ঢাকা ০৬:০৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৫ জুন ২০২৫, ১১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খাওয়ার আগে-পরে কেন ডায়াবেটিস মাপা জরুরি?

দুপুরে বা রাতের খাবার খাওয়ার পর রক্তে শর্করার মাত্রা কত উঠছে বা নামছে, তা খেয়াল করেছেন কখনো? রক্তে শর্করা এমনিতেও ওঠানামা করে। তবে ভাত বা মিষ্টি জাতীয় খাবার অথবা ভাজাপোড়া একটু বেশি খেয়ে ফেললে ‘ব্লাড সুগার’ ওঠানামা করবেই।

তবে যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের অনেকে নিয়ম করে রক্তে শর্করা মাপেন। খাওয়ার ঠিক ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে তা কি পরিমাপ করেছেন কখনও? যদি মেপে থাকেন এবং শর্করার মাত্রা ১৮০ মিলিগ্রাম/ ডিএলের বেশি আসে অথবা ২০০ এমজি/ ডিএল ছাড়িয়ে যায়, তা শরীরের জন্য ভালো না মন্দ, জেনে রাখা ভালো।

আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশনের একটি তথ্য বলছে, খাওয়ার ২ ঘণ্টা পরে রক্তে শর্করার মাত্রা ১৩০ থেকে ১৪০ মিলিগ্রাম/ডিএল থাকা উচিত। তা যদি ১৮০ মিলিগ্রাম/ ডিএলের বেশি হয়, তাহলে বুঝতে হবে, আপনি প্রি-ডায়াবেটিক লেভেলে আছেন।

আর যদি রক্তে শর্করার মাত্রা ২০০ মিলিগ্রাম/ ডিএল হয়, তাহলে বুঝতে হবে আপনার ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ছে। যদি লাগাতার এই লেভেলের মাপ আসতে থাকে, তাহলে দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

তবে যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের খাওয়ার পরে ‘ব্লাড সুগার’ লেভেল ১৮০ থেকে ২০০ মিলিগ্রাম/ ডিএল আসতে শুরু করলে খাবারে নিয়ন্ত্রণ আনা জরুরি। বুঝতে হবে- এমন খাবার খাচ্ছেন, যেখানে শর্করার মাত্রা খুব বেশি।

২০২৪ সালে ভারতে ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স’ থেকে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। এতে গবেষকরা জানিয়েছেন, খাওয়ার আগে ও পরে রক্তে শর্করার মাত্রা কত তা পরিমাপ করলে বোঝা যাবে, ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা আছে কিনা।

এতে বলা হয়েছে, খাওয়ার আগে রক্তে শর্করার মাত্রা হওয়া উচিত ৭০ থেকে ১২০ মিলিগ্রাম/ ডিএল, আর খাওয়ার দুই ঘণ্টার পরে রক্তে শর্করার মাত্রা ১৩০ থেকে ১৪০ মিলিগ্রাম হলে তা স্বাভাবিক। এর বেশি হতে শুরু করলেই ঝামেলা।

এছাড়া কোন কোন সময়ে ‘সুগার’ মাপবেন

১) সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে পরীক্ষা করতে হবে। এতে রাতের খাওয়ারের সঙ্গে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টার তফাত রাখতে হবে।

২) সকালে নাস্তার ২ ঘণ্টা পরে আবার মাপতে হবে।

৩) দুপুরের খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে একবার মেপে নেওয়া জরুরি।

৪) দুপুরে খাওয়ার ২ ঘণ্টা পরে আবার মাপতে হবে।

৫) রাতে খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে মাপুন।

৬) রাতে খাওয়ার ২ ঘণ্টা পর আরেকবার মাপুন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাবার খাওয়ার আগে এবং পরে শর্করার পরিমাণ উনিশ-বিশ হতে থাকলে ভাত, রুটি ইত্যাদি কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দানাশস্য (ডালিয়া, কিনোয়া, ওট্স, ফল) বেশি করে খেতে হবে। এছাড়া খাওয়ার পরে অন্তত ৩০ মিনিটের জন্য হাঁটাহাঁটি করতে হবে।

কেকে

ট্যাগস :

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

জনপ্রিয় সংবাদ

খাওয়ার আগে-পরে কেন ডায়াবেটিস মাপা জরুরি?

