ঢাকা ১২:০৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৫, ৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::

লেবানন থেকে দ্রুত সব ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহারের আহ্বান জাতিসংঘের

ছবি : সংগৃহীত

লেবানন ও ইসরাইলের মধ্যকার যুদ্ধবিরতিকে ‘নাজুক’ ও ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে উল্লেখ করেছেন জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের আন্ডার-সেক্রেটারি-জেনারেল জঁ-পিয়ের ল্যাক্রোয়া। পাশাপাশি তিনি ইসরাইলি সেনাবাহিনীকে লেবানন থেকে দ্রুত সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

শনিবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে দেওয়া ভাষণে ল্যাক্রোয়া বলেন, ‘লেবানন এবং ইসরাইলের মধ্যে সংঘর্ষের সমাপ্তির জন্য একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি করা হয়েছে। যদিও এটি এখনো নাজুক ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। কারণ সেখানে সংঘর্ষ এখনো বহাল রয়েছে’।

ইসরাইলের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের অভিযোগ

তিনি বলেন, লেবানন সরকার যুদ্ধবিরতির চুক্তি রক্ষা করার অঙ্গীকার করেছে। তবে সেখানে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর উপস্থিতি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের রেজুলেশন ১৭০১-এর লঙ্ঘন।

ল্যাক্রোয়া জানান, ইসরাইলের সেনা প্রত্যাহার কার্যক্রমের ওপরেই সেখানে লেবাননের সশস্ত্র বাহিনীর (LAF) সদস্য মোতায়েন নির্ভর করছে।

তিনি আরও বলেন, ইসরাইলি বাহিনী অবৈধভাবে টানেল ধ্বংস, স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া এবং কৃষিজমি ধ্বংস করে যাচ্ছে। এমনকি লেবাননের আকাশসীমায় ইসরাইলের অনবরত আক্রমণ ও যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন অব্যাহত রয়েছে।

জাতিসংঘের এই শীর্ষ কর্মকর্তা সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘ঘোষণা অনুযায়ী, ইসরাইলি বাহিনীর উচিত এই ৬০ দিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই অবিলম্বে লেবাননের ভূখণ্ড ত্যাগ করা’।

ল্যাক্রোয়া এ সময় জাতিসংঘের ইউনিফিল (UNIFIL) কর্মীরা এখনো বাঙ্কারে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছেন বলেও উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, অপারেশনের এলাকায় বিস্ফোরক বস্তু, ইসরাইলি সেনাদের সড়ক অবরোধ এবং স্থানীয়দের কাজে হস্তক্ষেপ তাদের কার্যক্রমকে ব্যাহত করছে।

গোলান মালভূমি ও সিরিয়ার পরিস্থিতি

এদিকে জাতিসংঘের ট্রুস সুপারভিশন অর্গানাইজেশন (UNTSO)-এর প্রধান প্যাট্রিক গাউচ্যাট জানান, ইসরাইলি সেনাবাহিনী গোলান মালভূমির নিরপেক্ষ অঞ্চল এবং লেবানন সীমান্তে নির্মাণ কাজ এবং টেলিযোগাযোগ সরঞ্জাম স্থাপন করছে। পাশাপাশি সিরিয়ার সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করে ইসরাইল তাদের বিমান হামলা আরও বাড়িয়েছে।

গাউচ্যাট বলেন, ‘ইসরাইলের এমন কার্যক্রম জাতিসংঘের ১৯৭৪ সালের disengagement চুক্তির স্পষ্ট লঙ্ঘন’।

পরিণাম ও বিশ্ব প্রতিক্রিয়া

জাতিসংঘ এবং আরব দেশগুলোর তীব্র নিন্দার মুখেও ইসরাইলি বাহিনী সিরিয়া ও লেবাননে তাদের অবস্থানকে অস্থায়ী দাবি করলেও ভবিষ্যতের জন্য প্রভাব বিস্তার অব্যাহত রাখার ইঙ্গিত দিয়েছে।

জাতিসংঘের পক্ষ থেকে জোর দাবি করা হয়েছে যে, শান্তিরক্ষীরা যেন তাদের নির্ধারিত কাজ নির্বিঘ্নে চালিয়ে যেতে পারে।

