ঢাকা ০৩:৪৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫, ১৭ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
কলকাতার মতো শহর পৃথিবীতে নেই : জয়া আহসান চলতি মাসেই জুলাই সনদ প্রকাশ করতে হবে : রাশেদ প্রধান জুলাই সনদ নিয়ে টালবাহানা সহ্য করা হবে না : নাহিদ ইসলাম সংস্কারবিহীন কোনো নির্বাচন জামায়াত গ্রহণ করবে না: তাহের দুঃখিত, এবার আর তা হবে না: প্রেস সচিব জুলাই অভ‍্যুত্থান স্মরণে মাসব্যাপী কর্মসূচি উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা স্বৈরাচারের লক্ষণ দেখামাত্রই যেন বিনাশ করতে পারি: প্রধান উপদেষ্টা জুলাই ঘোষণাপত্র দেবে অন্তর্বর্তী সরকার, কোনো দল বা ব্যক্তি নয় : জুলাই ঐক্য পদ্মা সেতুর মামলার প্রতিবেদন গায়ের জোরে দিয়েছে বিগত কমিশন : দুদক চেয়ারম্যান সবুজ পৃথিবী চাই: বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ ঢাকা আলিয়ার বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি

পানিপথের প্রথম ও দ্বিতীয় যুদ্ধের পটভূমি পূর্বক আলোচনা ও এবং ফলাফল ও পরবর্তী অবস্থা

ছবি : সংগৃহীত

আহসান হাবিব,শিক্ষার্থী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

পানিপথের প্রথম যুদ্ধ ১৫২৬ খ্রিষ্টাব্দের ২১ এপ্রিল লোদি রাজবংশের ইব্রাহিম লোদি এবং মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা বাবরের মধ্যে সংঘটিত হয়। যুদ্ধক্ষেত্রে কামানের ব্যবহার হয়েছে এমন যুদ্ধের মধ্যে এই যুদ্ধ প্রথমগুলোর অন্যতম।

পানিপথের প্রথম যুদ্ধ ও সুলতান ইবরাহিম লোদির মৃত্যু ২১ এপ্রিল ১৫২৬।অবস্থান পানিপথ, হরিয়ানা, ভারত।ফলাফল মুঘল বিজয় অধিকৃত এলাকার পরিবর্তন মুঘল কর্তৃক দিল্লি সালতানাত বিলুপ্ত। বিবাদমান পক্ষ হলো মুঘল সাম্রাজ্য লোদি রাজবংশ সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী বাবর, চিন তৈমুর খান, উস্তাদ আলি কুলি, মুস্তাফা রুমি, আসাদ মালিক হাস্ত, রাজা, সাংহার আলি খান, ইবরাহিম লোদি, রাজা হাসান খান।

মেওয়াতপাতি শক্তি ১৩,০০০-১৫,০০০। মুঘল ফিল্ড আর্টিলারি ৩০,০০০-৪০,০০০।
১০০-১,০০০ যুদ্ধহাতি ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের পানিপথ গ্রামের নিকটে ১৫২৬ সালের ২১ এপ্রিল এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়। ২০ শতকের আগে এই অঞ্চলে আরো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে।

হিসাব অনুযায়ী বাবরের বাহিনীতে ১৫,০০০ সৈনিক এবং ২০ থেকে ২৪টি ফিল্ড আর্টি‌লারি ছিল। ইব্রাহিম বাহিনীতে সর্বমোট লোকসংখ্যা ছিল প্রায় ১,০০,০০০। তবে মূল লড়াইয়ের বাহিনীতে লোকসংখ্যা ছিল প্রায় ৩০,০০০ থেকে ৪০,০০০। এর পাশাপাশি যুদ্ধ হাতি ছিল প্রায় ১,০০০।

ইব্রাহিম লোদির বাহিনীর আকার জানতে পেরে বাবর তার বাহিনীর ডান ভাগকে পানিপথ শহরের বিরুদ্ধে সুরক্ষিত করেন। এজন্য বৃক্ষশাখা আচ্ছাদিত পরিখা খনন করা হয়। মধ্যভাগে দড়ি দিয়ে বাধা ৭০০টি গরুরগাড়ি রাখা হয়। প্রতি দুইটি গাড়ির মধ্যে ম্যাচলকম্যানদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখা হয়। এই ব্যবস্থা প্রণীত হওয়ার সময় ঘোড়সওয়ারদের আক্রমণের জন্য যথেষ্ট স্থান রাখা হয়।

