ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার ১০৩নং পশ্চিম মনিকুড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মঙ্গলবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ১৯৯০ সালে স্থাপিত এই স্কুলে ৩টি শ্রেনীকক্ষ রয়েছে। তবে শ্রেণিকক্ষের বেঞ্চগুলো পড়ে আছে ফাঁকা, অপরিচ্ছন্ন ও ধুলোর আস্তর পড়ে আছে প্রতিটি রুমে। ৫ম শ্রেনীর ক্লাসরুমে করা হয়েছে অফিসকক্ষ। অফিস কক্ষও পড়ে আছে ফাঁকা।
রুমা আক্তার নামে একজন সহকারী শিক্ষিকা বিদ্যালয়ের সম্মুখ মাঠে পাটি বিছিয়ে রোদ পোহাচ্ছেন। ১ম শ্রেনীর রাতুল নামের ১জন শিক্ষার্থী এবং ৩-৪ বছর বয়সী আরও দুটি বাচ্চা ঘুরাফেরা করছে স্কুল মাঠে। তখন শিক্ষিকা রুমা আক্তারের কাছে জানতে চাইলে তিনি কোন উত্তর দিতে নারাজ। ঠিক এই সময়ই স্কুলে প্রবেশ করেন প্রধান শিক্ষিকা নাছিমা খাতুন ও সহকারী শিক্ষিকা জেসমিন সুলতানা। প্রধান শিক্ষিকার ফোন পেয়ে তার কিছুক্ষন পর আসেন সহকারী শিক্ষিকা সৈয়দা মাহফুজা বেগম।
নিয়ম অনুযায়ী, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছয়টি শ্রেণিতে সর্বনিম্ন ৫০ জন শিক্ষার্থী থাকার কথা থাকলেও ওই বিদ্যালয়ে ১জন শিক্ষার্থী রয়েছে। এমন চিত্র বিরাজমান অনেক বছর থেকে। কাগজপত্রে ছয়জন শিক্ষক থাকলেও তারা নিয়মিত স্কুলে আসেন না।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বিদ্যালয়ে কোন পড়ালেখা করানো হয় না। তাই অভিবাকরা এই স্কুলে কোন ছাত্র-ছাত্রী দেন না।
তখন এ বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষিকা জানান খাতায় ৭২ জন শিক্ষার্থী রয়েছেন তাদের। শিক্ষার্থীদের হাজিরা খাতা দেখতে চাইলে তারা তা দেখাতে পারেন নি। বিদ্যালয়ে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও দেখা মেলেনি শিক্ষার্থীদের। বাকী ২ জন শিক্ষকের কথা জানতে চাইলে তারা ছুটিতে রয়েছেন বলে জানান প্রধান শিক্ষিকা।
এ বিষয়ে বুধবার উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেলিমা আক্তার খাতুনকে বিষয়টি অবগত করলে তিনি তাৎক্ষনিক স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার সাথে ফোনে যোগাযোগ করে জানতে পারেন তিনি স্কুলের বাহিরে আছেন। তখন তিনি স্কুলে যিনি আছেন তার নম্বর সংগ্রহ করে তার ফোনে কতজন শিক্ষার্থী রয়েছে জানতে চাইলে, রুমা আক্তার বলেন স্কুলে মাত্র ১ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেলিমা আক্তার খাতুন ফোনে তদন্ত করে ১জন শিক্ষার্থী পাওয়ার পর বলেন বিদ্যালয়টির ব্যাপারে এর আগেও অভিযোগ পেয়েছিলাম। এবার আর ছাড় দেওয়া হবে না। অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সুমন আহম্মেদ