ঢাকা ০৬:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
এইচএসসি পরীক্ষা কি পেছাবে? তজুমুদ্দিন উপজেলায় প্রাইমারি স্কুলের নিয়োগ বানিজ্যের সহযোগী সামিয়া গ্রেফতার অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন দক্ষিণ আফ্রিকা বকশীগঞ্জে বহাল তবিয়তে স্বৈরাচারের দোসর সোহানুর রহমান: জনমনে ক্ষোভ ও প্রতিরোধের ডাক বৈঠক শেষে তারেক রহমানের দেশে ফেরা নিয়ে যা বললেন আমির খসরু কেয়ামত পর্যন্ত অপেক্ষা করলেও আবাসিকে নতুন গ্যাসের সম্ভাবনা নেই: জ্বালানি উপদেষ্টা সরকার আইসিটি খাতের টেকসই ভিত্তি গড়তে কাজ করছে: ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠক নিয়ে যা বললেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু আলোচনা স্থগিত করল ইরান শিক্ষার্থীদের জন্য ড্রাইভিং প্রশিক্ষন চালু করলো বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি

দুই সপ্তাহে বিশ্ববাজারে সোনার দাম সর্বনিম্ন

ছবি : সংগৃহীত

সম্প্রতি বিশ্বব্যাপী অর্থবাজারে সোনার দামে ‘ঝাঁকুনি’ লেগেছিল। তবে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সর্বনিম্ন অবস্থানে পৌঁছেছে মূল্যবান ধাতুটি। বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্কিন প্রশাসনের কাছ থেকে বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের আশা এবং ডলারের শক্তিশালী অবস্থান সোনার দামের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে।

বৃহস্পতিবার (১ মে) প্রায় ২ শতাংশ কমে প্রতি আউন্স সোনা এখন ৩ হাজার ২২২ দশমিক ৬৬ ডলার। যা ১৫ এপ্রিলের পর থেকে সর্বনিম্ন। একই সময়ে মার্কিন সোনার ফিউচারও ২ দশমিক ৭ শতাংশ কমে ৩ হাজার ২৩০ দশমিক ৮০ ডলার হয়েছে।

এদিকে ডলার ইনডেক্স শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে যাওয়ায় ডলার-মূলক সোনা আন্তর্জাতিক বাজারে আরও ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে।

অন্যদিকে স্পট সিলভারের দাম ১ দশমিক ৮ শতাংশ কমে প্রতি আউন্স দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ৯৯ ডলারে, প্লাটিনাম ১ শতাংশ হ্রাস পেয়ে হয়েছে ৯৫৬ দশমিক ৬৩ ডলার এবং প্যালাডিয়াম শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে ৯৪১ দশমিক ১০ ডলার। এক প্রতিবেদনে এসব খবর জানিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ইউবিএস বিশ্লেষক জিওভান্নি স্টাউনোভো জানান, বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা এবং শক্তিশালী ডলার সোনার ওপর প্রভাব ফেলছে।

গতকাল বুধবার (৩০ এপ্রিল) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ভারত, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা দেখছেন এবং চীনসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গেও চুক্তি করার জন্য আলোচনা করছেন। তার এই মন্তব্যের ফলে বাজারে কিছুটা আশাবাদ তৈরি হয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ঝুঁকি নেওয়ার আগ্রহ বাড়িয়েছে।

এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম ত্রৈমাসিকের অর্থনৈতিক সংকোচন নতুন উদ্বেগ তৈরি করেছে। ব্যবসায়ীরা শুল্ক বাড়ানোর সম্ভাবনা থেকে বাঁচতে আগেভাগে আমদানি বাড়িয়েছে। ফলে অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছে। তবে ফেডারেল রিজার্ভের নীতিনির্ধারকরা বলেছেন যে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে না আসা বা শ্রমবাজারে অবনতির স্পষ্ট লক্ষণ না পাওয়া পর্যন্ত সুদের হার অপরিবর্তিত রাখা হবে।

বিশ্ববাজারে সোনার দাম যখন ৩ হাজার ৫০০ ডলারের কাছাকাছি পৌঁছেছিল, তখন কিছুটা পতন ঘটলেও বিশেষজ্ঞরা ভবিষ্যতে স্বর্ণের দাম পুনরায় বাড়ার সম্ভাবনা দেখছেন। যদি মুদ্রাস্ফীতি বাড়ে এবং শ্রমবাজারে সংকট দেখা দেয়, তবে সোনার দাম আবারও নতুন উচ্চতায় পৌঁছাতে পারে।

বিনিয়োগকারীরা এখন শুক্রবারের (২ মে) ননফার্ম পেরোলস রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছেন, যা ফেডের সুদের হারের নীতির ভবিষ্যৎ দিশা নিয়ে আরও স্পষ্ট ধারণা প্রদান করবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি দুর্বল রিপোর্ট ফেডকে সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে উৎসাহিত করতে পারে, যা স্বর্ণের দামকে আরও সহায়ক করবে।

রয়টার্সের সর্বশেষ জরিপে দেখা গেছে, ২০২৫ সালে প্রথমবারের মতো সোনার বার্ষিক গড় মূল্য ৩ হাজার ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। বিশ্লেষকরা আশাবাদী, যদি ফেড সুদের হার কমাতে বাধ্য হয় এবং বাণিজ্য উত্তেজনা আবার বাড়ে, তাহলে স্বর্ণ আবার ৩ হাজার ৫০০ ডলার পর্যন্ত ফিরে যেতে পারে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সামগ্রিকভাবে এই পরিবর্তনগুলি সোনার ভবিষ্যৎ মূল্যবৃদ্ধির সম্ভাবনা জানান দিতে পারে, যদি মার্কিন অর্থনীতি বা বৈশ্বিক বাণিজ্য পরিস্থিতি অনুকূল থাকে।

কেকে

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

জনপ্রিয় সংবাদ

এইচএসসি পরীক্ষা কি পেছাবে?

