ঢাকা ০১:৫৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

রাগী বাচ্চাদের নিয়ন্ত্রণ করার উপায় কী?

ছবিঃ সংগৃহীত

শিশুরা সহজেই রেগে যেতে পারে। এদের আবেগ ও সংবেদনশীলতা বেশি থাকে। তবে সব শিশুরা এক রকম নয়। কোনো কোনো আবার শিশু সহজেই রেগে যায়। মাঝে মাঝে দেখা যায় সন্তানের অতিরিক্ত রাগ সামলাতে হিমশিম খেতে হয় মা-বাবাকে। কড়া শাসন বা বকাবকি করলে আবার দূরত্ব বাড়ছে মা-বাবার সঙ্গে।

এই বিষয়ে ভারতীয় মনোবিদ অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়ের মত, এখনকার বাবা-মায়েরা সন্তানকে বেশি সময় দিতে পারেন না। তাই তাকে শান্ত রাখতে সব বায়নাই পূরণ করেন। এতে বাচ্চারা বোঝে, সে যা চাইবে তা-ই পাবে। আর যখনই তার ব্যতিক্রম হয়, তখনই রাগ, জেদের বহিঃপ্রকাশ দেখা যায়।

এমন অনেক শিশুকেই মা-বাবা নিয়ে আসেন, যারা রেগে গেলে হাত-পা চালাতে শুরু করে। ঘরের জিনিসপত্র ভাঙচুর করে। এমনকি একা ঘরে নিজেকে বন্দিও করে ফেলে। সেই রাগ কমতেও বহু দিন লেগে যায়। এমন আচরণকে বলা হয় ‘আউটওয়ার্ডলি অ্যাগ্রেসিভ বিহেভিয়ার’। সে ক্ষেত্রে বাবা-মা যদি ঠান্ডা মাথায় পরিস্থিতি না সামলান, তা হলে শিশুর আচরণ মারাত্মক পর্যায়েও যেতে পারে।

বাচ্চাদের রাগ সামলাবেন কী উপায়ে?

মনোবিদের পরামর্শ, সন্তান রেগে গেলে অভিভাবকদের মাথা ঠান্ডা রেগে বোঝাতে হবে। সে যতই কান্নাকাটি করুন, মাটিতে বসে বা শুয়ে পড়ুক, তার পরেও বকাবকি না করে এমন ভাবে বোঝাতে হবে, যাতে সন্তান আপনার কথা শুনতে বাধ্য হয়। কখনোই বাচ্চাকে খারাপ কথা বা কটু কথা বলবেন না। এই ধরনের কথা মনে প্রভাব ফেলে।

সন্তান রেগে গেলে কেমন আচরণ করে তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। যদি জেদ বেড়ে গেলে মারধোর করা শুরু করে বা তির্যক মন্তব্য করতে থাকে, তা হলে সেখান থেকে সরে আসুন। কিছুক্ষণ একা থাকতে দিন। রাগ কমলে তার সঙ্গে কথা বলুন। রাগের মাথায় সে যদি বাড়ির কোনো জিনিস ভেঙে থাকে বা কাউকে খারাপ কথা বলে বসে, তা হলে আপনি গালমন্দ না করে তাকে ঠিক আর ভুলের পার্থক্যটা বোঝান। মাথা ঠান্ডা হলে সে-ও আপনার বক্তব্য বোঝার চেষ্টা করবে।

সন্তান রেগে গেলে তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নিজের রাগের বহিঃপ্রকাশ ঘটলে কিন্তু তাকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। শিশু কোনো কোনো ক্ষেত্রে এমন আচরণ বেশি করছে তা লক্ষ্য করুন। আপনার শিশু রেগে যেতে পারে এমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আগেই শিশুকে সবধান করুন। তার মনোযোগ অন্য দিকে ঘোরানোর চেষ্টা করুন।

শিশুর সঙ্গে ব্যবহারও গুরুত্বপূর্ণ। অনিন্দিতার মতে, অনেক পরিবারেই বাচ্চাদের মধ্যে তুলনা টেনে কথা বলা হয়, যা তাদের নরম মনে আঘাত করে। বড়রা অনেক সময়েই বোঝেন না যে, কথায় কথায় তুলনা টানলে বা অযথা প্রতিযোগিতার মধ্যে বাচ্চাদের ঠেলে দিলে তা তাদের আত্মবিশ্বাসকে চুরমার করে দেবে। তখন হয় শিশু নিজেকে গুটিয়ে নেবে, না হলে নিজের খামতিগুলোকে ঢাকতে প্রচণ্ড জেদি ও একগুঁয়ে হয়ে উঠবে। তাই সে দিকে খেয়াল রাখুন।

কেকে

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

জনপ্রিয় সংবাদ

অনলাইন স্ক্যাম ও জালিয়াতি প্রতিরোধে নতুন ফিচার আনল হোয়াটসঅ্যাপ

রাগী বাচ্চাদের নিয়ন্ত্রণ করার উপায় কী?

