বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য যুদ্ধের কোনো অভিপ্রায় ভারতের নেই— এমনটাই জানিয়েছে নয়াদিল্লি। যদিও সম্প্রতি বাংলাদেশের দিক থেকে বাণিজ্যিক বার্তা প্রদান খুব একটা ইতিবাচক নয় বলেই মনে করছে ভারতীয় কূটনৈতিক মহল।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ভারতের সঙ্গে স্থলসীমান্ত দিয়ে সুতা আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। তবে ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশকে দেওয়া ২০২০ সালের ট্রান্স-শিপমেন্ট সুবিধা প্রত্যাহার করা হয়েছে শুধু ভারতীয় বন্দর ও বিমানবন্দরগুলোর ভিড় কমানোর জন্য।
ভারত স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, এই পদক্ষেপের ফলে বাংলাদেশ থেকে নেপাল ও ভুটানের উদ্দেশে ভারতের ভূখণ্ড দিয়ে যে রপ্তানি চলে, তা কোনোভাবেই প্রভাবিত হবে না।
সম্প্রতি ব্যাংককে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইউনুসের বৈঠকে মোদী আহ্বান জানান, যেন উস্কানিমূলক বক্তব্য ও সিদ্ধান্ত এড়িয়ে চলা হয় যাতে দুই দেশের সম্পর্কের পরিবেশ নষ্ট না হয়।
ভারতের মতে, ট্রান্স-শিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের আগেই বাংলাদেশ বেশ কয়েকটি পদক্ষেপ নিয়েছে যা বাণিজ্য সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে পারে। মার্চ মাসে বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে তিনটি স্থলবন্দর বন্ধ করে এবং ভারতীয় সুতা আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়। তারও আগে জানুয়ারিতে বেনাপোল কাস্টমসে নজরদারি আরও কড়া করা হয়, যা ভারতীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে একটি সীমাবদ্ধতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত।
বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানিকারকরা ইতিমধ্যে সরকারকে সতর্ক করে বলেছেন, ভারত থেকে সুতা আমদানি বন্ধ করা হলে তা দেশের তৈরি পোশাক খাতের জন্য আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত হবে।
এই সময়ে বাংলাদেশ যখন ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যে কঠোরতা দেখাচ্ছে, তখন আবার পাকিস্তানের সঙ্গে সরাসরি বাণিজ্যিক সম্পর্ক পুনরায় শুরু করেছে ঢাকা। ফেব্রুয়ারিতে পাকিস্তানের ট্রেডিং কর্পোরেশন (টিসিপি) থেকে ৫০ হাজার টন চাল কিনতে সম্মত হয়েছে বাংলাদেশ।
এদিকে, বাংলাদেশে ক্রমবর্ধমান উগ্রপন্থার খবরের মাঝে পাকিস্তানের সঙ্গে ঢাকার ঘনিষ্ঠতা নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে ভারতের জন্য। ইসলামাবাদকে ভারত বরাবরই বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদের উৎস হিসেবে দেখে এসেছে।
জানা গেছে, পাকিস্তান বাংলাদেশে তাদের রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণের চেষ্টা করছে। কয়েক দশক পর পাকিস্তান ও বাংলাদেশের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের কূটনৈতিক সম্পর্কও আবার সচল হয়েছে। পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব আমনা বালুচ বৃহস্পতিবার ঢাকা সফরে আসছেন এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইশহাক দার আগামী সপ্তাহে আসবেন।