ঢাকা ০৩:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ২৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
আমরা বাংলাদেশের জনগণের মহত্ত্ব ভুলব না : ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত চীন পণ্যে ১০৪ শতাংশ শুল্কারোপের হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের ‘দাগি’র বিশেষ প্রদর্শনীতে ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদ নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আফ্রিকান ইউনিয়নের সম্মেলন থেকে বহিষ্কার ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত নেতানিয়াহুর বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এড়াতে নতুন কৌশল নেতানিয়াহুর গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে জয়পুরহাটে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ ফিলিস্তিনে গ’ণ’হ’ত্যার প্রতিবাদে শাজাহানপুর উপজেলা জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল বৈশাখে পান্তা-ইলিশ খাওয়া সংস্কৃতির অংশ নয়: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

গাজা খালি করার প্রস্তাবের বিরোধিতা, যুক্তরাষ্ট্রকে আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের চিঠি

ছবি : সংগৃহীত

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা খালি করার পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছেন পাঁচ আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ফিলিস্তিনের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। তারা এ বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওকে একটি যৌথ চিঠি পাঠিয়েছেন।

চিঠিটি সোমবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) পাঠানো হয়। এতে সই করেছেন জর্ডান, মিসর, সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। খবর রয়টার্স।

এ ছাড়া ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা হুসেইন আল-শেখও চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন। প্রথমে মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস চিঠিটির খবর প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, এই কূটনীতিকেরা গত সপ্তাহান্তে মিসরের কায়রোতে এক বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন।

প্রসঙ্গত, গত ২৫ জানুয়ারি ট্রাম্প প্রথমবারের মতো গাজা উপত্যকা খালি করার প্রস্তাব দেন। তিনি গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে জর্ডান ও মিসরে স্থানান্তরের পক্ষে মত দেন। এক প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প জানান, এটি স্বল্পমেয়াদি নাকি দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হবে—তা তিনি নিশ্চিত নন।

এদিকে ফিলিস্তিনিরা বহু বছর ধরে আশঙ্কা করে আসছেন যে, তাদের বাড়িঘর থেকে চিরতরে বিতাড়িত করা হতে পারে। ট্রাম্পের এই প্রস্তাবে সেই আশঙ্কার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। সমালোচকেরা এই পরিকল্পনাকে জাতিগত নির্মূলের প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন। জর্ডান, মিসরসহ বেশ কয়েকটি আরব দেশ ট্রাম্পের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওকে পাঠানো যৌথ চিঠিতে আরব কূটনীতিকেরা স্পষ্টভাবে বলেছেন, গাজা উপত্যকা পুনর্গঠনের দায়িত্ব গাজাবাসীর হাতেই থাকতে হবে। ফিলিস্তিনিদের তাদের ভূমিতেই বসবাসের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, গাজা পুনর্গঠনের সময় ফিলিস্তিনিদের প্রতিনিধিত্ব কেড়ে নেওয়া উচিত নয়। এই প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন থাকা জরুরি হলেও, নেতৃত্ব ফিলিস্তিনিদের হাতেই থাকতে হবে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজাভিত্তিক স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ইসরায়েলে হামলা চালায়। এর পরপরই গাজায় ভয়াবহ সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল, যা টানা ১৫ মাস ধরে চলে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় ৪৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং লাখো মানুষ আহত হয়েছেন। ইসরায়েলি হামলায় গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই হামলাকে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ বলে অভিহিত করলেও ইসরায়েল সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় প্রথম ধাপে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। বর্তমানে এই ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতির মধ্যেই যুদ্ধ বন্ধ রয়েছে।

ট্রাম্পের প্রস্তাব ইতিমধ্যে আরব দেশগুলোর ব্যাপক বিরোধিতার মুখে পড়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ছে। আরব নেতারা গাজায় স্থায়ী সমাধান এবং ফিলিস্তিনিদের ভূমিতে ফেরার অধিকার নিশ্চিত করতে চাইছেন। এখন দেখার বিষয়, যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্ব এই বিরোধিতার প্রতি কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়।