আপডেট সময় : ১০:১৭:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২৪

শিশুরা সহজেই রেগে যেতে পারে। এদের আবেগ ও সংবেদনশীলতা বেশি থাকে। তবে সব শিশুরা এক রকম নয়। কোনো কোনো আবার শিশু সহজেই রেগে যায়। মাঝে মাঝে দেখা যায় সন্তানের অতিরিক্ত রাগ সামলাতে হিমশিম খেতে হয় মা-বাবাকে। কড়া শাসন বা বকাবকি করলে আবার দূরত্ব বাড়ছে মা-বাবার সঙ্গে।

এই বিষয়ে ভারতীয় মনোবিদ অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়ের মত, এখনকার বাবা-মায়েরা সন্তানকে বেশি সময় দিতে পারেন না। তাই তাকে শান্ত রাখতে সব বায়নাই পূরণ করেন। এতে বাচ্চারা বোঝে, সে যা চাইবে তা-ই পাবে। আর যখনই তার ব্যতিক্রম হয়, তখনই রাগ, জেদের বহিঃপ্রকাশ দেখা যায়।

এমন অনেক শিশুকেই মা-বাবা নিয়ে আসেন, যারা রেগে গেলে হাত-পা চালাতে শুরু করে। ঘরের জিনিসপত্র ভাঙচুর করে। এমনকি একা ঘরে নিজেকে বন্দিও করে ফেলে। সেই রাগ কমতেও বহু দিন লেগে যায়। এমন আচরণকে বলা হয় ‘আউটওয়ার্ডলি অ্যাগ্রেসিভ বিহেভিয়ার’। সে ক্ষেত্রে বাবা-মা যদি ঠান্ডা মাথায় পরিস্থিতি না সামলান, তা হলে শিশুর আচরণ মারাত্মক পর্যায়েও যেতে পারে।

বাচ্চাদের রাগ সামলাবেন কী উপায়ে?

মনোবিদের পরামর্শ, সন্তান রেগে গেলে অভিভাবকদের মাথা ঠান্ডা রেগে বোঝাতে হবে। সে যতই কান্নাকাটি করুন, মাটিতে বসে বা শুয়ে পড়ুক, তার পরেও বকাবকি না করে এমন ভাবে বোঝাতে হবে, যাতে সন্তান আপনার কথা শুনতে বাধ্য হয়। কখনোই বাচ্চাকে খারাপ কথা বা কটু কথা বলবেন না। এই ধরনের কথা মনে প্রভাব ফেলে।

সন্তান রেগে গেলে কেমন আচরণ করে তার ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে। যদি জেদ বেড়ে গেলে মারধোর করা শুরু করে বা তির্যক মন্তব্য করতে থাকে, তা হলে সেখান থেকে সরে আসুন। কিছুক্ষণ একা থাকতে দিন। রাগ কমলে তার সঙ্গে কথা বলুন। রাগের মাথায় সে যদি বাড়ির কোনো জিনিস ভেঙে থাকে বা কাউকে খারাপ কথা বলে বসে, তা হলে আপনি গালমন্দ না করে তাকে ঠিক আর ভুলের পার্থক্যটা বোঝান। মাথা ঠান্ডা হলে সে-ও আপনার বক্তব্য বোঝার চেষ্টা করবে।

সন্তান রেগে গেলে তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নিজের রাগের বহিঃপ্রকাশ ঘটলে কিন্তু তাকে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে না। শিশু কোনো কোনো ক্ষেত্রে এমন আচরণ বেশি করছে তা লক্ষ্য করুন। আপনার শিশু রেগে যেতে পারে এমন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ার আগেই শিশুকে সবধান করুন। তার মনোযোগ অন্য দিকে ঘোরানোর চেষ্টা করুন।

শিশুর সঙ্গে ব্যবহারও গুরুত্বপূর্ণ। অনিন্দিতার মতে, অনেক পরিবারেই বাচ্চাদের মধ্যে তুলনা টেনে কথা বলা হয়, যা তাদের নরম মনে আঘাত করে। বড়রা অনেক সময়েই বোঝেন না যে, কথায় কথায় তুলনা টানলে বা অযথা প্রতিযোগিতার মধ্যে বাচ্চাদের ঠেলে দিলে তা তাদের আত্মবিশ্বাসকে চুরমার করে দেবে। তখন হয় শিশু নিজেকে গুটিয়ে নেবে, না হলে নিজের খামতিগুলোকে ঢাকতে প্রচণ্ড জেদি ও একগুঁয়ে হয়ে উঠবে। তাই সে দিকে খেয়াল রাখুন।

কেকে