ইব্রাহিম লোদির সেনারা উপস্থিত হওয়ার পর তিনি দেখতে পান যে বাবরের সেনাদের বিন্যাস সংকীর্ণ। তিনি সংকীর্ণতম স্থানে আক্রমণের নির্দেশ দিলে বাবর তার পার্শ্বভাগের সুবিধা নেন।ইব্রাহিম লোদির অনেক সেনা যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে ব্যর্থ হয় এবং যুদ্ধের মোড় ঘুরে গেলে তারা পালাতে শুরু করে। বাবরের বাহিনী তাদের মাস্কেট, কামান ও ঘোড়সওয়ারদের নিয়ে আক্রমণ শুরু করে। যুদ্ধে ইব্রাহিম লোদি পরাজিত ও নিহত হন।কামান ব্যবহারের সুবিধা
সম্পাদনা বাবরের কামান-বন্দুক যুদ্ধক্ষেত্রে ভাগ্যনির্ধারণের ভূমিকা রেখেছে। এর কারণ প্রথমত ইবরাহিম লোদির বাহিনীতে কোনো গোলন্দাজ বাহিনী ছিল না। পাশাপাশি কামানের বিকট শব্দ লোদি বাহিনীর হাতিগুলোকে ভয় পাইয়ে দেয় ফলে হাতিগুলো লোদি বাহিনীর সেনাদের পদদলিত করা শুরু করে।বাবর এই যুদ্ধে তুলুগুমা ও আরাবা নামক নতুন কৌশল ব্যবহার করেন। তুলুগুমা দ্বারা বোঝায় সমগ্র সেনাবাহিনীকে বেশ কিছু অংশে বিভক্ত করা যেমন মধ্য, ডান ও বাম পার্শ্ব। ডান ও বাম পার্শ্বভাগ সম্মুখ ও পশ্চাৎ অংশে বিভক্ত করা হয়। এর ফলে ক্ষুদ্র সেনাবাহিনী প্রতিপক্ষকে সবদিক থেকে ঘিরে ফেলতে সক্ষম হয়।

সেনাদলের মধ্যভাগের সম্মুখ অংশে গরুর গাড়ি (আরাবা) স্থাপন করা হয়। এগুলোকে দড়ি দিয়ে যুক্ত করে রাখা হয়। এসব গাড়ির পিছনে কামান স্থাপন করা হয়েছিল। এই দুই কৌশলের ফলে বাবরের গোলন্দাজ ইউনিট ধ্বংসাত্বক হয়ে উঠে। সামনে গরুর গাড়ি দ্বারা প্রতিরক্ষার ব্যবস্থা করায় কামানগুলো কোনো প্রকার হামলা সহ্য না করে গোলাবর্ষণ করতে সক্ষম হয়। কামানগুলোর মুখ ঘুরিয়ে সহজেই অন্য লক্ষ্যের দিকে আক্রমণ করা যেত। এছাড়াও তিনি যুদ্ধে তুর্কিদের থেকে শেখা রুমি কৌশল ব্যবহার করেন।যুদ্ধে ইবরাহিম লোদি তার ১৫,০০০ সৈনিকসহ নিহত হন। গোয়ালিয়রের শাসক বিক্রমজিতও যুদ্ধে মারা যান।পানিপথের এই যুদ্ধ ভাগ্যনির্ধারণী ছিল। এর ফলে বাবর মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন। ১১৯২ সালে থানেশ্বরের নিকটে ফলাফল ঘুরিদের বিজয় অধিকৃত
এলাকার পরিবর্তন মুহাম্মদ ঘুরি বিহার প্রদেশ জয় করেন। বিবাদমান পক্ষ ছিল ঘুরি সাম্রাজ্যের চৌহান রাজপুত সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী মুহাম্মদ ঘুরি পৃথ্বীরাজ চৌহান।

শক্তি ১,২০,০০০ থেকে ৩,০০,০০০
হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি পৃথ্বীরাজ চৌহান (মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত) গজনি ফিরে আসার পর মুহাম্মদ ঘুরি পাল্টা আক্রমণের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। লাহোর পৌছাবার পর তিনি পৃথ্বীরাজের কাছে আনুগত্য প্রকাশের আহ্বান জানিয়ে দূত পাঠান। পৃথ্বীরাজ এই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেন। পৃথ্বীরাজ এরপর অন্যান্য রাজপুত নেতাদেরকে তার পাশে দাড়নোর আহ্বান জানান।