আপডেট সময় : ০৮:০৪:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫

দুপুরে বা রাতের খাবার খাওয়ার পর রক্তে শর্করার মাত্রা কত উঠছে বা নামছে, তা খেয়াল করেছেন কখনো? রক্তে শর্করা এমনিতেও ওঠানামা করে। তবে ভাত বা মিষ্টি জাতীয় খাবার অথবা ভাজাপোড়া একটু বেশি খেয়ে ফেললে ‘ব্লাড সুগার’ ওঠানামা করবেই।

তবে যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের অনেকে নিয়ম করে রক্তে শর্করা মাপেন। খাওয়ার ঠিক ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যে তা কি পরিমাপ করেছেন কখনও? যদি মেপে থাকেন এবং শর্করার মাত্রা ১৮০ মিলিগ্রাম/ ডিএলের বেশি আসে অথবা ২০০ এমজি/ ডিএল ছাড়িয়ে যায়, তা শরীরের জন্য ভালো না মন্দ, জেনে রাখা ভালো।

আমেরিকান ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশনের একটি তথ্য বলছে, খাওয়ার ২ ঘণ্টা পরে রক্তে শর্করার মাত্রা ১৩০ থেকে ১৪০ মিলিগ্রাম/ডিএল থাকা উচিত। তা যদি ১৮০ মিলিগ্রাম/ ডিএলের বেশি হয়, তাহলে বুঝতে হবে, আপনি প্রি-ডায়াবেটিক লেভেলে আছেন।

আর যদি রক্তে শর্করার মাত্রা ২০০ মিলিগ্রাম/ ডিএল হয়, তাহলে বুঝতে হবে আপনার ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ছে। যদি লাগাতার এই লেভেলের মাপ আসতে থাকে, তাহলে দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।

তবে যাদের ডায়াবেটিস আছে তাদের খাওয়ার পরে ‘ব্লাড সুগার’ লেভেল ১৮০ থেকে ২০০ মিলিগ্রাম/ ডিএল আসতে শুরু করলে খাবারে নিয়ন্ত্রণ আনা জরুরি। বুঝতে হবে- এমন খাবার খাচ্ছেন, যেখানে শর্করার মাত্রা খুব বেশি।

২০২৪ সালে ভারতে ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স’ থেকে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়। এতে গবেষকরা জানিয়েছেন, খাওয়ার আগে ও পরে রক্তে শর্করার মাত্রা কত তা পরিমাপ করলে বোঝা যাবে, ডায়াবেটিস হওয়ার আশঙ্কা আছে কিনা।

এতে বলা হয়েছে, খাওয়ার আগে রক্তে শর্করার মাত্রা হওয়া উচিত ৭০ থেকে ১২০ মিলিগ্রাম/ ডিএল, আর খাওয়ার দুই ঘণ্টার পরে রক্তে শর্করার মাত্রা ১৩০ থেকে ১৪০ মিলিগ্রাম হলে তা স্বাভাবিক। এর বেশি হতে শুরু করলেই ঝামেলা।

এছাড়া কোন কোন সময়ে ‘সুগার’ মাপবেন

১) সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে পরীক্ষা করতে হবে। এতে রাতের খাওয়ারের সঙ্গে ৮ থেকে ১০ ঘণ্টার তফাত রাখতে হবে।

২) সকালে নাস্তার ২ ঘণ্টা পরে আবার মাপতে হবে।

৩) দুপুরের খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে একবার মেপে নেওয়া জরুরি।

৪) দুপুরে খাওয়ার ২ ঘণ্টা পরে আবার মাপতে হবে।

৫) রাতে খাওয়ার ৩০ মিনিট আগে মাপুন।

৬) রাতে খাওয়ার ২ ঘণ্টা পর আরেকবার মাপুন।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাবার খাওয়ার আগে এবং পরে শর্করার পরিমাণ উনিশ-বিশ হতে থাকলে ভাত, রুটি ইত্যাদি কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবারের পরিমাণ কমিয়ে দানাশস্য (ডালিয়া, কিনোয়া, ওট্স, ফল) বেশি করে খেতে হবে। এছাড়া খাওয়ার পরে অন্তত ৩০ মিনিটের জন্য হাঁটাহাঁটি করতে হবে।

কেকে