সূত্র: আনাদোলু

কেকে

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

জনপ্রিয় সংবাদ

অনলাইন স্ক্যাম ও জালিয়াতি প্রতিরোধে নতুন ফিচার আনল হোয়াটসঅ্যাপ

লেবানন থেকে দ্রুত সব ইসরাইলি সেনা প্রত্যাহারের আহ্বান জাতিসংঘের

আপডেট সময় : ০৯:১৬:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫

লেবানন ও ইসরাইলের মধ্যকার যুদ্ধবিরতিকে ‘নাজুক’ ও ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ বলে উল্লেখ করেছেন জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা কার্যক্রমের আন্ডার-সেক্রেটারি-জেনারেল জঁ-পিয়ের ল্যাক্রোয়া। পাশাপাশি তিনি ইসরাইলি সেনাবাহিনীকে লেবানন থেকে দ্রুত সরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

শনিবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে দেওয়া ভাষণে ল্যাক্রোয়া বলেন, ‘লেবানন এবং ইসরাইলের মধ্যে সংঘর্ষের সমাপ্তির জন্য একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি করা হয়েছে। যদিও এটি এখনো নাজুক ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। কারণ সেখানে সংঘর্ষ এখনো বহাল রয়েছে’।

ইসরাইলের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের অভিযোগ

তিনি বলেন, লেবানন সরকার যুদ্ধবিরতির চুক্তি রক্ষা করার অঙ্গীকার করেছে। তবে সেখানে ইসরাইলি সেনাবাহিনীর উপস্থিতি জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের রেজুলেশন ১৭০১-এর লঙ্ঘন।

ল্যাক্রোয়া জানান, ইসরাইলের সেনা প্রত্যাহার কার্যক্রমের ওপরেই সেখানে লেবাননের সশস্ত্র বাহিনীর (LAF) সদস্য মোতায়েন নির্ভর করছে।

তিনি আরও বলেন, ইসরাইলি বাহিনী অবৈধভাবে টানেল ধ্বংস, স্থাপনা গুঁড়িয়ে দেওয়া এবং কৃষিজমি ধ্বংস করে যাচ্ছে। এমনকি লেবাননের আকাশসীমায় ইসরাইলের অনবরত আক্রমণ ও যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘন অব্যাহত রয়েছে।

জাতিসংঘের এই শীর্ষ কর্মকর্তা সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘ঘোষণা অনুযায়ী, ইসরাইলি বাহিনীর উচিত এই ৬০ দিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই অবিলম্বে লেবাননের ভূখণ্ড ত্যাগ করা’।

ল্যাক্রোয়া এ সময় জাতিসংঘের ইউনিফিল (UNIFIL) কর্মীরা এখনো বাঙ্কারে আশ্রয় নিতে বাধ্য হচ্ছেন বলেও উল্লেখ করেন।

তিনি বলেন, অপারেশনের এলাকায় বিস্ফোরক বস্তু, ইসরাইলি সেনাদের সড়ক অবরোধ এবং স্থানীয়দের কাজে হস্তক্ষেপ তাদের কার্যক্রমকে ব্যাহত করছে।

গোলান মালভূমি ও সিরিয়ার পরিস্থিতি

এদিকে জাতিসংঘের ট্রুস সুপারভিশন অর্গানাইজেশন (UNTSO)-এর প্রধান প্যাট্রিক গাউচ্যাট জানান, ইসরাইলি সেনাবাহিনী গোলান মালভূমির নিরপেক্ষ অঞ্চল এবং লেবানন সীমান্তে নির্মাণ কাজ এবং টেলিযোগাযোগ সরঞ্জাম স্থাপন করছে। পাশাপাশি সিরিয়ার সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করে ইসরাইল তাদের বিমান হামলা আরও বাড়িয়েছে।

গাউচ্যাট বলেন, ‘ইসরাইলের এমন কার্যক্রম জাতিসংঘের ১৯৭৪ সালের disengagement চুক্তির স্পষ্ট লঙ্ঘন’।

পরিণাম ও বিশ্ব প্রতিক্রিয়া

জাতিসংঘ এবং আরব দেশগুলোর তীব্র নিন্দার মুখেও ইসরাইলি বাহিনী সিরিয়া ও লেবাননে তাদের অবস্থানকে অস্থায়ী দাবি করলেও ভবিষ্যতের জন্য প্রভাব বিস্তার অব্যাহত রাখার ইঙ্গিত দিয়েছে।

জাতিসংঘের পক্ষ থেকে জোর দাবি করা হয়েছে যে, শান্তিরক্ষীরা যেন তাদের নির্ধারিত কাজ নির্বিঘ্নে চালিয়ে যেতে পারে।

সূত্র: আনাদোলু

কেকে