আলিম আকন্দ,জেলা প্রতিনিধি,জামালপুর প্রতিনিধিঃ
সরকারি চাকরিতে বৈষম্যের বিরুদ্ধে ছাত্র-জনতার জোয়ারে যখন স্বৈরাচারী খুনি হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়, তখনও জামালপুর জেলার বকশীগঞ্জ উপজেলার ধানুয়া কামালপুর ইউনিয়নে বহাল তবিয়তে রয়ে গেছেন আওয়ামী দোসর, উত্তর ধানুয়া ১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি সোহানুর রহমান ওরফে সোহান।
সোহান, সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা ও কুখ্যাত মাদক চোরাকারবারি আব্দুল মালেক ওরফে জোগারের ছোট ছেলে। জন্ম থেকেই সীমান্ত অঞ্চলে চোরাচালান, মাদক পাচার, স্বর্ণ ব্যবসা, হুন্ডি এবং নারী পাচারের মতো জঘন্য অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে সে। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় থেকে দীর্ঘদিন ধরে সীমান্তকে পরিণত করেছে অপরাধের নিরাপদ আস্তানায়। এতদিনেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ না নেওয়া জনমনে তীব্র প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে সে কোন শক্তির বলে এতটা অপ্রতিরোধ্য..???
দেশজুড়ে গণঅভ্যুত্থানের ঝড় বয়ে যাওয়ার পরও সোহানের মতো অপরাধীরা যেভাবে দাপটের সঙ্গে ঘুরে বেড়াচ্ছে, তা জনগণের বিজয়কে প্রশ্নবিদ্ধ করে তুলেছে। প্রশাসন যখন একের পর এক স্বৈরাচার সরকারের দোসর ও মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করছে, তখন এই চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী, চোরাকারবারি ও সুদখোর রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে পার পেয়ে যাচ্ছে এ এক গভীর ষড়যন্ত্রেরই ইঙ্গিত।
সম্প্রতি সোহানের আপন বৈমাত্রেয় ভাই জাহিদুল ইসলাম জাহিদ ফেসবুকে একটি পোস্টের মাধ্যমে এই সত্য জনসম্মুখে তুলে ধরেন। তিনি লিখেছেন, সোহান একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও সুদখোর। এলাকার বহু মানুষ তার কাছ থেকে চৌড়া সুদে টাকা নিয়ে আজ সর্বস্বান্ত। সুদের টাকা পরিশোধ করতে না পারলে তাদের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের প্রভাব খাটিয়ে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করা হতো। কখনো মাদক মামলার ভয় দেখিয়ে মানুষকে স্তব্ধ করে রাখত।
জাহিদের এই প্রকাশনায় সাধারণ মানুষের মাঝে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফিরলেও প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে এই অপরাধীর বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ কবে আসবে? কেন প্রশাসন এখনও নীরব? কিসের আশ্রয়ে একজন মাদক সম্রাট, চোরাকারবারি, সুদখোর এবং রাজনৈতিক দালাল প্রকাশ্যে বিচরণ করতে পারে?
জনগণের দাবি একটাই বিচারের আওতায় আনুন এই অপরাধীকে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী দোসরদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করুন। অন্যথায় দীর্ঘদিনের সংগ্রাম ও রক্তের বিনিময়ে অর্জিত গণতান্ত্রিক সাফল্য ভুলুণ্ঠিত হবে কিছু রাজনৈতিক সুবিধাভোগীর ষড়যন্ত্রে।
এই মুহূর্তে রাষ্ট্র ও প্রশাসনের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ গণআন্দোলনের চেতনাকে রক্ষা করা এবং জনগণের আস্থা ফিরিয়ে আনা। আর তা শুরু হতে হবে এই দোসরদের বিচারের মাধ্যমে। সময় এসেছে শক্ত হাতে বলার আর না, অপরাধী যতই প্রভাবশালী হোক, আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়।
এমএস