ঢাকা ০৬:০৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ৩০ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘ক্রিম আপা’ এখন কারাগারে

ক্রিম আপা। ছবি: সংগৃহীত

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশি ভিউ পেতে সন্তানদের ওপর ‘নির্যাতন চালিয়ে’ ভিডিও বানানোর অভিযোগে ‘ক্রিম আপা’ খ্যাত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর শারমিন শিলাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

শুক্রবার ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জিনাত জাহানের আদালত এ আদেশ দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) ওমর ফারুক তাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক আবেদন করেন।

শারমিন শিলার পক্ষে একাধিক আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেছেন। আদালত জামিন আবেদন গ্রহণ না করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

আশুলিয়া থানা আদালতের প্রসিকিউশন বিভাগের আবুল খায়ের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এর আগে বুধবার আশুলিয়া থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা করেন সাভার উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কাজী ইসরাত জামান। পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

মামলা সূত্রে জানা যায়, শারমিন শিলা একজন বিউটিশিয়ান। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘ক্রিম আপা’ নামে পরিচিত। তিনি মূলত মেকআপের জন্য কাজ করেন এবং বিভিন্ন রকম ক্রিম তৈরি করে বিক্রি করেন। তার পরিবারে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তিনি ছেলে ও মেয়েকে ফেসবুকসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ভিডিও তৈরি করে পোস্ট দেন।

গত ৩ মার্চ বিকাল ৪টায় তার ফেসবুক আইডি থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়।

সেই ভিডিওতে দেখা যায়, শারমিন তার মেয়েকে জোর করে মুখে খাবার দিচ্ছেন। মেয়েটি খেতে না চাইলে এক হাতে মুখে চাপ দিয়ে অন্য হাতে কেক জাতীয় খাবার মুখে ঢোকাচ্ছেন তিনি।

ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

এজাহারে আরও বলা হয়, শারমিন শিলা মাতৃসুলভ আচরণ না করে সন্তানদের প্রতি নিষ্ঠুর ব্যবহার করছেন, যা তাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এমন আচরণ শিশু আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন ‘একাই একশো’ গত ৬ এপ্রিল ঢাকা জেলা প্রশাসকের কাছে শারমিনের বিরুদ্ধে স্মারকলিপি দেয়। পরে জেলা প্রশাসন তিন দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেয়।

আলোচনার মুখে পড়ে শারমিন শিলা এক ফেসবুক লাইভে এসে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চান এবং জানান, ভবিষ্যতে এমন ভিডিও আর করবেন না।

তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, ক্ষমা চাইলেও শিশু নির্যাতনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

কেকে

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

জনপ্রিয় সংবাদ

‘ক্রিম আপা’ এখন কারাগারে

আপডেট সময় : ০৭:৫৩:০৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বেশি ভিউ পেতে সন্তানদের ওপর ‘নির্যাতন চালিয়ে’ ভিডিও বানানোর অভিযোগে ‘ক্রিম আপা’ খ্যাত কন্টেন্ট ক্রিয়েটর শারমিন শিলাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

শুক্রবার ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জিনাত জাহানের আদালত এ আদেশ দেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) ওমর ফারুক তাকে আদালতে হাজির করে কারাগারে আটক আবেদন করেন।

শারমিন শিলার পক্ষে একাধিক আইনজীবী জামিন চেয়ে আবেদন করেছেন। আদালত জামিন আবেদন গ্রহণ না করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

আশুলিয়া থানা আদালতের প্রসিকিউশন বিভাগের আবুল খায়ের এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এর আগে বুধবার আশুলিয়া থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা করেন সাভার উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা কাজী ইসরাত জামান। পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়।

মামলা সূত্রে জানা যায়, শারমিন শিলা একজন বিউটিশিয়ান। তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ‘ক্রিম আপা’ নামে পরিচিত। তিনি মূলত মেকআপের জন্য কাজ করেন এবং বিভিন্ন রকম ক্রিম তৈরি করে বিক্রি করেন। তার পরিবারে এক ছেলে ও এক মেয়ে রয়েছে। তিনি ছেলে ও মেয়েকে ফেসবুকসহ বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে ভিডিও তৈরি করে পোস্ট দেন।

গত ৩ মার্চ বিকাল ৪টায় তার ফেসবুক আইডি থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়।

সেই ভিডিওতে দেখা যায়, শারমিন তার মেয়েকে জোর করে মুখে খাবার দিচ্ছেন। মেয়েটি খেতে না চাইলে এক হাতে মুখে চাপ দিয়ে অন্য হাতে কেক জাতীয় খাবার মুখে ঢোকাচ্ছেন তিনি।

ভিডিওটি ছড়িয়ে পড়ার পর দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।

এজাহারে আরও বলা হয়, শারমিন শিলা মাতৃসুলভ আচরণ না করে সন্তানদের প্রতি নিষ্ঠুর ব্যবহার করছেন, যা তাদের শারীরিক ও মানসিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এমন আচরণ শিশু আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।

শিশুদের অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠন ‘একাই একশো’ গত ৬ এপ্রিল ঢাকা জেলা প্রশাসকের কাছে শারমিনের বিরুদ্ধে স্মারকলিপি দেয়। পরে জেলা প্রশাসন তিন দিনের মধ্যে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেয়।

আলোচনার মুখে পড়ে শারমিন শিলা এক ফেসবুক লাইভে এসে দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চান এবং জানান, ভবিষ্যতে এমন ভিডিও আর করবেন না।

তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বলছে, ক্ষমা চাইলেও শিশু নির্যাতনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

কেকে