ঢাকা ১০:৩৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

মৌসুমীর চাবুকে জ্বর, পিঠের দাগ দেখে কেঁদে ফেলেছিলেন সানির মা

ওমর সানি ও মৌসুমী। ছবি : সংগৃহীত

নব্বই দশকের জনপ্রিয় অভিনেতা ওমর সানি তার অভিনয় জীবনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে জানালেন, চাবুকের মার খাওয়ার একটি দৃশ্য থেকে তিনি সত্যিই ব্যথা পেয়েছিলেন এবং জ্বরেও ভুগেছিলেন। ঘটনাটি ঘটে ‘আত্ম অহংকার’ সিনেমার শুটিং চলাকালে, যেখানে মৌসুমীর হাতে চাবুক খাওয়ার দৃশ্যে অভিনয় করেছিলেন তিনি।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এই দৃশ্যের একটি রিল ভাইরাল হয়। এতে মৌসুমীর হাতে চাবুক খাওয়ার দৃশ্য দেখে দর্শকদের মধ্যে আলোচনার ঝড় ওঠে। ওমর সানি নিজেও সেই রিল দেখে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন।

তিনি জানান, ‘প্রেমগীত’ সিনেমাতে প্রথম চাবুকের দৃশ্যে অভিনয় করেন তিনি। পরে ‘আত্ম অহংকার’ ও ‘লাট সাহেবের মেয়ে’ সিনেমাতেও একই ধরনের দৃশ্যে কাজ করেন। এর মধ্যে ‘আত্ম অহংকার’ সিনেমার চাবুকের আঘাতের দৃশ্যে অভিনয় করতে গিয়ে সত্যি সত্যিই আঘাতপ্রাপ্ত হন ওমর সানী।

স্মৃতিচারণ করে ওমর সানি বলেন, ‘মৌসুমীও তখন ‘কেয়ামত থেকে কেয়াম’ সিনেমাতে অভিনয় করে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। মাত্র দুই-তিনটা সিনেমাতে কাজ করেছে। আমাদের দুজনের প্রথম সিনেমা। আমরা গাজীপুরের ন্যাশনাল পার্কের ওদিকটায় একটা ডাক বাংলোয় শুটিং করি। সেই সিনেমাতে সম্ভবত তিনবার চাবুকের মার খাওয়ার দৃশ্য ছিল। প্রথম দিনের শুটিংয়ের চাবুকের মার খেয়েই আমার জ্বর আসে। মৌসুমী নতুন, আমি কয়েক বছর হয় কাজ করছি। নিজেদের প্রমাণ করার ব্যাপারও আছে। চাবুকের মার খাওয়ার দৃশ্যটা একাধিকবারে ওকে হয়। এদিকে দৃশ্যটা বাস্তবসম্মত করতে গিয়ে আমরাও তখন যা করণীয়, করেছি। শুটিং চলাকালীন কিছুই টের পাইনি। রাতে বাসায় ফেরার পর মা দেখলেন, আমার পিঠ লাল হয়ে আছে! এরপর তো হুলস্থুল অবস্থা।’

তিনি আরও জানান, ঢাকার তেজতুরি বাজারে তাদের বাসায় ফেরার পর মা পিঠে লাল দাগ দেখে ভীষণ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। মা বোনদের ডেকে আনেন এবং পরিচালক ও নায়িকার ব্যাপারে জানতে চান।

সানি বলেন, ‘শরীরের অবস্থা দেখে আমার সহকারীকে ডাকেন মা। চিৎকার করে বলতে থাকেন, কী হয়েছে আমার ছেলের? এই ছবির পরিচালক কে? তারে ডেকে নিয়ে আয়। আমার ছেলের এই অবস্থা কেন করছে? নায়িকাই–বা কে ছিল, কেন এভাবে আঘাত করেছে? বোনদের ডেকে অস্থির। তারপর মাকে বুঝিয়ে শান্ত করা হয়। পরে রাতে আমার গায়ে জ্বর চলে আসে। সেই জ্বর নিয়েই পরদিন আবার শুটিং যাই।’

‘আত্ম অহংকার’ ছবির পরিচালক ছিলেন রায়হান মুজিব এবং চিত্রগ্রহণ করেন জেড এই মিন্টু। ‘প্রেমগীত’ পরিচালনা করেন দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, যেখানে নায়িকা ছিলেন লিমা। ‘লাট সাহেবের মেয়ে’ সিনেমাতেও মৌসুমীর সঙ্গে জুটি বাঁধেন ওমর সানি।

নিজের পুরোনো সিনেমা নিয়ে মিশ্র অনুভূতির কথাও জানান তিনি। বলেন, ‘এখন তো আমার নিজের ছবি দেখলে ভালো লাগে না। মনে হয় অভিনয় ভালো হয়নি। এই জিনস প্যান্ট কেন পরলাম। চুলের স্টাইল কেন এভাবে করলাম। হাতের মুঠি এমন কেন করলাম। সংলাপ কেন এভাবে দিলাম—সত্যিই খুব বিরক্ত লাগে। আর এসব কারণে আমার কোনো ছবি পুরোটা দেখা হয়নি, দুই-একটা ছাড়া।’

বর্তমানে চলচ্চিত্রে অনিয়মিত এই অভিনেতা রেস্টুরেন্ট ব্যবসার পাশাপাশি রিয়েল এস্টেট ও প্রযুক্তিপণ্য ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। তিনি জানান, সপ্তাহে পাঁচ দিন নতুন প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন এবং কাজের স্বাধীনতা থাকায় তিনি উপভোগও করছেন।

