বিপ্লব হাসান হৃদয়,শরীয়তপুর জেলা প্রতিনিধি:
শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি মুন্সির শামসুল আলম দাদনের বিরুদ্ধে নানা অপকর্ম, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ এবং আওয়ামী লীগের সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ তুলে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের কাছে লিখিত অভিযোগ পাঠিয়েছেন উপজেলা বিএনপির সদস্য মো. ফেরদৌস মুন্সী।
লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, দাদন মুন্সি নড়িয়া-২ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও পানি সম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীমের আপন মামাতো ভাই। তিনি দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী লীগের সঙ্গে নানা কার্যক্রমে জড়িত ছিলেন এবং এখনো তাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।
অভিযোগে আরও বলা হয়, ২০২৫ সালের ৯ মে দাদন মুন্সি আওয়ামী লীগের শতাধিক নেতাকর্মীকে সঙ্গে নিয়ে নোয়াপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয়ের উদ্বোধন করেন, যা বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়।
এছাড়া অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, তিনি নড়িয়ার সুরেশ্বর ঘাটের মাছের আড়ৎ জোরপূর্বক বন্ধ করে ২৪ লক্ষ টাকা চাঁদা আদায় করেন এবং তা আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে বুঝিয়ে দেন। গত ১০ আগস্ট ২০২৪ সাল থেকে বিএনপির সদস্যদের নিয়ে পদ্মা নদীতে ২০-২৫টি অবৈধ ড্রেজার ব্যবহার করে বালু উত্তোলনের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা অর্জনের অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, তিনি ২০২১ সালে নড়িয়ার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের সরকারি খাস জমির একটি বড় অংশ জোরপূর্বক দখল করেন। এছাড়া অসহায় মানুষের জমিজমা ও সামাজিক বিরোধের সালিশের নামে অর্থ আদায়, বাজার ও ঘাট দখল করে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করার মতো কর্মকাণ্ডের অভিযোগও রয়েছে।
এই সব অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা বিএনপির সাধারণ নেতাকর্মীরা তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এবং দলের ভাবমূর্তি রক্ষায় কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নড়িয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি শামসুল আলম দাদন মুন্সি বলেন, “শুনেছি ফেরদৌস মুন্সি আমার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করেছে। তবে কেন করেছে, তা আমার জানা নেই। ফেরদৌস আমার চাচাতো ভাই এবং সেই হিসেবে সেও এনামুল হক শামীমের মামাতো ভাই। সে এক সময় আওয়ামী লীগ করেছে এবং এনামুল হক শামীমের জন্য ভোট চেয়েছে। যদিও এখন সে নড়িয়া উপজেলা বিএনপির কার্যনির্বাহী সদস্য। বর্তমানে সে নোয়াপাড়া ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতির পদ পেতে চায়।”
জেলা বিএনপির সভাপতি শফিকুর রহমান কিরণ বলেন, “আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় নড়িয়া উপজেলা বিএনপির সভাপতি দাদন মুন্সির বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ দেখেছি। তবে কেউ আমাকে লিখিতভাবে কিছু জানায়নি। যদি কেউ প্রমাণসহ চাঁদাবাজি বা অন্য কোনো গুরুতর অভিযোগ দেয়, তাহলে আমি অবশ্যই সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
এমএস