বিপ্লব হাসান হৃদয়, জেলা প্রতিনিধি শরীয়তপুরঃ
শরীয়তপুরের সদর উপজেলার বিনোদপুর ইউনিয়নের কাজিকান্দি এলাকায় ছেলে-মেয়ের বিয়ের দাওয়াত নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ৮ জন আহত হয়েছেন। গত মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) রাতে ইমামুল হক সরদার ওরফে (এনামুল) এবং আজিজুল হক সরদারের সমর্থকদের মধ্যে এই সংঘর্ষ হয়।
সংঘর্ষের কারণ
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গত ৮ ফেব্রুয়ারি এনামুল হক সরদারের মেয়ের বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু তিনি তার আপন ছোট ভাই আজিজুল সরদারের পরিবারকে দাওয়াত দেননি। প্রতিশোধ হিসেবে আজিজুল সরদারও তার ছেলের বিয়েতে এনামুলের পরিবারকে দাওয়াত না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।
এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এনামুল সরদারের সমর্থকরা দেশীয় অস্ত্র, রামদা, বাঁশ ও লাঠি নিয়ে আজিজুল সরদারের বাড়িতে হামলা চালায়। সংঘর্ষের সময় ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে।
আহতদের তালিকা ও চিকিৎসা
সংঘর্ষে অন্তত ৮ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে ৪ জন শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে ভর্তি আছেন। বাকিরা স্থানীয় বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। গুরুতর আহত সামসুল হক সরদারকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আহতদের মধ্যে রয়েছেন—
ইউপি সদস্য আব্দুর রহমান কাজী (৫০)
সাবেক ইউপি সদস্য মনোয়ার কাজী (৩২)
বোরহান কাজী (৫০)
আজিজুল সরদার (৫০)
প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয়দের বক্তব্য
আহত ইউপি সদস্য আব্দুর রহমান কাজী বলেন, “এনামুল সরদার ও খলিল মাদবরের নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে ককটেল বিস্ফোরণ করা হয়। আমাদের কয়েকজনকে কুপিয়ে আহত করা হয়েছে। আমরা দাওয়াত দিতে চাইলেও তারা আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।”
অন্যদিকে, এনামুল সরদারের পক্ষে তার বড় ভাই সামসুল হক সরদার জানান, “আমি সামনে ইউপি নির্বাচন করব। সংঘর্ষ থামাতে গেলে আমার ওপর হামলা হয়। আমার মাথা ও হাতে আঘাত লেগেছে। আমি বা আমার সমর্থকরা কোনো হামলা চালাইনি।”
পুলিশ ও চিকিৎসকদের বক্তব্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. আব্দুর রশিদ জানান, সংঘর্ষের ঘটনায় হাসপাতালে ৪ জন ভর্তি আছেন এবং গুরুতর আহত সামসুল হক সরদারকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আহতদের শরীরে ধারালো অস্ত্র ও লাঠির আঘাতের চিহ্ন রয়েছে।
স্থানীয়দের মতে, দুই ভাইয়ের মধ্যে জমি সংক্রান্ত পুরনো বিরোধও এই সংঘর্ষের একটি অন্যতম কারণ হতে পারে। পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছে।
এমএস