শরীয়তপুরে দৈনিক সমকালসহ চার গণমাধ্যমের সাংবাদিকদের ওপর হাতুড়ি ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলার ঘটনায় প্রধান আসামি নুরুজ্জামান শেখকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছে আদালত। সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে শরীয়তপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তন্ময় গাইন এ আদেশ দেন।
হামলার বিস্তারিত ভুক্তভোগী, পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের একটি সংবাদের জেরে গত ৩ ফেব্রুয়ারি দুপুরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে হামলার শিকার হন দৈনিক সমকাল পত্রিকার সাংবাদিক সোহাগ খান সুজন। হামলাকারীরা তাকে হাতুড়ি ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে গুরুতর আহত করে।
সোহাগ খান সুজনকে রক্ষা করতে গেলে নিউজ টুয়েন্টিফোর-এর প্রতিনিধি বিধান মজুমদার অনি, দেশ টিভি-এর প্রতিনিধি সাইফুল ইসলাম আকাশ এবং বাংলা টিভি-এর প্রতিনিধি নয়ন দাসকেও হামলার শিকার হতে হয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় সোহাগ খান সুজনকে শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মামলা ও আদালতের আদেশ হামলার দিন রাতেই সাংবাদিক সোহাগ খান সুজন বাদী হয়ে স্থানীয় ক্লিনিক ব্যবসায়ী ও সাংবাদিক পরিচয়দানকারী নুরুজ্জামান শেখ (৪৫), শামিম শেখ (৪০), ইব্রাহিম মোল্লা (৪০)-সহ সাতজনের নাম উল্লেখ করে এবং আরও ৮-১০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে পালং মডেল থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেন।
সোমবার দুপুরে মামলার আসামিরা আদালতে হাজির হয়ে জামিন আবেদন করলে প্রধান আসামি নুরুজ্জামান শেখের জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন আদালত। তবে চার্জশিট জমা না হওয়া পর্যন্ত বাকি পাঁচ আসামিকে ৫০০ টাকার মুচলেকায় জামিন দেওয়া হয়।
ভুক্তভোগীর মন্তব্য হামলার বিষয়ে সাংবাদিক সোহাগ খান সুজন বলেন, “হাতুড়ির আঘাতে আমার দুই কান মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যার ফলে শ্রবণে সমস্যা হচ্ছে। যারা আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এই হামলা চালিয়েছে, আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।”তাছাড়া ভুক্তভোগীদের দেখে নিবেন বলে হুমকি দেন আসামিরা।
পুলিশের বক্তব্য এ বিষয়ে কোর্ট পুলিশ পরিদর্শক শিমুল সরকার বলেন, “সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় ছয়জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। আসামিরা আদালতে হাজির হয়ে জামিন চাইলে প্রধান আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। বাকি পাঁচজনকে চার্জশিট জমা না হওয়া পর্যন্ত জামিন দেওয়া হয়েছে।”
সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় সাংবাদিক মহলে ক্ষোভ ও উদ্বেগ বিরাজ করছে। তারা দ্রুত বিচার ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছেন।
এমএস