ঢাকা ১১:৩৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে নিহত ৭৯৮ ফিলিস্তিনি: জাতিসংঘ জীবনে মানুষের মতো মানুষ হওয়াটাই সবচেয়ে বড় সার্টিফিকেট: কেয়া পায়েল ইউটিউব লাইভ স্ট্রিমে অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য কঠোর আইন চালু সন্ত্রাসী সন্ত্রাসীই, সে যে দলেরই হোক না কেন : আশফাক নিপুন জামায়াতের সঙ্গে জোট নয়, এনসিপির সঙ্গে আলোচনার সম্ভাবনা উন্মুক্ত : সালাহউদ্দিন আহমেদ সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে দেশে দুর্ভিক্ষ হয় কি না, এটা এখন মানুষের মনে মনে: রুহুল কবির রিজভী ২০৩০ বিশ্বকাপের ফাইনাল হবে রিয়ালের মাঠে: মার্কা ওয়েব ব্রাউজার আনছে ওপেনএআই, চ্যালেঞ্জের মুখে গুগল ক্রোম রাজপথে নামাতে বাধ্য করবেন না: আখতার হোসেন বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র শুল্ক আলোচনা শেষ

ইউটিউব লাইভ স্ট্রিমে অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য কঠোর আইন চালু

ইউটিউব লাইভ স্ট্রিমিংয়ের ক্ষেত্রে কঠোর নীতিমালা চালু করতে যাচ্ছে ইউটিউব কর্তৃপক্ষ। আগামী ২২ জুলাই থেকে কার্যকর হতে যাওয়া নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ১৬ বছরের নিচে কেউ একা লাইভ স্ট্রিমে যেতে পারবে না। এর জন্য তাদের মানতে হবে নতুন আইন।

এর আগে ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুরা একা লাইভে আসতে পারলেও এখন তাদের জন্য লাইভে প্রাপ্তবয়স্ক অভিভাবকের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

ইউটিউব জানিয়েছে, নতুন নিয়মের উদ্দেশ্য হলো অনলাইন নিরাপত্তা, সাইবারবুলিং প্রতিরোধ ও শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা। এর ফলে ডিজিটাল জগতে তাদের নতুন সম্পর্ক তৈরি হতে পারে।

এমনিতেই সব বয়সী মানুষ জনপ্রিয় ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউব ব্যবহার করে। আর শিশুদের জন্য রয়েছে ইউটিউব কিডস। এতে বিজ্ঞাপন ছাড়াও ভিডিও দেখার জন্য ইউটিউব সাবস্ক্রিপশন করার সুযোগ রয়েছে। খুব অল্প টাকায় এ সাবস্ক্রিপশন কেনা যায় মাসিক কিংবা বার্ষিক।

তবে ব্যবহারকারীর নিরাপত্তার দিকে সব সময় নজর রাখছে ইউটিউব কর্তৃপক্ষ। বিশেষ করে শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের প্রতি তাদের যত্ন বেশি থাকে। তাই তো শিশুদের জন্য নতুন আরও একটি নিয়ম এনেছে এই প্ল্যাটফর্ম। লাইভ স্ট্রিমিং নীতিতেও বড় বদল এনেছে সংস্থাটি।

কী আছে নতুন বিধিমালায় কোনো ক্রিয়েটর তখনই একাকী লাইভ স্ট্রিম করতে পারবেন, যখন তার বয়স ১৬ বছরের বেশি হবে। তবে নাবালক হলে ইউটিউবে একা লাইভ স্ট্রিম করা যাবে না। অর্থাৎ নতুন নিয়ম অনুসারে ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সী ক্রিয়েটরদের লাইভ স্ট্রিম করতে হলে সঙ্গে তাদের মা-বাবাকে রাখা জরুরি। এর আগে এ বয়সসীমা ছিল ১৩ বছর।

যদি কোনো ইউটিউবারের বয়স ১৬ বছরের কম হয়, তাহলে তাকে কোনো প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে সেই লাইভ স্ট্রিম করতে হবে। সে এডিটর হতে পারবে, লাইভ স্ট্রিম ম্যানেজ করতে পারবে কিংবা নিজের প্রাপ্তবয়স্ক পৃথক চ্যানেল গড়তে পারবে। ফলে প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি সেই ইউটিউবারের চ্যানেল থেকে লাইভ স্ট্রিম শুরু করতে এবং একই দর্শকদের কাছে কনটেন্ট পৌঁছেও দিতে পারবেন।