কেকে

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

জনপ্রিয় সংবাদ

আমার শিরায় সিঁদুর টগবগ করে ফুটছে: নরেন্দ্র মোদি

মৌসুমীর চাবুকে জ্বর, পিঠের দাগ দেখে কেঁদে ফেলেছিলেন সানির মা

আপডেট সময় : ০৮:৩১:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ মে ২০২৫

নব্বই দশকের জনপ্রিয় অভিনেতা ওমর সানি তার অভিনয় জীবনের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে জানালেন, চাবুকের মার খাওয়ার একটি দৃশ্য থেকে তিনি সত্যিই ব্যথা পেয়েছিলেন এবং জ্বরেও ভুগেছিলেন। ঘটনাটি ঘটে ‘আত্ম অহংকার’ সিনেমার শুটিং চলাকালে, যেখানে মৌসুমীর হাতে চাবুক খাওয়ার দৃশ্যে অভিনয় করেছিলেন তিনি।

সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে এই দৃশ্যের একটি রিল ভাইরাল হয়। এতে মৌসুমীর হাতে চাবুক খাওয়ার দৃশ্য দেখে দর্শকদের মধ্যে আলোচনার ঝড় ওঠে। ওমর সানি নিজেও সেই রিল দেখে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন।

তিনি জানান, ‘প্রেমগীত’ সিনেমাতে প্রথম চাবুকের দৃশ্যে অভিনয় করেন তিনি। পরে ‘আত্ম অহংকার’ ও ‘লাট সাহেবের মেয়ে’ সিনেমাতেও একই ধরনের দৃশ্যে কাজ করেন। এর মধ্যে ‘আত্ম অহংকার’ সিনেমার চাবুকের আঘাতের দৃশ্যে অভিনয় করতে গিয়ে সত্যি সত্যিই আঘাতপ্রাপ্ত হন ওমর সানী।

স্মৃতিচারণ করে ওমর সানি বলেন, ‘মৌসুমীও তখন ‘কেয়ামত থেকে কেয়াম’ সিনেমাতে অভিনয় করে জনপ্রিয়তার তুঙ্গে। মাত্র দুই-তিনটা সিনেমাতে কাজ করেছে। আমাদের দুজনের প্রথম সিনেমা। আমরা গাজীপুরের ন্যাশনাল পার্কের ওদিকটায় একটা ডাক বাংলোয় শুটিং করি। সেই সিনেমাতে সম্ভবত তিনবার চাবুকের মার খাওয়ার দৃশ্য ছিল। প্রথম দিনের শুটিংয়ের চাবুকের মার খেয়েই আমার জ্বর আসে। মৌসুমী নতুন, আমি কয়েক বছর হয় কাজ করছি। নিজেদের প্রমাণ করার ব্যাপারও আছে। চাবুকের মার খাওয়ার দৃশ্যটা একাধিকবারে ওকে হয়। এদিকে দৃশ্যটা বাস্তবসম্মত করতে গিয়ে আমরাও তখন যা করণীয়, করেছি। শুটিং চলাকালীন কিছুই টের পাইনি। রাতে বাসায় ফেরার পর মা দেখলেন, আমার পিঠ লাল হয়ে আছে! এরপর তো হুলস্থুল অবস্থা।’

তিনি আরও জানান, ঢাকার তেজতুরি বাজারে তাদের বাসায় ফেরার পর মা পিঠে লাল দাগ দেখে ভীষণ উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন। মা বোনদের ডেকে আনেন এবং পরিচালক ও নায়িকার ব্যাপারে জানতে চান।

সানি বলেন, ‘শরীরের অবস্থা দেখে আমার সহকারীকে ডাকেন মা। চিৎকার করে বলতে থাকেন, কী হয়েছে আমার ছেলের? এই ছবির পরিচালক কে? তারে ডেকে নিয়ে আয়। আমার ছেলের এই অবস্থা কেন করছে? নায়িকাই–বা কে ছিল, কেন এভাবে আঘাত করেছে? বোনদের ডেকে অস্থির। তারপর মাকে বুঝিয়ে শান্ত করা হয়। পরে রাতে আমার গায়ে জ্বর চলে আসে। সেই জ্বর নিয়েই পরদিন আবার শুটিং যাই।’

‘আত্ম অহংকার’ ছবির পরিচালক ছিলেন রায়হান মুজিব এবং চিত্রগ্রহণ করেন জেড এই মিন্টু। ‘প্রেমগীত’ পরিচালনা করেন দেলোয়ার জাহান ঝন্টু, যেখানে নায়িকা ছিলেন লিমা। ‘লাট সাহেবের মেয়ে’ সিনেমাতেও মৌসুমীর সঙ্গে জুটি বাঁধেন ওমর সানি।

নিজের পুরোনো সিনেমা নিয়ে মিশ্র অনুভূতির কথাও জানান তিনি। বলেন, ‘এখন তো আমার নিজের ছবি দেখলে ভালো লাগে না। মনে হয় অভিনয় ভালো হয়নি। এই জিনস প্যান্ট কেন পরলাম। চুলের স্টাইল কেন এভাবে করলাম। হাতের মুঠি এমন কেন করলাম। সংলাপ কেন এভাবে দিলাম—সত্যিই খুব বিরক্ত লাগে। আর এসব কারণে আমার কোনো ছবি পুরোটা দেখা হয়নি, দুই-একটা ছাড়া।’

বর্তমানে চলচ্চিত্রে অনিয়মিত এই অভিনেতা রেস্টুরেন্ট ব্যবসার পাশাপাশি রিয়েল এস্টেট ও প্রযুক্তিপণ্য ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। তিনি জানান, সপ্তাহে পাঁচ দিন নতুন প্রতিষ্ঠানে কাজ করেন এবং কাজের স্বাধীনতা থাকায় তিনি উপভোগও করছেন।

কেকে