ঢাকা ১১:৫০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫, ১৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
কলকাতার মতো শহর পৃথিবীতে নেই : জয়া আহসান চলতি মাসেই জুলাই সনদ প্রকাশ করতে হবে : রাশেদ প্রধান জুলাই সনদ নিয়ে টালবাহানা সহ্য করা হবে না : নাহিদ ইসলাম সংস্কারবিহীন কোনো নির্বাচন জামায়াত গ্রহণ করবে না: তাহের দুঃখিত, এবার আর তা হবে না: প্রেস সচিব জুলাই অভ‍্যুত্থান স্মরণে মাসব্যাপী কর্মসূচি উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা স্বৈরাচারের লক্ষণ দেখামাত্রই যেন বিনাশ করতে পারি: প্রধান উপদেষ্টা জুলাই ঘোষণাপত্র দেবে অন্তর্বর্তী সরকার, কোনো দল বা ব্যক্তি নয় : জুলাই ঐক্য পদ্মা সেতুর মামলার প্রতিবেদন গায়ের জোরে দিয়েছে বিগত কমিশন : দুদক চেয়ারম্যান সবুজ পৃথিবী চাই: বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ ঢাকা আলিয়ার বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি

সাদপন্থিদের নানা অভিযোগ, প্রধান উপদেষ্টার কাছে ১০ দফা দাবি

ছবিঃ সংগৃহীত

তাবলিগ জামাতের সাদপন্থি আলেম-ওলামারা অভিযোগ করেছেন, মামুনুল হক তাবলিগের কেউ না হয়েও আগুনের মধ্যে পানি না ঢেলে কেরোসিন ঢেলেছেন। দুপক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও সংঘাত নিরসনের বদলে তা আরও উসকে দিয়েছেন।

সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী হলে ‘তাবলিগ জামাতের মাওলানা সাদ অনুসারীদের ওপর জুলুম-নির্যাতন, হামলা-মামলা, শীর্ষ মুরুব্বিদের নামে মিথ্যা মামলা ও কারাবন্দি আলেমেদ্বীন মুফতি মুয়াজ বিন নূরের নিঃশর্ত মুক্তি দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তাবলিগ জামাতের নিজামউদ্দিন অনুসারী শফিক বিন নাঈম এই অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমার মাঠে সংঘর্ষের ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবিও করা হয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ১৮ ডিসেম্বর টঙ্গীর ময়দানে দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে, সেজন্য আমরা মর্মাহত। আমরা লক্ষ্য করেছি, এই ঘটনাকে রাজনৈতিক আলেমরা তাদের স্বার্থসিদ্ধির প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করছেন। সারা দেশে অহিংস ও শান্তিপ্রিয় তাবলীগ জামাতের মাওলানা সাদের অনুসারীদের ঘরবাড়ি ও দোকানপাট ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় আমাদের সাথীদের ওপর বর্বরোচিত আক্রমণ হচ্ছে। মামলা ছাড়াই সাথীদের গ্রেফতার, বিভিন্ন মসজিদে সাথীদের নামাজ ও ইবাদত করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। পুলিশের সহযোগিতায় একদল উগ্রপন্থীরা বাসাবাড়িতে গিয়েও তাবলিগের সাথীদের মারধর করছেন। অন্যায়ভাবে এক পক্ষের মুখপাত্রকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে বিদেশি মেহমানমানদের ওপরও তারা হামলা করছেন।

মাওলানা শফিক বিন নাঈম বলেন, গত ২০ ডিসেম্বর টঙ্গীর তুরাগ তীরে আমাদের পূর্ব নির্ধারিত জোড় (পুরানা তাবলীগের সাথীদের বাৎসরিক সম্মেলন) করার লক্ষ্যে ইজতেমা মাঠের পশ্চিম পাশে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিয়েছিলেন। যেকোনো সংঘাত এড়াতে আমরা ইতোপূর্বে প্রশাসনকে বারবার অবহিত করে ৩৬টি চিঠি দিয়েছি। তাছাড়া জুবায়েরপন্থি ও হেফাজতের নেতাদের কাছে আমরা শান্তি ও সমঝোতার প্রস্তাব জানিয়েছি।ওলামায়ে কেরামকে দারুল উলুম দেওবন্দের নীতি আদর্শের ভিত্তিতে তাবলীগ বিষয়ে নিরপেক্ষ থাকার আহ্বান করেছি। কিন্তু তারা সমঝোতা করেননি। এমনকি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকেও আমাদের তাবলিগের সাথীদের পুলিশ ও সাংবাদিকদের সামনে তারা প্রকাশ্যে অপহরণ করে কাকরাইল মসজিদে নিয়ে নির্যাতন করেছেন।