এ পরিবর্তনের প্রত্যক্ষ প্রভাব হতে পারে যে এখন থেকে আরও বেশিসংখ্যক পরিবার ইউটিউবে লাইভ স্ট্রিম করবে একসঙ্গে। এখন ১৬ বছরের কম বয়সী শিশুর একা একা লাইভে যাওয়ার অনুমতি নেই। তাই বাবা-মা কিংবা অভিভাবকের কেবল প্রযুক্তিগত নিয়ন্ত্রণই নয়; বরং লাইভ স্ট্রিমের সময় শিশুর ওপরে নজরদারিও রাখতে হবে। এতে শিশু এবং বাবা-মায়ের মধ্যে একটি নতুন ডিজিটাল সম্পর্ক তৈরি হতে পারে।

যদি পরিবারের সদস্যরা একসঙ্গে লাইভ স্ট্রিম করেন, তাহলে এটি শুধু শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে তাই নয়, বরং একসঙ্গে সময় কাটানোর একটি নতুন ডিজিটাল উপায়ও হয়ে উঠতে পারে। যারা ইউটিউবকে ক্রিয়েটিভ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে দেখেন বা ব্যবহার করেন, তাদের ক্ষেত্রে এ নীতি কার্যকরী হবে।

যদিও পারিবারিক লাইভ স্ট্রিমে নানা রকম প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। লাইভ হওয়ার অর্থ হলো— সবকিছু তাৎক্ষণিকভাবে সবার সামনে চলে আসা। এমন পরিস্থিতিতে গোপনীয়তার প্রশ্ন উঠতে পারে। কোনো বিষয় প্রকাশ্যে আনা যেতে পারে, আবার কোনো বিষয় গোপন রাখাও উচিত তা সম্পর্কে বাবা-মা এবং শিশুর স্পষ্ট ধারণা থাকা উচিত।

লাইভ স্ট্রিম যাতে আকর্ষণীয় হয় এবং ইউটিউবের নিয়ম যাতে কোনোভাবেই লঙ্ঘন না হয়, সেদিকে নজর দেওয়া উচিত।

নিয়ম ভাঙলে কী হবে লাইভ চ্যাট ও সুপার চ্যাট ফিচার সাময়িকভাবে স্থগিত, বারবার নিয়ম লঙ্ঘন করলে চ্যানেল স্থায়ীভাবে বন্ধ হতে পারে, একাধিক চ্যানেল খুলে ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করলে নীতিমালা লঙ্ঘনের আওতায় পড়বে।

ইউটিউব কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কোনো স্ট্রিম সরিয়ে দেওয়া হলে ই-মেইলের মাধ্যমে ব্যবহারকারীকে তা জানিয়ে দেওয়া হবে।

প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বজুড়ে শিশু সুরক্ষা আইন কঠোর হওয়ায় ইউটিউবসহ অন্যান্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম আগেভাগেই নিজেদের নীতিমালা আপডেট করছে। অনলাইনে শিশুদের মানসিক নিরাপত্তা এবং ডিজিটাল সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই এমন উদ্যোগ।

কেকে

ট্যাগস :

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

জনপ্রিয় সংবাদ

গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে নিহত ৭৯৮ ফিলিস্তিনি: জাতিসংঘ

ইউটিউব লাইভ স্ট্রিমে অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য কঠোর আইন চালু

আপডেট সময় : ১০:২৯:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ জুলাই ২০২৫

ইউটিউব লাইভ স্ট্রিমিংয়ের ক্ষেত্রে কঠোর নীতিমালা চালু করতে যাচ্ছে ইউটিউব কর্তৃপক্ষ। আগামী ২২ জুলাই থেকে কার্যকর হতে যাওয়া নতুন নিয়ম অনুযায়ী, ১৬ বছরের নিচে কেউ একা লাইভ স্ট্রিমে যেতে পারবে না। এর জন্য তাদের মানতে হবে নতুন আইন।

এর আগে ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সী শিশুরা একা লাইভে আসতে পারলেও এখন তাদের জন্য লাইভে প্রাপ্তবয়স্ক অভিভাবকের উপস্থিতি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

ইউটিউব জানিয়েছে, নতুন নিয়মের উদ্দেশ্য হলো অনলাইন নিরাপত্তা, সাইবারবুলিং প্রতিরোধ ও শিশুদের সুরক্ষা নিশ্চিত করা। এর ফলে ডিজিটাল জগতে তাদের নতুন সম্পর্ক তৈরি হতে পারে।

এমনিতেই সব বয়সী মানুষ জনপ্রিয় ভিডিও স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম ইউটিউব ব্যবহার করে। আর শিশুদের জন্য রয়েছে ইউটিউব কিডস। এতে বিজ্ঞাপন ছাড়াও ভিডিও দেখার জন্য ইউটিউব সাবস্ক্রিপশন করার সুযোগ রয়েছে। খুব অল্প টাকায় এ সাবস্ক্রিপশন কেনা যায় মাসিক কিংবা বার্ষিক।

