ঢাকা ০৬:১৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে নিহত ৭৯৮ ফিলিস্তিনি: জাতিসংঘ জীবনে মানুষের মতো মানুষ হওয়াটাই সবচেয়ে বড় সার্টিফিকেট: কেয়া পায়েল ইউটিউব লাইভ স্ট্রিমে অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য কঠোর আইন চালু সন্ত্রাসী সন্ত্রাসীই, সে যে দলেরই হোক না কেন : আশফাক নিপুন জামায়াতের সঙ্গে জোট নয়, এনসিপির সঙ্গে আলোচনার সম্ভাবনা উন্মুক্ত : সালাহউদ্দিন আহমেদ সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে দেশে দুর্ভিক্ষ হয় কি না, এটা এখন মানুষের মনে মনে: রুহুল কবির রিজভী ২০৩০ বিশ্বকাপের ফাইনাল হবে রিয়ালের মাঠে: মার্কা ওয়েব ব্রাউজার আনছে ওপেনএআই, চ্যালেঞ্জের মুখে গুগল ক্রোম রাজপথে নামাতে বাধ্য করবেন না: আখতার হোসেন বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আলোচনা শেষ

গাজায় ঘণ্টায় একজন নারীকে হত্যা করছে ইসরাইল

ছবি : সংগৃহীত

ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজায় ইসরাইল নির্মম বর্বরতা চালিয়ে যাচ্ছে গত ১৮ মাসের বেশি সময় ধরে। এ সময়ে ইসরাইলি বাহিনী প্রতিদিন অঞ্চলটিতে ঘণ্টায় গড়ে প্রায় একজন করে ফিলিস্তিনি নারীকে হত্যা করেছে এবং এখনো করছে। সোমবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে মানবাধিকার সংস্থা ইউরোপ-মেড হিউম্যান রাইটস মনিটর এ তথ্য জানিয়েছে।

ইউরোপ-মেড হিউম্যান রাইটস মনিটর জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাস থেকে গাজা ভূখণ্ডে সরাসরি বোমাবর্ষণের মাধ্যমে ইসরাইলি দখলদার সেনাবাহিনী প্রতিদিন গড়ে ২১ দশমিক ৩ জন নারীকে হত্যা করেছে। সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, এর মানে—প্রতি ঘণ্টায় প্রায় একজন ফিলিস্তিনি নারী নিহত হয়েছেন। এই হিসাবের মধ্যে অবরোধ, অনাহার বা চিকিৎসার অভাবে মারা যাওয়া নারীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

সংস্থাটি বলেছে, গাজায় নারী হত্যার এ হার ‘বিস্ফোরক’ ও ‘নজিরবিহীন।’ এই হার গাজাবাসীকে নির্মূলে ‘সুসংবদ্ধ ইসরাইলি নীতির’ প্রতিফলন, যেখানে ইচ্ছাকৃতভাবে ফিলিস্তিনি নারীদের, বিশেষ করে মায়েদের লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে।

ইউরোপ-মেডের মাঠপর্যায়ের কর্মীরা হাজার হাজার নারীর হত্যাকাণ্ডের নথি সংগ্রহ করেছেন। তাদের অনেকে সন্তান ধারণে সক্ষম বয়সের এবং হাজার হাজার মা তাদের সন্তানদের সঙ্গেই নিহত হয়েছেন। তাদের বাড়ি, আশ্রয়শিবির, অস্থায়ী আশ্রয়স্থল বা সুরক্ষার খোঁজে পালানোর সময় অথবা সন্তানদের রক্ষা করতে গিয়ে তারা নিহত হয়েছেন।

সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, প্রতিদিন লক্ষ্যবস্তু করার এই প্রবণতা ইঙ্গিত দেয় যে, ইসরাইল গাজায় ফিলিস্তিনি নারীদের হত্যাকে একটি ‘জনগোষ্ঠীকে ধ্বংস করার হাতিয়ার’ হিসেবে ব্যবহার করছে। এটি আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে গণহত্যার অপরাধের আওতায় পড়ে। এটি ফিলিস্তিনি জনগণের ভবিষ্যৎকে সরাসরি হুমকির মুখে ফেলেছে।

গাজা প্রশাসনের স্বাস্থ্যসংক্রান্ত নথি অনুসারে, গাজায় ইসরাইলের গণহত্যার ৫৮২ দিনে ১২ হাজার ৪০০ ফিলিস্তিনি নারী নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৭ হাজার ৯২০ জন ছিলেন মা। মাঠপর্যায়ের তথ্যে দেখা গেছে, সরাসরি ইসরাইলি বোমাবর্ষণের কারণে মা, গর্ভবতী নারী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের মৃত্যুর হার নজিরবিহীন পর্যায়ে পৌঁছেছে।

