ঢাকা ০৪:৫৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
এইচএসসি পরীক্ষা কি পেছাবে? তজুমুদ্দিন উপজেলায় প্রাইমারি স্কুলের নিয়োগ বানিজ্যের সহযোগী সামিয়া গ্রেফতার অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা বকশীগঞ্জে বহাল তবিয়তে স্বৈরাচারের দোসর সোহানুর রহমান: জনমনে ক্ষোভ ও প্রতিরোধের ডাক বৈঠক শেষে তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে যা বললেন আমির খসরু কেয়ামত পর্যন্ত অপেক্ষা করলেও আবাসিকে নতুন গ্যাসের সম্ভাবনা নেই: জ্বালানি উপদেষ্টা সরকার আইসিটি খাতের টেকসই ভিত্তি গড়তে কাজ করছে: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক নিয়ে যা বললেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু আলোচনা স্থগিত করল ইরান শিক্ষার্থীদের জন্য ড্রাইভিং প্রশিক্ষন চালু করলো বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি

পানির ন্যায্য অধিকার না পেলে বাংলাদেশের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে: কাদের গনি চৌধুরী

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, ফারাক্কার বিরূপ প্রভাবে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিস্তীর্ণ জনপদের প্রাণ-প্রকৃতি, জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। পানির অভাবে মারা গেছে অনেক নদ-নদী। এখনো শতাধিক নদ-নদীর মরণদশা।

আজ শুক্রবার বিকালে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে মওলানা ভাসানীর ফারাক্কা লংমার্চ দিবস উপলক্ষ্যে আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি আইএফসি আয়োজিত গণসমাবেশে তিনি এসব বলেন।

বিশিষ্ট সাংবাদিক মোস্তফা কামাল মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।

আলোচনায় অংশ নেন- কমরেড খালেকুজ্জামান, টিপু বিশ্বাস, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর ড. জসিম উদ্দিন আহমেদ, সৈয়দ টিপু সুলতান, রফিকুল ইসলাম বাবলু, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বিএনপি নেতা মীর সরাফত আলী সপু প্রমুখ।

কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ফারাক্কার প্রভাবে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর দ্রুত নিচে নেমে যাচ্ছে। বেড়ে যাচ্ছে কৃষি উৎপাদনের খরচ। ফারাক্কা বাঁধের বিরূপ প্রভাবে দেশের অন্তত ছয় কোটি মানুষ সেচ সংকটে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গঙ্গা-পদ্মার প্রায় দুই হাজার কিলোমিটার নৌপথ অকার্যকর হয়ে পড়েছে। লবণাক্ততার কারণে খুলনা অঞ্চলে ধান উৎপাদন কমে গেছে। সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে।

তাছাড়া উজানের পানির অভাবে সাগর থেকে আসা লোনা পানি ক্রমেই উত্তরের জমি গ্রাস করছে। সুপেয় পানির অভাবে উপকূলীয় এলাকা ছাড়ছে মানুষ। লাখো মানুষ অবর্ণনীয় কষ্টে জীবন কাটাচ্ছে। জলবায়ু হয়ে উঠছে চরমভাবাপন্ন।

রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের পরিস্থিতি উল্লেখ করে কাদের গনি বলেন, গঙ্গার আয়তন অর্ধেকে নেমে এসেছে। পানির প্রবাহ কমে যাওয়ায় নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাচ্ছে, জলজ প্রাণী বিলুপ্ত হচ্ছে। পানি নেই বলে ইলিশ আর আসে না, ডলফিন আর ঘড়িয়াল বিলুপ্তপ্রায়। পাশাপাশি হারিয়ে গেছে দেশিয় প্রজাতির মাছ ও জলজ প্রাণী। সুন্দরবনের অস্তিত্বই আজ হুমকির মুখে।

কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ভারত উজানের রাষ্ট্র হিসেবে ভাটির দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে সৎ প্রতিবেশী হিসেবে আচরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফারাক্কা সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ সরকারগুলো টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের পক্ষে দেশের স্বার্থবিরোধী ওকালতি করেছে। ফারাক্কা, টিপাইমুখসহ ভারতের অব্যাহত পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই।

পানি বিষয়ে ভারতের সকল সরকারই সকল সময় আশ্বাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল এবং আছে। তাদের কোনো আশ্বাসের বাস্তবায়ন বাংলাদেশের মানুষ দেখতে পায় নাই গত ৫০ বছরেও। ভারতের নিকেট থেকে পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করতে হলে প্রয়োজন মওলানা ভাসানী ও শহিদ জিয়ার মতো নেতৃত্ব। মরণবাঁধ ফারাক্কার কারণে আজ বাংলাদেশের এক-তৃতীয়াংশ মরুভূমিতে পরিণত হতে বসেছে। ভারতের এই পানি নিয়ে অপরাজনীতি বন্ধ করতে বাধ্য করতে হবে।

তিনি বলেন, ভারতের কাছ থেকে অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় কোনো দলীয় বিষয় নয়। এটা দেশের মানুষের বাঁচা-মরার বিষয়। পানির ন্যায্য অধিকার না পেলে বাংলাদেশের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে। এ অবস্থায় পানির অধিকার আদায়ে আন্তর্জাতিক ফোরামে আলোচনার ব্যবস্থা করতে হবে। দেশের অভ্যন্তরে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, প্রয়োজনে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

কেকে

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

জনপ্রিয় সংবাদ

এইচএসসি পরীক্ষা কি পেছাবে?