তবে ব্যবহারকারীর নিরাপত্তার দিকে সব সময় নজর রাখছে ইউটিউব কর্তৃপক্ষ। বিশেষ করে শিশু ও অপ্রাপ্তবয়স্কদের প্রতি তাদের যত্ন বেশি থাকে। তাই তো শিশুদের জন্য নতুন আরও একটি নিয়ম এনেছে এই প্ল্যাটফর্ম। লাইভ স্ট্রিমিং নীতিতেও বড় বদল এনেছে সংস্থাটি।

কী আছে নতুন বিধিমালায় কোনো ক্রিয়েটর তখনই একাকী লাইভ স্ট্রিম করতে পারবেন, যখন তার বয়স ১৬ বছরের বেশি হবে। তবে নাবালক হলে ইউটিউবে একা লাইভ স্ট্রিম করা যাবে না। অর্থাৎ নতুন নিয়ম অনুসারে ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়সী ক্রিয়েটরদের লাইভ স্ট্রিম করতে হলে সঙ্গে তাদের মা-বাবাকে রাখা জরুরি। এর আগে এ বয়সসীমা ছিল ১৩ বছর।

যদি কোনো ইউটিউবারের বয়স ১৬ বছরের কম হয়, তাহলে তাকে কোনো প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিকে সঙ্গে নিয়ে সেই লাইভ স্ট্রিম করতে হবে। সে এডিটর হতে পারবে, লাইভ স্ট্রিম ম্যানেজ করতে পারবে কিংবা নিজের প্রাপ্তবয়স্ক পৃথক চ্যানেল গড়তে পারবে। ফলে প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি সেই ইউটিউবারের চ্যানেল থেকে লাইভ স্ট্রিম শুরু করতে এবং একই দর্শকদের কাছে কনটেন্ট পৌঁছেও দিতে পারবেন।

এ পরিবর্তনের প্রত্যক্ষ প্রভাব হতে পারে যে এখন থেকে আরও বেশিসংখ্যক পরিবার ইউটিউবে লাইভ স্ট্রিম করবে একসঙ্গে। এখন ১৬ বছরের কম বয়সী শিশুর একা একা লাইভে যাওয়ার অনুমতি নেই। তাই বাবা-মা কিংবা অভিভাবকের কেবল প্রযুক্তিগত নিয়ন্ত্রণই নয়; বরং লাইভ স্ট্রিমের সময় শিশুর ওপরে নজরদারিও রাখতে হবে। এতে শিশু এবং বাবা-মায়ের মধ্যে একটি নতুন ডিজিটাল সম্পর্ক তৈরি হতে পারে।

যদি পরিবারের সদস্যরা একসঙ্গে লাইভ স্ট্রিম করেন, তাহলে এটি শুধু শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে তাই নয়, বরং একসঙ্গে সময় কাটানোর একটি নতুন ডিজিটাল উপায়ও হয়ে উঠতে পারে। যারা ইউটিউবকে ক্রিয়েটিভ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে দেখেন বা ব্যবহার করেন, তাদের ক্ষেত্রে এ নীতি কার্যকরী হবে।

যদিও পারিবারিক লাইভ স্ট্রিমে নানা রকম প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। লাইভ হওয়ার অর্থ হলো— সবকিছু তাৎক্ষণিকভাবে সবার সামনে চলে আসা। এমন পরিস্থিতিতে গোপনীয়তার প্রশ্ন উঠতে পারে। কোনো বিষয় প্রকাশ্যে আনা যেতে পারে, আবার কোনো বিষয় গোপন রাখাও উচিত তা সম্পর্কে বাবা-মা এবং শিশুর স্পষ্ট ধারণা থাকা উচিত।

লাইভ স্ট্রিম যাতে আকর্ষণীয় হয় এবং ইউটিউবের নিয়ম যাতে কোনোভাবেই লঙ্ঘন না হয়, সেদিকে নজর দেওয়া উচিত।

নিয়ম ভাঙলে কী হবে লাইভ চ্যাট ও সুপার চ্যাট ফিচার সাময়িকভাবে স্থগিত, বারবার নিয়ম লঙ্ঘন করলে চ্যানেল স্থায়ীভাবে বন্ধ হতে পারে, একাধিক চ্যানেল খুলে ফাঁকি দেওয়ার চেষ্টা করলে নীতিমালা লঙ্ঘনের আওতায় পড়বে।

ইউটিউব কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কোনো স্ট্রিম সরিয়ে দেওয়া হলে ই-মেইলের মাধ্যমে ব্যবহারকারীকে তা জানিয়ে দেওয়া হবে।

প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের মতে, বিশ্বজুড়ে শিশু সুরক্ষা আইন কঠোর হওয়ায় ইউটিউবসহ অন্যান্য ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম আগেভাগেই নিজেদের নীতিমালা আপডেট করছে। অনলাইনে শিশুদের মানসিক নিরাপত্তা এবং ডিজিটাল সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই এমন উদ্যোগ।

কেকে