সংস্থাটি বলেছে, ইসরাইলের লক্ষ্যবস্তু শুধু হত্যার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বর্তমানে ৬০ হাজার গর্ভবতী নারী অপুষ্টি, ক্ষুধা ও অপর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবার মতো ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন। সংস্থাটি ব্যাখ্যা করেছে, মার্চের শুরু থেকে ইসরাইলের কঠোর অবরোধ এবং পণ্য ও ত্রাণ প্রবেশে বাধা দেওয়ার ফলেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

কেকে

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

জনপ্রিয় সংবাদ

গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে নিহত ৭৯৮ ফিলিস্তিনি: জাতিসংঘ

গাজায় ঘণ্টায় একজন নারীকে হত্যা করছে ইসরাইল

আপডেট সময় : ০৮:৪৭:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ১২ মে ২০২৫

ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজায় ইসরাইল নির্মম বর্বরতা চালিয়ে যাচ্ছে গত ১৮ মাসের বেশি সময় ধরে। এ সময়ে ইসরাইলি বাহিনী প্রতিদিন অঞ্চলটিতে ঘণ্টায় গড়ে প্রায় একজন করে ফিলিস্তিনি নারীকে হত্যা করেছে এবং এখনো করছে। সোমবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে মানবাধিকার সংস্থা ইউরোপ-মেড হিউম্যান রাইটস মনিটর এ তথ্য জানিয়েছে।

ইউরোপ-মেড হিউম্যান রাইটস মনিটর জানিয়েছে, ২০২৩ সালের অক্টোবর মাস থেকে গাজা ভূখণ্ডে সরাসরি বোমাবর্ষণের মাধ্যমে ইসরাইলি দখলদার সেনাবাহিনী প্রতিদিন গড়ে ২১ দশমিক ৩ জন নারীকে হত্যা করেছে। সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, এর মানে—প্রতি ঘণ্টায় প্রায় একজন ফিলিস্তিনি নারী নিহত হয়েছেন। এই হিসাবের মধ্যে অবরোধ, অনাহার বা চিকিৎসার অভাবে মারা যাওয়া নারীদের অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি।

সংস্থাটি বলেছে, গাজায় নারী হত্যার এ হার ‘বিস্ফোরক’ ও ‘নজিরবিহীন।’ এই হার গাজাবাসীকে নির্মূলে ‘সুসংবদ্ধ ইসরাইলি নীতির’ প্রতিফলন, যেখানে ইচ্ছাকৃতভাবে ফিলিস্তিনি নারীদের, বিশেষ করে মায়েদের লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে।

ইউরোপ-মেডের মাঠপর্যায়ের কর্মীরা হাজার হাজার নারীর হত্যাকাণ্ডের নথি সংগ্রহ করেছেন। তাদের অনেকে সন্তান ধারণে সক্ষম বয়সের এবং হাজার হাজার মা তাদের সন্তানদের সঙ্গেই নিহত হয়েছেন। তাদের বাড়ি, আশ্রয়শিবির, অস্থায়ী আশ্রয়স্থল বা সুরক্ষার খোঁজে পালানোর সময় অথবা সন্তানদের রক্ষা করতে গিয়ে তারা নিহত হয়েছেন।

সংস্থাটি সতর্ক করে বলেছে, প্রতিদিন লক্ষ্যবস্তু করার এই প্রবণতা ইঙ্গিত দেয় যে, ইসরাইল গাজায় ফিলিস্তিনি নারীদের হত্যাকে একটি ‘জনগোষ্ঠীকে ধ্বংস করার হাতিয়ার’ হিসেবে ব্যবহার করছে। এটি আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে গণহত্যার অপরাধের আওতায় পড়ে। এটি ফিলিস্তিনি জনগণের ভবিষ্যৎকে সরাসরি হুমকির মুখে ফেলেছে।

গাজা প্রশাসনের স্বাস্থ্যসংক্রান্ত নথি অনুসারে, গাজায় ইসরাইলের গণহত্যার ৫৮২ দিনে ১২ হাজার ৪০০ ফিলিস্তিনি নারী নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৭ হাজার ৯২০ জন ছিলেন মা। মাঠপর্যায়ের তথ্যে দেখা গেছে, সরাসরি ইসরাইলি বোমাবর্ষণের কারণে মা, গর্ভবতী নারী ও স্তন্যদানকারী মায়েদের মৃত্যুর হার নজিরবিহীন পর্যায়ে পৌঁছেছে।

সংস্থাটি বলেছে, ইসরাইলের লক্ষ্যবস্তু শুধু হত্যার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বর্তমানে ৬০ হাজার গর্ভবতী নারী অপুষ্টি, ক্ষুধা ও অপর্যাপ্ত স্বাস্থ্যসেবার মতো ভয়াবহ পরিস্থিতির সম্মুখীন। সংস্থাটি ব্যাখ্যা করেছে, মার্চের শুরু থেকে ইসরাইলের কঠোর অবরোধ এবং পণ্য ও ত্রাণ প্রবেশে বাধা দেওয়ার ফলেই এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

কেকে