জুবায়েরপন্থিরা দেশব্যাপী তাণ্ডব চালাচ্ছে অভিযোগ করে আরও বলা হয়, একটি রাজনৈতিক মহলের প্রকাশ্য ইন্ধন, উস্কানি ও মদদে টঙ্গীতে দুই পক্ষের মধ্যে যে সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটেছে তাকে কেন্দ্র করে সারাদেশে কিভাবে ভয়াবহ এক মবজাস্টিসের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।এই অপশক্তিটির গভীর ষড়যন্ত্রের কারণে বিশ্ব ইজতেমা আজ হুমকির মধ্যে পড়েছে। তারা তাদের রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য আন্তর্জাতিক বিশ্ব ইজতেমার এই ইভেন্টকে নিজেদের দখলে নেওয়ার পায়তারা করে চলছে। এমনকী তাদের উগ্রতা ও নৃশংসতা থেকে জাতীর বিবেক গনমাধ্যম কর্মীরাও নিরাপদ নন। কয়েকটি জেলায় লাইভ চলাকালিন সাংবাদিকদের উপরও জুবায়েরপন্থীরা হামলা চালায়। এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত থাকলেও সাংবাদিকদের তাদের আক্রমণ থেকে বাঁচাতে কোন ভূমিকা পালন করতে পারেন নি। আমাদের জানতে ইচ্ছে করে ধর্মীয় ফ্যাসিবাদের এই ভয়াবহ উগ্রতার শেষ কোথায়? আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে জানাচ্ছি, দেশের বৃহত্তর এই জনগোষ্ঠীকে বরাবর বৈষম্য ও বিচার বঞ্চিত করা দেশকে ভয়াবহ অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দেওয়ার নামান্তর।

তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের সাধারণ সাথী এবং উলামায়ে কেরামের ব্যানারে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে ১০ দফা দাবি তুলে ধরা হয়।

উল্লেখযোগ্য দাবিগুলো হওলা : তাবলিগ জামাতের বিশ্ব আমির হজরত মাওলানা সাদ কান্ধলভীর উপস্থিতি নিশ্চিত করা; অনুসারী সব মুরুব্বির নামে করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার; কারাবিন্দ আলেমেদ্বীন মুফতি মুয়াজ বিন নূরকে অতিসত্বর নিঃশর্ত মুক্তি; কাকরাইল মসজিদ, টঙ্গীর বিশ্ব ইজতিমা ও সারা বাংলাদেশে মসজিদভিত্তিক তাবলিগের কাজকে সমান অধিকারের ভিত্তিতে পরিচালনার পরিবেশ তৈরি করতে দেওয়া।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মাওলানা মাসুদুল হক কাসেমী, মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মঞ্জুরুল হক প্রমুখ।

কেকে

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

কলকাতার মতো শহর পৃথিবীতে নেই : জয়া আহসান

সাদপন্থিদের নানা অভিযোগ, প্রধান উপদেষ্টার কাছে ১০ দফা দাবি

আপডেট সময় : ১১:১২:৩৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪

তাবলিগ জামাতের সাদপন্থি আলেম-ওলামারা অভিযোগ করেছেন, মামুনুল হক তাবলিগের কেউ না হয়েও আগুনের মধ্যে পানি না ঢেলে কেরোসিন ঢেলেছেন। দুপক্ষের মধ্যে দ্বন্দ্ব ও সংঘাত নিরসনের বদলে তা আরও উসকে দিয়েছেন।

সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাগর-রুনী হলে ‘তাবলিগ জামাতের মাওলানা সাদ অনুসারীদের ওপর জুলুম-নির্যাতন, হামলা-মামলা, শীর্ষ মুরুব্বিদের নামে মিথ্যা মামলা ও কারাবন্দি আলেমেদ্বীন মুফতি মুয়াজ বিন নূরের নিঃশর্ত মুক্তি দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তাবলিগ জামাতের নিজামউদ্দিন অনুসারী শফিক বিন নাঈম এই অভিযোগ করেন।

সংবাদ সম্মেলনে টঙ্গী বিশ্ব ইজতেমার মাঠে সংঘর্ষের ঘটনায় বিচারবিভাগীয় তদন্তের দাবিও করা হয়েছে।

লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, ১৮ ডিসেম্বর টঙ্গীর ময়দানে দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছে, সেজন্য আমরা মর্মাহত। আমরা লক্ষ্য করেছি, এই ঘটনাকে রাজনৈতিক আলেমরা তাদের স্বার্থসিদ্ধির প্ল্যাটফর্ম হিসেবে ব্যবহার করছেন। সারা দেশে অহিংস ও শান্তিপ্রিয় তাবলীগ জামাতের মাওলানা সাদের অনুসারীদের ঘরবাড়ি ও দোকানপাট ভেঙে দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন জায়গায় আমাদের সাথীদের ওপর বর্বরোচিত আক্রমণ হচ্ছে। মামলা ছাড়াই সাথীদের গ্রেফতার, বিভিন্ন মসজিদে সাথীদের নামাজ ও ইবাদত করতে বাধা দেওয়া হচ্ছে। পুলিশের সহযোগিতায় একদল উগ্রপন্থীরা বাসাবাড়িতে গিয়েও তাবলিগের সাথীদের মারধর করছেন। অন্যায়ভাবে এক পক্ষের মুখপাত্রকে গ্রেফতার করা হচ্ছে। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে বিদেশি মেহমানমানদের ওপরও তারা হামলা করছেন।