কেকে

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

জনপ্রিয় সংবাদ

আমরা বাংলাদেশের জনগণের মহত্ত্ব ভুলব না : ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত

গাজা খালি করার প্রস্তাবের বিরোধিতা, যুক্তরাষ্ট্রকে আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের চিঠি

আপডেট সময় : ১১:৪৫:১৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের গাজা খালি করার পরিকল্পনার বিরোধিতা করেছেন পাঁচ আরব পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ফিলিস্তিনের এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা। তারা এ বিষয়ে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওকে একটি যৌথ চিঠি পাঠিয়েছেন।

চিঠিটি সোমবার (০৩ ফেব্রুয়ারি) পাঠানো হয়। এতে সই করেছেন জর্ডান, মিসর, সৌদি আরব, কাতার ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। খবর রয়টার্স।

এ ছাড়া ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা হুসেইন আল-শেখও চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন। প্রথমে মার্কিন সংবাদমাধ্যম অ্যাক্সিওস চিঠিটির খবর প্রকাশ করে। প্রতিবেদনে বলা হয়, এই কূটনীতিকেরা গত সপ্তাহান্তে মিসরের কায়রোতে এক বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন।

প্রসঙ্গত, গত ২৫ জানুয়ারি ট্রাম্প প্রথমবারের মতো গাজা উপত্যকা খালি করার প্রস্তাব দেন। তিনি গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরিয়ে জর্ডান ও মিসরে স্থানান্তরের পক্ষে মত দেন। এক প্রশ্নের উত্তরে ট্রাম্প জানান, এটি স্বল্পমেয়াদি নাকি দীর্ঘমেয়াদি সমাধান হবে—তা তিনি নিশ্চিত নন।

এদিকে ফিলিস্তিনিরা বহু বছর ধরে আশঙ্কা করে আসছেন যে, তাদের বাড়িঘর থেকে চিরতরে বিতাড়িত করা হতে পারে। ট্রাম্পের এই প্রস্তাবে সেই আশঙ্কার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে। সমালোচকেরা এই পরিকল্পনাকে জাতিগত নির্মূলের প্রচেষ্টা হিসেবে দেখছেন। জর্ডান, মিসরসহ বেশ কয়েকটি আরব দেশ ট্রাম্পের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে।

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিওকে পাঠানো যৌথ চিঠিতে আরব কূটনীতিকেরা স্পষ্টভাবে বলেছেন, গাজা উপত্যকা পুনর্গঠনের দায়িত্ব গাজাবাসীর হাতেই থাকতে হবে। ফিলিস্তিনিদের তাদের ভূমিতেই বসবাসের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে।

চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, গাজা পুনর্গঠনের সময় ফিলিস্তিনিদের প্রতিনিধিত্ব কেড়ে নেওয়া উচিত নয়। এই প্রক্রিয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন থাকা জরুরি হলেও, নেতৃত্ব ফিলিস্তিনিদের হাতেই থাকতে হবে।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর গাজাভিত্তিক স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ইসরায়েলে হামলা চালায়। এর পরপরই গাজায় ভয়াবহ সামরিক অভিযান শুরু করে ইসরায়েল, যা টানা ১৫ মাস ধরে চলে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ইসরায়েলি হামলায় ৪৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন এবং লাখো মানুষ আহত হয়েছেন। ইসরায়েলি হামলায় গাজা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। মানবাধিকার সংস্থাগুলো এই হামলাকে গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধ বলে অভিহিত করলেও ইসরায়েল সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে।

গত ১৯ জানুয়ারি গাজায় প্রথম ধাপে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়। বর্তমানে এই ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতির মধ্যেই যুদ্ধ বন্ধ রয়েছে।

ট্রাম্পের প্রস্তাব ইতিমধ্যে আরব দেশগুলোর ব্যাপক বিরোধিতার মুখে পড়েছে। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়ছে। আরব নেতারা গাজায় স্থায়ী সমাধান এবং ফিলিস্তিনিদের ভূমিতে ফেরার অধিকার নিশ্চিত করতে চাইছেন। এখন দেখার বিষয়, যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা বিশ্ব এই বিরোধিতার প্রতি কীভাবে প্রতিক্রিয়া জানায়।

কেকে