দুই সপ্তাহে বিশ্ববাজারে সোনার দাম সর্বনিম্ন

আপডেট সময় : ০৯:২২:০৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১ মে ২০২৫

সম্প্রতি বিশ্বব্যাপী অর্থবাজারে সোনার দামে ‘ঝাঁকুনি’ লেগেছিল। তবে দুই সপ্তাহের ব্যবধানে সর্বনিম্ন অবস্থানে পৌঁছেছে মূল্যবান ধাতুটি। বিশ্লেষকরা বলছেন, মার্কিন প্রশাসনের কাছ থেকে বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের আশা এবং ডলারের শক্তিশালী অবস্থান সোনার দামের ওপর চাপ সৃষ্টি করেছে।

বৃহস্পতিবার (১ মে) প্রায় ২ শতাংশ কমে প্রতি আউন্স সোনা এখন ৩ হাজার ২২২ দশমিক ৬৬ ডলার। যা ১৫ এপ্রিলের পর থেকে সর্বনিম্ন। একই সময়ে মার্কিন সোনার ফিউচারও ২ দশমিক ৭ শতাংশ কমে ৩ হাজার ২৩০ দশমিক ৮০ ডলার হয়েছে।

এদিকে ডলার ইনডেক্স শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে যাওয়ায় ডলার-মূলক সোনা আন্তর্জাতিক বাজারে আরও ব্যয়বহুল হয়ে উঠেছে।

অন্যদিকে স্পট সিলভারের দাম ১ দশমিক ৮ শতাংশ কমে প্রতি আউন্স দাঁড়িয়েছে ৩১ দশমিক ৯৯ ডলারে, প্লাটিনাম ১ শতাংশ হ্রাস পেয়ে হয়েছে ৯৫৬ দশমিক ৬৩ ডলার এবং প্যালাডিয়াম শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে ৯৪১ দশমিক ১০ ডলার। এক প্রতিবেদনে এসব খবর জানিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।

ইউবিএস বিশ্লেষক জিওভান্নি স্টাউনোভো জানান, বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা এবং শক্তিশালী ডলার সোনার ওপর প্রভাব ফেলছে।

গতকাল বুধবার (৩০ এপ্রিল) মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ভারত, জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা দেখছেন এবং চীনসহ অন্যান্য দেশের সঙ্গেও চুক্তি করার জন্য আলোচনা করছেন। তার এই মন্তব্যের ফলে বাজারে কিছুটা আশাবাদ তৈরি হয়েছে, যা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ঝুঁকি নেওয়ার আগ্রহ বাড়িয়েছে।

এদিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম ত্রৈমাসিকের অর্থনৈতিক সংকোচন নতুন উদ্বেগ তৈরি করেছে। ব্যবসায়ীরা শুল্ক বাড়ানোর সম্ভাবনা থেকে বাঁচতে আগেভাগে আমদানি বাড়িয়েছে। ফলে অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছে। তবে ফেডারেল রিজার্ভের নীতিনির্ধারকরা বলেছেন যে মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে না আসা বা শ্রমবাজারে অবনতির স্পষ্ট লক্ষণ না পাওয়া পর্যন্ত সুদের হার অপরিবর্তিত রাখা হবে।

বিশ্ববাজারে সোনার দাম যখন ৩ হাজার ৫০০ ডলারের কাছাকাছি পৌঁছেছিল, তখন কিছুটা পতন ঘটলেও বিশেষজ্ঞরা ভবিষ্যতে স্বর্ণের দাম পুনরায় বাড়ার সম্ভাবনা দেখছেন। যদি মুদ্রাস্ফীতি বাড়ে এবং শ্রমবাজারে সংকট দেখা দেয়, তবে সোনার দাম আবারও নতুন উচ্চতায় পৌঁছাতে পারে।

বিনিয়োগকারীরা এখন শুক্রবারের (২ মে) ননফার্ম পেরোলস রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করছেন, যা ফেডের সুদের হারের নীতির ভবিষ্যৎ দিশা নিয়ে আরও স্পষ্ট ধারণা প্রদান করবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি দুর্বল রিপোর্ট ফেডকে সুদের হার কমানোর সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে উৎসাহিত করতে পারে, যা স্বর্ণের দামকে আরও সহায়ক করবে।

রয়টার্সের সর্বশেষ জরিপে দেখা গেছে, ২০২৫ সালে প্রথমবারের মতো সোনার বার্ষিক গড় মূল্য ৩ হাজার ডলার ছাড়িয়ে যেতে পারে। বিশ্লেষকরা আশাবাদী, যদি ফেড সুদের হার কমাতে বাধ্য হয় এবং বাণিজ্য উত্তেজনা আবার বাড়ে, তাহলে স্বর্ণ আবার ৩ হাজার ৫০০ ডলার পর্যন্ত ফিরে যেতে পারে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, সামগ্রিকভাবে এই পরিবর্তনগুলি সোনার ভবিষ্যৎ মূল্যবৃদ্ধির সম্ভাবনা জানান দিতে পারে, যদি মার্কিন অর্থনীতি বা বৈশ্বিক বাণিজ্য পরিস্থিতি অনুকূল থাকে।

কেকে