মাওলানা শফিক বিন নাঈম বলেন, গত ২০ ডিসেম্বর টঙ্গীর তুরাগ তীরে আমাদের পূর্ব নির্ধারিত জোড় (পুরানা তাবলীগের সাথীদের বাৎসরিক সম্মেলন) করার লক্ষ্যে ইজতেমা মাঠের পশ্চিম পাশে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিয়েছিলেন। যেকোনো সংঘাত এড়াতে আমরা ইতোপূর্বে প্রশাসনকে বারবার অবহিত করে ৩৬টি চিঠি দিয়েছি। তাছাড়া জুবায়েরপন্থি ও হেফাজতের নেতাদের কাছে আমরা শান্তি ও সমঝোতার প্রস্তাব জানিয়েছি।ওলামায়ে কেরামকে দারুল উলুম দেওবন্দের নীতি আদর্শের ভিত্তিতে তাবলীগ বিষয়ে নিরপেক্ষ থাকার আহ্বান করেছি। কিন্তু তারা সমঝোতা করেননি। এমনকি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকেও আমাদের তাবলিগের সাথীদের পুলিশ ও সাংবাদিকদের সামনে তারা প্রকাশ্যে অপহরণ করে কাকরাইল মসজিদে নিয়ে নির্যাতন করেছেন।

জুবায়েরপন্থিরা দেশব্যাপী তাণ্ডব চালাচ্ছে অভিযোগ করে আরও বলা হয়, একটি রাজনৈতিক মহলের প্রকাশ্য ইন্ধন, উস্কানি ও মদদে টঙ্গীতে দুই পক্ষের মধ্যে যে সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটেছে তাকে কেন্দ্র করে সারাদেশে কিভাবে ভয়াবহ এক মবজাস্টিসের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে।এই অপশক্তিটির গভীর ষড়যন্ত্রের কারণে বিশ্ব ইজতেমা আজ হুমকির মধ্যে পড়েছে। তারা তাদের রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্য আন্তর্জাতিক বিশ্ব ইজতেমার এই ইভেন্টকে নিজেদের দখলে নেওয়ার পায়তারা করে চলছে। এমনকী তাদের উগ্রতা ও নৃশংসতা থেকে জাতীর বিবেক গনমাধ্যম কর্মীরাও নিরাপদ নন। কয়েকটি জেলায় লাইভ চলাকালিন সাংবাদিকদের উপরও জুবায়েরপন্থীরা হামলা চালায়। এসময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত থাকলেও সাংবাদিকদের তাদের আক্রমণ থেকে বাঁচাতে কোন ভূমিকা পালন করতে পারেন নি। আমাদের জানতে ইচ্ছে করে ধর্মীয় ফ্যাসিবাদের এই ভয়াবহ উগ্রতার শেষ কোথায়? আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে জানাচ্ছি, দেশের বৃহত্তর এই জনগোষ্ঠীকে বরাবর বৈষম্য ও বিচার বঞ্চিত করা দেশকে ভয়াবহ অস্থিতিশীলতার দিকে ঠেলে দেওয়ার নামান্তর।

তাবলিগ জামাত বাংলাদেশের সাধারণ সাথী এবং উলামায়ে কেরামের ব্যানারে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে ১০ দফা দাবি তুলে ধরা হয়।

উল্লেখযোগ্য দাবিগুলো হওলা : তাবলিগ জামাতের বিশ্ব আমির হজরত মাওলানা সাদ কান্ধলভীর উপস্থিতি নিশ্চিত করা; অনুসারী সব মুরুব্বির নামে করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার; কারাবিন্দ আলেমেদ্বীন মুফতি মুয়াজ বিন নূরকে অতিসত্বর নিঃশর্ত মুক্তি; কাকরাইল মসজিদ, টঙ্গীর বিশ্ব ইজতিমা ও সারা বাংলাদেশে মসজিদভিত্তিক তাবলিগের কাজকে সমান অধিকারের ভিত্তিতে পরিচালনার পরিবেশ তৈরি করতে দেওয়া।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন মাওলানা মাসুদুল হক কাসেমী, মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক অধ্যাপক মঞ্জুরুল হক প্রমুখ।

কেকে