ঢাকা ০৩:০৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নামাজ ধরতে অজুর বদলে তায়াম্মুম করা যাবে?

প্রশ্ন: গত জুমার সকালে ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হই। রাস্তায় জ্যাম থাকার কারণে পৌঁছতে দেরি হয়। আমাদের গ্রামে পৌঁছে দেখি, জুমার নামাজ প্রায় শেষের দিকে। অজু করে আসতে আসতে ইমাম সালাম ফিরিয়ে ফেলেন। পরে আমি একাকি দুই রাকাত জুমার নামায আদায় করে নিই। জানার বিষয় হল- এমন ক্ষেত্রে জুমার জামাত পাওয়ার উদ্দেশ্যে তায়াম্মুম করার কি সুযোগ আছে?

উত্তর: জুমার নামাজ ছুটে যাওয়ার আশঙ্কা হলেও তায়াম্মুম করা সহিহ নয়; বরং অজু করাই জরুরি। অজু করে এসে জামাত না পাওয়া গেলে জোহর পড়তে হবে। জামাত ছুটে যাওয়ার আশঙ্কায় তায়াম্মুম করে জুমা পড়লে আদায় হবে না।

কেননা পানির ব্যবস্থা থাকলে অজু করতে গেলে নামাজ কাজা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলেও অজু করাই জরুরি; তায়াম্মুম করলে তায়াম্মুম সহিহ হয় না।

তবে জানাজা ও ঈদের নামাজের হুকুম এর থেকে ভিন্ন। এই দুই নামাজে কখনো যদি এমন হয় যে, অজু করতে গেলে জামাত ছুটে যাওয়ার আশঙ্কা হয় তাহলে তায়াম্মুম করা যাবে।

ইসলামে দৈহিক পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যম হলো অজু ও গোসল। পবিত্রতা ছাড়া নামাজের মতো গুরুত্বপূর্ণ ফরজ আদায় করা যায় না। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘তোমরা যদি অপবিত্র অবস্থায় থাকো, তবে নিজেদের শরীর (গোসলের মাধ্যমে) ভালোভাবে পবিত্র করে নাও।’ (সুরা মায়েদা: ৬)

এখন প্রশ্ন হলো, সব শর্ত মেনে গোসল করার পর নামাজের জন্য কি নতুন করে অজু করতে হবে? উত্তর হলো, না।

কারণ ফরজ ও সুন্নত তরিকায় গোসল করার পরে নতুন করে অজু করার প্রয়োজন পড়ে না । অথবা গোসল শেষে পেশাব পায়খানা করলে নতুন করে গোসলের প্রয়োজন নেই শুধু অজু করে নেওয়াই যথেষ্ট।

হাদিস শরিফ থেকে জানা যায়, রাসুল (সা.) গোসলের পর ওজু করতেন না। হজরত আয়শা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) গোসলের পর নতুন করে অজু করতেন না। (সুনানে নাসায়ি)।

তিরমিজি ও নাসায়ি শরিফের আরেকটি হাদিস থেকে জানা যায়, রাসুল (সা.) গোসলের আগে অজু করে নিতেন। এটাও হজরত আয়শা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবীজি (সা.) গোসলের আগে অজু করে নিতেন। গোসলের পর নতুন করে অজু করতে তাকে আমি দেখিনি।

সূত্র: কিতাবুল আছল ১/৩০৬; আলমাবসূত, সারাখসী ১/১১৯; বাদায়েউস সানায়ে ১/১৭৭; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাল মারাকী, পৃ. ৬৩

কেকে

ট্যাগস :

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

জনপ্রিয় সংবাদ

নামাজ ধরতে অজুর বদলে তায়াম্মুম করা যাবে?

আপডেট সময় : ০৯:৩৯:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ জুলাই ২০২৫

প্রশ্ন: গত জুমার সকালে ঢাকা থেকে বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হই। রাস্তায় জ্যাম থাকার কারণে পৌঁছতে দেরি হয়। আমাদের গ্রামে পৌঁছে দেখি, জুমার নামাজ প্রায় শেষের দিকে। অজু করে আসতে আসতে ইমাম সালাম ফিরিয়ে ফেলেন। পরে আমি একাকি দুই রাকাত জুমার নামায আদায় করে নিই। জানার বিষয় হল- এমন ক্ষেত্রে জুমার জামাত পাওয়ার উদ্দেশ্যে তায়াম্মুম করার কি সুযোগ আছে?

উত্তর: জুমার নামাজ ছুটে যাওয়ার আশঙ্কা হলেও তায়াম্মুম করা সহিহ নয়; বরং অজু করাই জরুরি। অজু করে এসে জামাত না পাওয়া গেলে জোহর পড়তে হবে। জামাত ছুটে যাওয়ার আশঙ্কায় তায়াম্মুম করে জুমা পড়লে আদায় হবে না।

কেননা পানির ব্যবস্থা থাকলে অজু করতে গেলে নামাজ কাজা হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকলেও অজু করাই জরুরি; তায়াম্মুম করলে তায়াম্মুম সহিহ হয় না।

তবে জানাজা ও ঈদের নামাজের হুকুম এর থেকে ভিন্ন। এই দুই নামাজে কখনো যদি এমন হয় যে, অজু করতে গেলে জামাত ছুটে যাওয়ার আশঙ্কা হয় তাহলে তায়াম্মুম করা যাবে।

ইসলামে দৈহিক পবিত্রতা অর্জনের মাধ্যম হলো অজু ও গোসল। পবিত্রতা ছাড়া নামাজের মতো গুরুত্বপূর্ণ ফরজ আদায় করা যায় না। পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘তোমরা যদি অপবিত্র অবস্থায় থাকো, তবে নিজেদের শরীর (গোসলের মাধ্যমে) ভালোভাবে পবিত্র করে নাও।’ (সুরা মায়েদা: ৬)

এখন প্রশ্ন হলো, সব শর্ত মেনে গোসল করার পর নামাজের জন্য কি নতুন করে অজু করতে হবে? উত্তর হলো, না।

কারণ ফরজ ও সুন্নত তরিকায় গোসল করার পরে নতুন করে অজু করার প্রয়োজন পড়ে না । অথবা গোসল শেষে পেশাব পায়খানা করলে নতুন করে গোসলের প্রয়োজন নেই শুধু অজু করে নেওয়াই যথেষ্ট।

হাদিস শরিফ থেকে জানা যায়, রাসুল (সা.) গোসলের পর ওজু করতেন না। হজরত আয়শা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) গোসলের পর নতুন করে অজু করতেন না। (সুনানে নাসায়ি)।

তিরমিজি ও নাসায়ি শরিফের আরেকটি হাদিস থেকে জানা যায়, রাসুল (সা.) গোসলের আগে অজু করে নিতেন। এটাও হজরত আয়শা (রা.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবীজি (সা.) গোসলের আগে অজু করে নিতেন। গোসলের পর নতুন করে অজু করতে তাকে আমি দেখিনি।

সূত্র: কিতাবুল আছল ১/৩০৬; আলমাবসূত, সারাখসী ১/১১৯; বাদায়েউস সানায়ে ১/১৭৭; হাশিয়াতুত তাহতাবী আলাল মারাকী, পৃ. ৬৩

কেকে