নাটোর প্রতিনিধিঃ
নাটোরের গুরুদাসপুরে ৭ বছরের শিশুকে ধর্ষণ ও গলা টিপে হত্যার দায়ে মোঃ সাকিব(২৪) নামে এক কিশোরকে শিশু আইনে ১০ বছরের আটকাদেশ দিয়েছেন আদালত।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারী) বেলা ১১ টার সময় নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনালের বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোঃ আব্দুর রহিম আসামীর উপস্থিতে এ রায় দেন। ঘটনার সময় আসামীর বয়স ছিল ১৬ বছর। দন্ডপ্রাপ্ত সাকিব গুরুদাসপুর উপজেলার বালসা গ্রামের মোঃ মিলনের ছেলে।
নাটোরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল এর স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর(বিশেষ পিপি) অ্যাডভোকেট আব্দুল কাদের মিয়া জানান, ২০১৭ সালের ২০ ডিসেম্বর গুরুদাসপুর উপজেলার বালসা গ্রামের মনিরুল ইসলাম এর শিশু কন্যা খাদিজা খাতুন আপন চাচা মিলনের বাড়িতে টেলিভিশন দেখার জন্য প্রবেশ করে। সে সময় তার চাচাতো ভাই সাকিব একাই ওই ঘরে বসে টেলিভিশন দেখছিল। এসময় বাড়িতে অন্য কেউ ছিল না। এই সুযোগে সাকিব চাচাতো বোন খাদিজাকে একা পেয়ে মুখে গামছা বেঁধে ধর্ষন করে। এতে রক্তক্ষরণ হয়ে অসুস্থ হয়ে পড়ে খাদিজা। এ অবস্থায় সাকিব ভীত হয়ে খাদিজাকে গলা টিপে হত্যা করে। পরে তার বাবা মাকে বিষয়টি খুলে বলে। এ ঘটনা লুকাতে তারা পরিকল্পিত ভাবে খাদিজাকে একটি প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে খাটের নিচে লুকিয়ে রাখে।
অন্যদিকে খাদিজার মা-বাবা আত্মীয় স্বজন খুঁজাখুঁজি শুরু করেন। এসময় চতুরতা করে তারাও(সাকিবের পরিবার) তাদের সাথে খুঁজাখুঁজি শুরু করে দেন। খাদিজার সন্ধান না পেয়ে পরদিন ২১ ডিসেম্বর বাবা মনিরুল ইসলাম ওরফে মধু গুরুদাসপুর থানায় সাধারণ ডায়রি করেন। আর এদিকে সাকিব ও তার পরিবারের লোকজনবিষটি গোপন করতে রাতের আধারে বাড়ির পাশে একটি দিঘীতে মরদেহটি ফেলে দেয়। অর্থাৎ ঘটনার দুইদিন পর ২২ ডিসেম্বর খাদিজার বস্তাবন্দি মরদেহ পাশের দিঘী থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
এ ঘটনায় খাদিজার বাবা মনিরুল বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন। ময়না তদন্তে শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর অভিযানে নেমে মিলনের ছেলে সাকিবকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সাকিবের স্বীকারোক্তি, তথ্য প্রমাণ ও ডিএনএ পরীক্ষা ও দীর্ঘ তদন্ত শেষে তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক(এসআই) নূরের আলম সিদ্দিকী ২০১৮ সালের ৯ ডিসেম্বর আদালতে চার্জসীট দেন। ওই মামলার দীর্ঘ শুনানি ও সাক্ষ্য প্রমান শেষে আদালতের বিচারক সোমবার(১০ ডিসেম্বর)’২৫ এ রায় ঘোষনা করেন। তিনি বলেন, ঘটনার সময় দন্ডপ্রাপ্ত সাকিবের বয়স ছিল ১৬ বছর। তাই বিচারক শিশু আইনে তাকে আটকাদেশ দেন।