ঢাকা ১১:০১ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে নিহত ৭৯৮ ফিলিস্তিনি: জাতিসংঘ জীবনে মানুষের মতো মানুষ হওয়াটাই সবচেয়ে বড় সার্টিফিকেট: কেয়া পায়েল ইউটিউব লাইভ স্ট্রিমে অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য কঠোর আইন চালু সন্ত্রাসী সন্ত্রাসীই, সে যে দলেরই হোক না কেন : আশফাক নিপুন জামায়াতের সঙ্গে জোট নয়, এনসিপির সঙ্গে আলোচনার সম্ভাবনা উন্মুক্ত : সালাহউদ্দিন আহমেদ সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে দেশে দুর্ভিক্ষ হয় কি না, এটা এখন মানুষের মনে মনে: রুহুল কবির রিজভী ২০৩০ বিশ্বকাপের ফাইনাল হবে রিয়ালের মাঠে: মার্কা ওয়েব ব্রাউজার আনছে ওপেনএআই, চ্যালেঞ্জের মুখে গুগল ক্রোম রাজপথে নামাতে বাধ্য করবেন না: আখতার হোসেন বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আলোচনা শেষ

সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে দেশে দুর্ভিক্ষ হয় কি না, এটা এখন মানুষের মনে মনে: রুহুল কবির রিজভী

রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আজ শুক্রবার এক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। ছবি : সংগৃহীত

সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে দেশে দুর্ভিক্ষ হয় কি না, এটা এখন মানুষের মনে মনে। চলমান এই সংকট কাটিয়ে উঠতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

শুক্রবার (১১ জুলাই) সকালে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক অনুষ্ঠানে এই আশঙ্কার কথা জানান তিনি।

রিজভী বলেন, দেশের অর্থনীতির করুণ অবস্থা চলছে। এটা শুধু মুখের কথা নয়, সামনে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে দেশে দুর্ভিক্ষ হয় কি না, এটা এখন মানুষের মনে মনে। যদি আমরা দুর্ভিক্ষের আলামত দেখতে পাই, শুনতে পাই, তাহলে তো জনগণ আমাদের ছেড়ে দেবে না।

তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি একটি বৃহত্তর আদর্শের পক্ষে সংগ্রাম করে আসছে। আমরা মানবিকতা, সাম্য, ন্যায়বিচার ও আইনের শাসনের জন্য লড়াই করছি। এই আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজন চিরায়ত ও খাঁটি গণতন্ত্র। আমাদের এই লড়াই মূলত জনগণের ওপর জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার সংগ্রাম।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, জনগণের সরকার থাকলে প্রতিটি সিদ্ধান্তে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হয়, কিন্তু বর্তমানে সেই জবাবদিহিতার বালাই নেই। তিনি বলেন, আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেও জনসমর্থিত মনে করি, কারণ আওয়ামী লীগ ও তাদের কয়েকজন মিত্র ছাড়া দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দল এই সরকারের পক্ষে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আমরা সবাই সমর্থন জানাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, যদি আমরা চারদিকে দুর্ভিক্ষের পূর্বাভাস দেখতে ও শুনতে পাই, তাহলে জনগণ আমাদের দায়ী করবেই। কারণ আজ অসংখ্য গার্মেন্টস কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, হাজার হাজার মানুষ চাকরি হারাচ্ছে। মানুষ যদি খাবার কিনতেও না পারে, তাহলে দুর্ভিক্ষের বাস্তবতা এসে দাঁড়াবে। আর তখন কেউই রেহাই পাবে না—তবু কিছু পতিত ফ্যাসিস্ট হাততালি দিয়ে যাবে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, যেসব দোসর হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে, তাদের সঙ্গে নামমাত্র কিছু প্রতিষ্ঠান জড়িয়ে পড়লেও, সরকার চাইলে সহজেই এসব প্রতিষ্ঠানে প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে সেগুলো পরিচালনা করতে পারে। গার্মেন্টস শিল্প যেন বন্ধ না হয়, সে জন্য প্রয়োজন হলে সরকার নিজেই এগিয়ে আসতে পারে। যারা দোষী, তাদের বিচারের আওতায় আনুন; কিন্তু শ্রমিকদের জীবন-জীবিকা যেন ধ্বংস না হয়। কারণ, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা এখন ভয়াবহ।

তিনি আরও বলেন, আর্থিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা জরুরি—তবে কর্মসংস্থান বাড়ানো না গেলে জনগণের ক্ষোভ থেকে কেউই রেহাই পাবে না।

সংস্কার প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, বিএনপি কখনোই সংস্কারের বিরুদ্ধে কথা বলেনি; বরং আমরা সংস্কারের পক্ষে কথা বলেছি। আপনারা যেসব সংস্কারের কথা বলছেন, আমাদের ৩১ দফায় তার অনেক কিছুই অন্তর্ভুক্ত আছে। এমনকি জুলাই সনদের অনেক বিষয়ও আমরা গ্রহণ করেছি। তবে এটিকে মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করতেই হবে—এই ধারণা সঠিক নয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেশে-বিদেশে আরও সংস্কার আসবে, এটাই স্বাভাবিক।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, জিয়া পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি ড. শফিকুল ইসলাম এবং মহাসচিব ড. এমতাজ হোসেন প্রমুখ।