পানির ন্যায্য অধিকার না পেলে বাংলাদেশের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে: কাদের গনি চৌধুরী

আপডেট সময় : ০৯:৫৪:৪০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী বলেছেন, ফারাক্কার বিরূপ প্রভাবে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিস্তীর্ণ জনপদের প্রাণ-প্রকৃতি, জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। পানির অভাবে মারা গেছে অনেক নদ-নদী। এখনো শতাধিক নদ-নদীর মরণদশা।

আজ শুক্রবার বিকালে কেন্দ্রীয় শহিদ মিনারে মওলানা ভাসানীর ফারাক্কা লংমার্চ দিবস উপলক্ষ্যে আন্তর্জাতিক ফারাক্কা কমিটি আইএফসি আয়োজিত গণসমাবেশে তিনি এসব বলেন।

বিশিষ্ট সাংবাদিক মোস্তফা কামাল মজুমদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সাবেক মন্ত্রী ও বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান।

আলোচনায় অংশ নেন- কমরেড খালেকুজ্জামান, টিপু বিশ্বাস, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর ড. জসিম উদ্দিন আহমেদ, সৈয়দ টিপু সুলতান, রফিকুল ইসলাম বাবলু, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরান, বিএনপি নেতা মীর সরাফত আলী সপু প্রমুখ।

কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ফারাক্কার প্রভাবে ভূগর্ভস্থ পানির স্তর দ্রুত নিচে নেমে যাচ্ছে। বেড়ে যাচ্ছে কৃষি উৎপাদনের খরচ। ফারাক্কা বাঁধের বিরূপ প্রভাবে দেশের অন্তত ছয় কোটি মানুষ সেচ সংকটে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। গঙ্গা-পদ্মার প্রায় দুই হাজার কিলোমিটার নৌপথ অকার্যকর হয়ে পড়েছে। লবণাক্ততার কারণে খুলনা অঞ্চলে ধান উৎপাদন কমে গেছে। সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে।

তাছাড়া উজানের পানির অভাবে সাগর থেকে আসা লোনা পানি ক্রমেই উত্তরের জমি গ্রাস করছে। সুপেয় পানির অভাবে উপকূলীয় এলাকা ছাড়ছে মানুষ। লাখো মানুষ অবর্ণনীয় কষ্টে জীবন কাটাচ্ছে। জলবায়ু হয়ে উঠছে চরমভাবাপন্ন।

রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের পরিস্থিতি উল্লেখ করে কাদের গনি বলেন, গঙ্গার আয়তন অর্ধেকে নেমে এসেছে। পানির প্রবাহ কমে যাওয়ায় নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে যাচ্ছে, জলজ প্রাণী বিলুপ্ত হচ্ছে। পানি নেই বলে ইলিশ আর আসে না, ডলফিন আর ঘড়িয়াল বিলুপ্তপ্রায়। পাশাপাশি হারিয়ে গেছে দেশিয় প্রজাতির মাছ ও জলজ প্রাণী। সুন্দরবনের অস্তিত্বই আজ হুমকির মুখে।

কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ভারত উজানের রাষ্ট্র হিসেবে ভাটির দেশ বাংলাদেশের সঙ্গে সৎ প্রতিবেশী হিসেবে আচরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফারাক্কা সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ সরকারগুলো টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের পক্ষে দেশের স্বার্থবিরোধী ওকালতি করেছে। ফারাক্কা, টিপাইমুখসহ ভারতের অব্যাহত পানি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার কোনো বিকল্প নেই।

পানি বিষয়ে ভারতের সকল সরকারই সকল সময় আশ্বাসের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল এবং আছে। তাদের কোনো আশ্বাসের বাস্তবায়ন বাংলাদেশের মানুষ দেখতে পায় নাই গত ৫০ বছরেও। ভারতের নিকেট থেকে পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় করতে হলে প্রয়োজন মওলানা ভাসানী ও শহিদ জিয়ার মতো নেতৃত্ব। মরণবাঁধ ফারাক্কার কারণে আজ বাংলাদেশের এক-তৃতীয়াংশ মরুভূমিতে পরিণত হতে বসেছে। ভারতের এই পানি নিয়ে অপরাজনীতি বন্ধ করতে বাধ্য করতে হবে।

তিনি বলেন, ভারতের কাছ থেকে অভিন্ন নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায় কোনো দলীয় বিষয় নয়। এটা দেশের মানুষের বাঁচা-মরার বিষয়। পানির ন্যায্য অধিকার না পেলে বাংলাদেশের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়বে। এ অবস্থায় পানির অধিকার আদায়ে আন্তর্জাতিক ফোরামে আলোচনার ব্যবস্থা করতে হবে। দেশের অভ্যন্তরে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে, প্রয়োজনে আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

কেকে