সেনা সংখ্যা সম্পাদনা:
ইতিহাসবিদ ফিরিশতার মতে রাজপুত বাহিনীতে ৩,০০০ হাতি, ৩,০০,০০০ অশ্বারোহী ও পদাতিক সৈনিক ছিল। তবে এই সংখ্যা সঠিক সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি মনে করা হয়।মিনহাজ-ই-সিরাজ লিখেছেন যে মুহাম্মদ ঘুরির বাহিনীতে ১,২০,০০০ সশস্ত্র সৈনিক ছিল।

যুদ্ধ সম্পাদনা:
মিত্ররা এসে উপস্থিত না হওয়ায় পৃথ্বীরাজ আরো কিছু সময় আশা করছিলেন। এই সংবাদ পাওয়ার পর মুহাম্মদ ঘুরি সন্ধি প্রস্তাব দিয়ে পৃথ্বিরাজকে চিঠি পাঠান। ভোর শুরু হওয়ার পূর্বে ঘুরি বাহিনী রাজপুতদের উপর আক্রমণ শুরু করে। মুহাম্মদ ঘুরি তার বাহিনীকে পাঁচটি ইউনিটে বিভক্ত করেন। চারটি ইউনিট রাজপুত বাহিনীর পার্শ্বভাগ ও পশ্চাতভাগ আক্রমণ কর। তার পার্শ্বভাগের আক্রমণগুলো ব্যর্থ হয় তবে লড়াই চলতে থাকে।রাজপুতদের সারি ভেঙে ফেলার জন্য মুহাম্মদ ঘুরি তার পঞ্চম ইউনিটকে পালানোর ভান করার আদেশ দেন। রাজপুতরা পিছু হটা ইউনিটকে আক্রমণ করে। এর ফলে পৃথ্বীরাজের বাহিনীর স্থিতিশীলতা নষ্ট হয়ে যায়।এসময় পার্শ্বভাগের আক্রমণের পাশাপাশি ঘুরিদের ১২,০০০ অশ্বারোহী আক্রমণ শুরু করে। এর ফলে রাজপুতরা পরাজিত হয়। পৃথ্বীরাজকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং পরে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।মুহাম্মদ ঘুরির এই বিজয় ফলাফল নির্ধা‌রণী ছিল। ১১৯৩ সালে তিনি বিহার প্রদেশ জয় করে নেন।১২০৪ সালে তার বাহিনী বাংলা জয় করে ভারত বিজয় সম্পন্ন করে।

এমএস

ট্যাগস :

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

কলকাতার মতো শহর পৃথিবীতে নেই : জয়া আহসান

পানিপথের প্রথম ও দ্বিতীয় যুদ্ধের পটভূমি পূর্বক আলোচনা ও এবং ফলাফল ও পরবর্তী অবস্থা

আপডেট সময় : ০৫:০৭:১৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৩ মার্চ ২০২৫

আহসান হাবিব,শিক্ষার্থী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

পানিপথের প্রথম যুদ্ধ ১৫২৬ খ্রিষ্টাব্দের ২১ এপ্রিল লোদি রাজবংশের ইব্রাহিম লোদি এবং মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা বাবরের মধ্যে সংঘটিত হয়। যুদ্ধক্ষেত্রে কামানের ব্যবহার হয়েছে এমন যুদ্ধের মধ্যে এই যুদ্ধ প্রথমগুলোর অন্যতম।

পানিপথের প্রথম যুদ্ধ ও সুলতান ইবরাহিম লোদির মৃত্যু ২১ এপ্রিল ১৫২৬।অবস্থান পানিপথ, হরিয়ানা, ভারত।ফলাফল মুঘল বিজয় অধিকৃত এলাকার পরিবর্তন মুঘল কর্তৃক দিল্লি সালতানাত বিলুপ্ত। বিবাদমান পক্ষ হলো মুঘল সাম্রাজ্য লোদি রাজবংশ সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী বাবর, চিন তৈমুর খান, উস্তাদ আলি কুলি, মুস্তাফা রুমি, আসাদ মালিক হাস্ত, রাজা, সাংহার আলি খান, ইবরাহিম লোদি, রাজা হাসান খান।

