দেন। তবে নয়া দিল্লি ট্রাম্পের হস্তক্ষেপের দাবিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের বক্তব্য, এই অস্ত্রবিরতি বাইরের কোনো চাপ নয়, বরং দু’দেশের সম্মতিতেই হয়েছে।

ভারতের অবস্থান পরিষ্কার—পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সমস্যার সমাধানে তৃতীয় কোনো পক্ষের হস্তক্ষেপ তারা চায় না।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র এশিয়ায় চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবেলায় ভারতকে গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করছে, আবার পাকিস্তানও তাদের দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র।

উল্লেখ্য, এপ্রিল মাসে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে ‘জঙ্গি হামলায়’ ২৬ জন নিহত হয়। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করলেও ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করে নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানায়।

যুক্তরাষ্ট্র হামলার নিন্দা জানালেও সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করেনি। তবে সম্প্রতি ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ)-কে ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। ভারতের দাবি, লস্কর-ই-তৈয়বার এই শাখা সংগঠনই এপ্রিলের হামলার পেছনে ছিল।

কেকে

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

ভারত-পাকিস্তান সংঘাতে পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়েছিল: ট্রাম্প

আপডেট সময় : ০৮:৫৩:৪৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুলাই ২০২৫

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার সাম্প্রতিক সংঘাতে অন্তত পাঁচটি যুদ্ধবিমান গুলি করে ভূপাতিত করা হয়েছিল।

ওই সংঘাতের সূত্রপাত হয়েছিল এপ্রিলে, ভারতশাসিত কাশ্মীরে জঙ্গিদের হামলার পর। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ভারত পাকিস্তানে ‘জঙ্গি আস্তানায়’ হামলা চালালে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা তীব্র হয়। পরে মে মাসে অস্ত্রবিরতির মধ্য দিয়ে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়।

ট্রাম্প শুরু থেকেই দাবি করে আসছেন, এই অস্ত্রবিরতি তার কূটনৈতিক প্রচেষ্টার ফল। তবে ভারত জানিয়েছে, এটি ছিল দুই দেশের পারস্পরিক আলোচনার ফসল—তৃতীয় কোনো পক্ষ এতে মধ্যস্থতা করেনি।

বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন অনুযায়ী, হোয়াইট হাউসে এক নৈশভোজে রিপাবলিকান আইনপ্রণেতাদের উদ্দেশে ট্রাম্প বলেন, ‘বিমানগুলোকে আকাশেই গুলি করা হয়েছিল। পাঁচটি, পাঁচটি, চার কি পাঁচটি, তবে আমার মনে হয় প্রকৃতপক্ষে পাঁচটি যুদ্ধবিমান গুলি করে নামানো হয়।’

তবে তিনি স্পষ্ট করেননি, ভারত বা পাকিস্তান—কোন পক্ষের কতটি বিমান ভূপাতিত হয়েছে।

পাকিস্তান দাবি করেছে, তারা ভারতের পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে। অন্যদিকে ভারতও পাকিস্তানের ‘কিছু বিমান’ গুলি করে নামানোর কথা বলেছে। ইসলামাবাদ অবশ্য কোনো বিমান হারানোর কথা অস্বীকার করেছে, তবে স্বীকার করেছে যে, তাদের একাধিক বিমানঘাঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

মে মাসের শেষ দিকে ভারতের এক শীর্ষ জেনারেল জানান, সংঘাতের প্রথম দিনে আকাশে ক্ষয়ক্ষতির মুখে পড়ার পর ভারত কৌশল পরিবর্তন করেছিল। অস্ত্রবিরতির আগ পর্যন্ত তারা নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী করেছিল বলেও দাবি করেন তিনি।

ট্রাম্পের ভাষ্যমতে, ১০ মে তিনি নিজেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রথমবারের মতো ভারত-পাকিস্তান অস্ত্রবিরতির ঘোষণা দেন। তবে নয়া দিল্লি ট্রাম্পের হস্তক্ষেপের দাবিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। তাদের বক্তব্য, এই অস্ত্রবিরতি বাইরের কোনো চাপ নয়, বরং দু’দেশের সম্মতিতেই হয়েছে।

ভারতের অবস্থান পরিষ্কার—পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সমস্যার সমাধানে তৃতীয় কোনো পক্ষের হস্তক্ষেপ তারা চায় না।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্র এশিয়ায় চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাব মোকাবেলায় ভারতকে গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করছে, আবার পাকিস্তানও তাদের দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র।

উল্লেখ্য, এপ্রিল মাসে ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের পেহেলগামে ‘জঙ্গি হামলায়’ ২৬ জন নিহত হয়। ভারত এই হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করলেও ইসলামাবাদ তা অস্বীকার করে নিরপেক্ষ তদন্তের আহ্বান জানায়।

যুক্তরাষ্ট্র হামলার নিন্দা জানালেও সরাসরি পাকিস্তানকে দায়ী করেনি। তবে সম্প্রতি ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’ (টিআরএফ)-কে ‘বিদেশি সন্ত্রাসী সংগঠন’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে। ভারতের দাবি, লস্কর-ই-তৈয়বার এই শাখা সংগঠনই এপ্রিলের হামলার পেছনে ছিল।

কেকে