ঢাকা ০২:০২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

সড়ক দূর্ঘটনা নয়, প্রেমের কারণে হত্যা করা হয়েছে স্যাকমো রাকিবকে

ছবি : সংগৃহীত

খালিদ হাসান, বাগেরহাট প্রতিনিধি:

“আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে! তার প্রেমিকা আখি খাতুনের আত্মীয় স্বজনই এই হত্যার সাথে জড়িত। যদি সে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়, তবে তদন্ত করে আমাকে তা দেখানো হোক!”কান্নাজড়িত কণ্ঠে এমনই আহ্বান জানান ১৫ মাস আগে মারা যাওয়া রাকিবুল ইসলামের বাবা মো. শাহীন হাওলাদার।

শনিবার (১ মার্চ) দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে শাহীন হাওলাদার দাবি করেন, ছয় বছর ধরে প্রেমের সম্পর্কে থাকা তাঁর একমাত্র ছেলে রাকিবকে ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, “এটি কোনো দুর্ঘটনা নয়, বরং পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আমি আমার ছেলের হত্যার ন্যায়বিচার চাই!”

নিহত রাকিবুল ইসলাম কচুয়া উপজেলার রঘুদত্তকাঠি গ্রামের শাহীন হাওলাদারের ছেলে। সে খুলনার রূপসা মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল (রূপসা ম্যাটস) থেকে পড়াশোনা শেষ করে স্থানীয় মাহমুদা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে উপসহকারি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো) হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। কর্মস্থলের কাছেই একটি মেসে থাকতেন তিনি।

শাহীন হাওলাদারের ভাষ্যমতে, দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্কে থাকার পর পরিবারের অজান্তেই রাকিব গ্রামের মেয়ে আখি খাতুনকে বিয়ে করেন। কিন্তু বিষয়টি জানাজানি হলে আখির পরিবার ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। আখির ভাই-বাবা ও আত্মীয় স্বজনরা রাকিব এবং তার বাবাকে হুমকি দেয়। পরে ২০২৩ সালের ৬ নভেম্বর সকালে খুলনা-মোংলা মহাসড়কের কাটাখালি আলফা কোম্পানির সামনে থেকে আমার ছেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তৎকালীণ কাটাখালি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান, মুঠোফোনে জানায়, আমার ছেলে দূর্ঘটনায় মারা গেছে।ময়নাতদন্ত ছাড়াই ওইদিন রাত সাড়ে ১২টায় আমার ছেলের দাফন সম্পন্ন হয়। আমাকে জানানো হয়, আমার স্ত্রীর ভাই ওমর ফারুক ময়নাতদন্ত ছাড়াই, মরদেহ গ্রহন করেছে। কিন্তু আমার স্ত্রীর কোন ভাই নেই। এতেই সন্দেহ হয়, যে আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। আমি অনেকবার কাটাখালি হাইওয়ে থানায় গেলে আমাকে কোন সহযোগিতা করেনি। তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন নেতা আমাকে বিষয়টি নিয়ে মামলা-মকদ্দমা করতে নিষেধ করেন।

এক পর্যায়ে সরকার পরিবর্তনের পরে আমি আখি খাতুন, তার ভাই আলমাস জমাদ্দার, স্থানীয় রিপন শেখ, ওমর ফারুক জমাদ্দারসহ ৭ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করি।মামলাটি আমলে নিয়ে আদালত পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআিইডি)কে তদন্তের নির্দেষ দেন।

তিনি আরও বলেন, আমার ছেলে মারা যায় নি। আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। তদন্তপূর্বক আমার ছেলের হত্যাকারীদের বিচার চাই বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন সন্তান হারা বাবা।

সংবাদ সম্মেলনের সময় রাকিবের মা নাজমিন বেগম, ছোট ভাই রিফাত হাওলাদার, ভাগ্নে ফয়সাল মুন্সি, স্থানীয় মনির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

এমএস

ট্যাগস :