কেকে

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

জনপ্রিয় সংবাদ

গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে নিহত ৭৯৮ ফিলিস্তিনি: জাতিসংঘ

সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে দেশে দুর্ভিক্ষ হয় কি না, এটা এখন মানুষের মনে মনে: রুহুল কবির রিজভী

আপডেট সময় : ১০:০৪:২৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫

সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে দেশে দুর্ভিক্ষ হয় কি না, এটা এখন মানুষের মনে মনে। চলমান এই সংকট কাটিয়ে উঠতে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

শুক্রবার (১১ জুলাই) সকালে নয়াপল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক অনুষ্ঠানে এই আশঙ্কার কথা জানান তিনি।

রিজভী বলেন, দেশের অর্থনীতির করুণ অবস্থা চলছে। এটা শুধু মুখের কথা নয়, সামনে সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে দেশে দুর্ভিক্ষ হয় কি না, এটা এখন মানুষের মনে মনে। যদি আমরা দুর্ভিক্ষের আলামত দেখতে পাই, শুনতে পাই, তাহলে তো জনগণ আমাদের ছেড়ে দেবে না।

তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে বিএনপি একটি বৃহত্তর আদর্শের পক্ষে সংগ্রাম করে আসছে। আমরা মানবিকতা, সাম্য, ন্যায়বিচার ও আইনের শাসনের জন্য লড়াই করছি। এই আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজন চিরায়ত ও খাঁটি গণতন্ত্র। আমাদের এই লড়াই মূলত জনগণের ওপর জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে দেওয়ার সংগ্রাম।

রুহুল কবির রিজভী বলেন, জনগণের সরকার থাকলে প্রতিটি সিদ্ধান্তে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হয়, কিন্তু বর্তমানে সেই জবাবদিহিতার বালাই নেই। তিনি বলেন, আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেও জনসমর্থিত মনে করি, কারণ আওয়ামী লীগ ও তাদের কয়েকজন মিত্র ছাড়া দেশের প্রায় সব রাজনৈতিক দল এই সরকারের পক্ষে। ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আমরা সবাই সমর্থন জানাচ্ছি।

তিনি আরও বলেন, যদি আমরা চারদিকে দুর্ভিক্ষের পূর্বাভাস দেখতে ও শুনতে পাই, তাহলে জনগণ আমাদের দায়ী করবেই। কারণ আজ অসংখ্য গার্মেন্টস কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, হাজার হাজার মানুষ চাকরি হারাচ্ছে। মানুষ যদি খাবার কিনতেও না পারে, তাহলে দুর্ভিক্ষের বাস্তবতা এসে দাঁড়াবে। আর তখন কেউই রেহাই পাবে না—তবু কিছু পতিত ফ্যাসিস্ট হাততালি দিয়ে যাবে।

বিএনপির এই নেতা বলেন, যেসব দোসর হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে বিদেশে পাচার করেছে, তাদের সঙ্গে নামমাত্র কিছু প্রতিষ্ঠান জড়িয়ে পড়লেও, সরকার চাইলে সহজেই এসব প্রতিষ্ঠানে প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে সেগুলো পরিচালনা করতে পারে। গার্মেন্টস শিল্প যেন বন্ধ না হয়, সে জন্য প্রয়োজন হলে সরকার নিজেই এগিয়ে আসতে পারে। যারা দোষী, তাদের বিচারের আওতায় আনুন; কিন্তু শ্রমিকদের জীবন-জীবিকা যেন ধ্বংস না হয়। কারণ, দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা এখন ভয়াবহ।

তিনি আরও বলেন, আর্থিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা জরুরি—তবে কর্মসংস্থান বাড়ানো না গেলে জনগণের ক্ষোভ থেকে কেউই রেহাই পাবে না।

সংস্কার প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, বিএনপি কখনোই সংস্কারের বিরুদ্ধে কথা বলেনি; বরং আমরা সংস্কারের পক্ষে কথা বলেছি। আপনারা যেসব সংস্কারের কথা বলছেন, আমাদের ৩১ দফায় তার অনেক কিছুই অন্তর্ভুক্ত আছে। এমনকি জুলাই সনদের অনেক বিষয়ও আমরা গ্রহণ করেছি। তবে এটিকে মূলনীতি হিসেবে গ্রহণ করতেই হবে—এই ধারণা সঠিক নয়। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দেশে-বিদেশে আরও সংস্কার আসবে, এটাই স্বাভাবিক।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম আজাদ, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, জিয়া পরিষদের সিনিয়র সহসভাপতি ড. শফিকুল ইসলাম এবং মহাসচিব ড. এমতাজ হোসেন প্রমুখ।

কেকে