মেওয়াতপাতি শক্তি ১৩,০০০-১৫,০০০। মুঘল ফিল্ড আর্টিলারি ৩০,০০০-৪০,০০০।
১০০-১,০০০ যুদ্ধহাতি ভারতের হরিয়ানা রাজ্যের পানিপথ গ্রামের নিকটে ১৫২৬ সালের ২১ এপ্রিল এই যুদ্ধ সংঘটিত হয়। ২০ শতকের আগে এই অঞ্চলে আরো কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে।

হিসাব অনুযায়ী বাবরের বাহিনীতে ১৫,০০০ সৈনিক এবং ২০ থেকে ২৪টি ফিল্ড আর্টি‌লারি ছিল। ইব্রাহিম বাহিনীতে সর্বমোট লোকসংখ্যা ছিল প্রায় ১,০০,০০০। তবে মূল লড়াইয়ের বাহিনীতে লোকসংখ্যা ছিল প্রায় ৩০,০০০ থেকে ৪০,০০০। এর পাশাপাশি যুদ্ধ হাতি ছিল প্রায় ১,০০০।

ইব্রাহিম লোদির বাহিনীর আকার জানতে পেরে বাবর তার বাহিনীর ডান ভাগকে পানিপথ শহরের বিরুদ্ধে সুরক্ষিত করেন। এজন্য বৃক্ষশাখা আচ্ছাদিত পরিখা খনন করা হয়। মধ্যভাগে দড়ি দিয়ে বাধা ৭০০টি গরুরগাড়ি রাখা হয়। প্রতি দুইটি গাড়ির মধ্যে ম্যাচলকম্যানদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখা হয়। এই ব্যবস্থা প্রণীত হওয়ার সময় ঘোড়সওয়ারদের আক্রমণের জন্য যথেষ্ট স্থান রাখা হয়।

ইব্রাহিম লোদির সেনারা উপস্থিত হওয়ার পর তিনি দেখতে পান যে বাবরের সেনাদের বিন্যাস সংকীর্ণ। তিনি সংকীর্ণতম স্থানে আক্রমণের নির্দেশ দিলে বাবর তার পার্শ্বভাগের সুবিধা নেন।ইব্রাহিম লোদির অনেক সেনা যুদ্ধে অবতীর্ণ হতে ব্যর্থ হয় এবং যুদ্ধের মোড় ঘুরে গেলে তারা পালাতে শুরু করে। বাবরের বাহিনী তাদের মাস্কেট, কামান ও ঘোড়সওয়ারদের নিয়ে আক্রমণ শুরু করে। যুদ্ধে ইব্রাহিম লোদি পরাজিত ও নিহত হন।কামান ব্যবহারের সুবিধা
সম্পাদনা বাবরের কামান-বন্দুক যুদ্ধক্ষেত্রে ভাগ্যনির্ধারণের ভূমিকা রেখেছে। এর কারণ প্রথমত ইবরাহিম লোদির বাহিনীতে কোনো গোলন্দাজ বাহিনী ছিল না। পাশাপাশি কামানের বিকট শব্দ লোদি বাহিনীর হাতিগুলোকে ভয় পাইয়ে দেয় ফলে হাতিগুলো লোদি বাহিনীর সেনাদের পদদলিত করা শুরু করে।বাবর এই যুদ্ধে তুলুগুমা ও আরাবা নামক নতুন কৌশল ব্যবহার করেন। তুলুগুমা দ্বারা বোঝায় সমগ্র সেনাবাহিনীকে বেশ কিছু অংশে বিভক্ত করা যেমন মধ্য, ডান ও বাম পার্শ্ব। ডান ও বাম পার্শ্বভাগ সম্মুখ ও পশ্চাৎ অংশে বিভক্ত করা হয়। এর ফলে ক্ষুদ্র সেনাবাহিনী প্রতিপক্ষকে সবদিক থেকে ঘিরে ফেলতে সক্ষম হয়।