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

জনপ্রিয় সংবাদ

অনলাইন স্ক্যাম ও জালিয়াতি প্রতিরোধে নতুন ফিচার আনল হোয়াটসঅ্যাপ

সড়ক দূর্ঘটনা নয়, প্রেমের কারণে হত্যা করা হয়েছে স্যাকমো রাকিবকে

আপডেট সময় : ০৬:১৬:৪১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১ মার্চ ২০২৫

খালিদ হাসান, বাগেরহাট প্রতিনিধি:

“আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে! তার প্রেমিকা আখি খাতুনের আত্মীয় স্বজনই এই হত্যার সাথে জড়িত। যদি সে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়, তবে তদন্ত করে আমাকে তা দেখানো হোক!”কান্নাজড়িত কণ্ঠে এমনই আহ্বান জানান ১৫ মাস আগে মারা যাওয়া রাকিবুল ইসলামের বাবা মো. শাহীন হাওলাদার।

শনিবার (১ মার্চ) দুপুরে বাগেরহাট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে শাহীন হাওলাদার দাবি করেন, ছয় বছর ধরে প্রেমের সম্পর্কে থাকা তাঁর একমাত্র ছেলে রাকিবকে ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, “এটি কোনো দুর্ঘটনা নয়, বরং পূর্বপরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। আমি আমার ছেলের হত্যার ন্যায়বিচার চাই!”

নিহত রাকিবুল ইসলাম কচুয়া উপজেলার রঘুদত্তকাঠি গ্রামের শাহীন হাওলাদারের ছেলে। সে খুলনার রূপসা মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুল (রূপসা ম্যাটস) থেকে পড়াশোনা শেষ করে স্থানীয় মাহমুদা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে উপসহকারি মেডিকেল অফিসার (স্যাকমো) হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। কর্মস্থলের কাছেই একটি মেসে থাকতেন তিনি।

শাহীন হাওলাদারের ভাষ্যমতে, দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্কে থাকার পর পরিবারের অজান্তেই রাকিব গ্রামের মেয়ে আখি খাতুনকে বিয়ে করেন। কিন্তু বিষয়টি জানাজানি হলে আখির পরিবার ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। আখির ভাই-বাবা ও আত্মীয় স্বজনরা রাকিব এবং তার বাবাকে হুমকি দেয়। পরে ২০২৩ সালের ৬ নভেম্বর সকালে খুলনা-মোংলা মহাসড়কের কাটাখালি আলফা কোম্পানির সামনে থেকে আমার ছেলের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তৎকালীণ কাটাখালি হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোঃ মিজানুর রহমান, মুঠোফোনে জানায়, আমার ছেলে দূর্ঘটনায় মারা গেছে।ময়নাতদন্ত ছাড়াই ওইদিন রাত সাড়ে ১২টায় আমার ছেলের দাফন সম্পন্ন হয়। আমাকে জানানো হয়, আমার স্ত্রীর ভাই ওমর ফারুক ময়নাতদন্ত ছাড়াই, মরদেহ গ্রহন করেছে। কিন্তু আমার স্ত্রীর কোন ভাই নেই। এতেই সন্দেহ হয়, যে আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। আমি অনেকবার কাটাখালি হাইওয়ে থানায় গেলে আমাকে কোন সহযোগিতা করেনি। তৎকালীন ক্ষমতাসীন দলের বিভিন্ন নেতা আমাকে বিষয়টি নিয়ে মামলা-মকদ্দমা করতে নিষেধ করেন।

এক পর্যায়ে সরকার পরিবর্তনের পরে আমি আখি খাতুন, তার ভাই আলমাস জমাদ্দার, স্থানীয় রিপন শেখ, ওমর ফারুক জমাদ্দারসহ ৭ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা দায়ের করি।মামলাটি আমলে নিয়ে আদালত পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআিইডি)কে তদন্তের নির্দেষ দেন।

তিনি আরও বলেন, আমার ছেলে মারা যায় নি। আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। তদন্তপূর্বক আমার ছেলের হত্যাকারীদের বিচার চাই বলে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন সন্তান হারা বাবা।

সংবাদ সম্মেলনের সময় রাকিবের মা নাজমিন বেগম, ছোট ভাই রিফাত হাওলাদার, ভাগ্নে ফয়সাল মুন্সি, স্থানীয় মনির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।

এমএস