সেনাদলের মধ্যভাগের সম্মুখ অংশে গরুর গাড়ি (আরাবা) স্থাপন করা হয়। এগুলোকে দড়ি দিয়ে যুক্ত করে রাখা হয়। এসব গাড়ির পিছনে কামান স্থাপন করা হয়েছিল। এই দুই কৌশলের ফলে বাবরের গোলন্দাজ ইউনিট ধ্বংসাত্বক হয়ে উঠে। সামনে গরুর গাড়ি দ্বারা প্রতিরক্ষার ব্যবস্থা করায় কামানগুলো কোনো প্রকার হামলা সহ্য না করে গোলাবর্ষণ করতে সক্ষম হয়। কামানগুলোর মুখ ঘুরিয়ে সহজেই অন্য লক্ষ্যের দিকে আক্রমণ করা যেত। এছাড়াও তিনি যুদ্ধে তুর্কিদের থেকে শেখা রুমি কৌশল ব্যবহার করেন।যুদ্ধে ইবরাহিম লোদি তার ১৫,০০০ সৈনিকসহ নিহত হন। গোয়ালিয়রের শাসক বিক্রমজিতও যুদ্ধে মারা যান।পানিপথের এই যুদ্ধ ভাগ্যনির্ধারণী ছিল। এর ফলে বাবর মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন। ১১৯২ সালে থানেশ্বরের নিকটে ফলাফল ঘুরিদের বিজয় অধিকৃত
এলাকার পরিবর্তন মুহাম্মদ ঘুরি বিহার প্রদেশ জয় করেন। বিবাদমান পক্ষ ছিল ঘুরি সাম্রাজ্যের চৌহান রাজপুত সেনাধিপতি ও নেতৃত্ব প্রদানকারী মুহাম্মদ ঘুরি পৃথ্বীরাজ চৌহান।

শক্তি ১,২০,০০০ থেকে ৩,০০,০০০
হতাহত ও ক্ষয়ক্ষতি পৃথ্বীরাজ চৌহান (মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত) গজনি ফিরে আসার পর মুহাম্মদ ঘুরি পাল্টা আক্রমণের জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন। লাহোর পৌছাবার পর তিনি পৃথ্বীরাজের কাছে আনুগত্য প্রকাশের আহ্বান জানিয়ে দূত পাঠান। পৃথ্বীরাজ এই আহ্বান প্রত্যাখ্যান করেন। পৃথ্বীরাজ এরপর অন্যান্য রাজপুত নেতাদেরকে তার পাশে দাড়নোর আহ্বান জানান।

সেনা সংখ্যা সম্পাদনা:
ইতিহাসবিদ ফিরিশতার মতে রাজপুত বাহিনীতে ৩,০০০ হাতি, ৩,০০,০০০ অশ্বারোহী ও পদাতিক সৈনিক ছিল। তবে এই সংখ্যা সঠিক সংখ্যার চেয়ে অনেক বেশি মনে করা হয়।মিনহাজ-ই-সিরাজ লিখেছেন যে মুহাম্মদ ঘুরির বাহিনীতে ১,২০,০০০ সশস্ত্র সৈনিক ছিল।

যুদ্ধ সম্পাদনা:
মিত্ররা এসে উপস্থিত না হওয়ায় পৃথ্বীরাজ আরো কিছু সময় আশা করছিলেন। এই সংবাদ পাওয়ার পর মুহাম্মদ ঘুরি সন্ধি প্রস্তাব দিয়ে পৃথ্বিরাজকে চিঠি পাঠান। ভোর শুরু হওয়ার পূর্বে ঘুরি বাহিনী রাজপুতদের উপর আক্রমণ শুরু করে। মুহাম্মদ ঘুরি তার বাহিনীকে পাঁচটি ইউনিটে বিভক্ত করেন। চারটি ইউনিট রাজপুত বাহিনীর পার্শ্বভাগ ও পশ্চাতভাগ আক্রমণ কর। তার পার্শ্বভাগের আক্রমণগুলো ব্যর্থ হয় তবে লড়াই চলতে থাকে।রাজপুতদের সারি ভেঙে ফেলার জন্য মুহাম্মদ ঘুরি তার পঞ্চম ইউনিটকে পালানোর ভান করার আদেশ দেন। রাজপুতরা পিছু হটা ইউনিটকে আক্রমণ করে। এর ফলে পৃথ্বীরাজের বাহিনীর স্থিতিশীলতা নষ্ট হয়ে যায়।এসময় পার্শ্বভাগের আক্রমণের পাশাপাশি ঘুরিদের ১২,০০০ অশ্বারোহী আক্রমণ শুরু করে। এর ফলে রাজপুতরা পরাজিত হয়। পৃথ্বীরাজকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং পরে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়।মুহাম্মদ ঘুরির এই বিজয় ফলাফল নির্ধা‌রণী ছিল। ১১৯৩ সালে তিনি বিহার প্রদেশ জয় করে নেন।১২০৪ সালে তার বাহিনী বাংলা জয় করে ভারত বিজয় সম্পন্ন করে।

এমএস