ঢাকা ০৩:১২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৯ জুন ২০২৫, ২৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
শিক্ষার্থীদের জন্য ড্রাইভিং প্রশিক্ষন চালু করলো বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি ১২০০ বস্তা চাল নিয়ে গুজব ছড়ানো হয়েছে: উপদেষ্টা আসিফ বাসে ওঠার সময় যাত্রীদের ছবি তুলে রাখা হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ পর্যালোচনায় কমিটি হচ্ছে : আইন উপদেষ্টা ফারুকের মনোনয়ন বাতিল ও আমিনুলের মনোনয়ন কেন অবৈধ নয়: হাইকোর্ট সেপ্টেম্বর নাগাদ মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নামবে : গভর্নর বিভিন্ন দেশের ভিসা বন্ধ হওয়ার জন্য দেশের মানুষ ও ব্যবসায়ীরাই দায়ী: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আমরা ক্ষমতা নেইনি, দায়িত্ব নিয়েছি: অর্থ উপদেষ্টা নতুন চুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নিশ্চয়তা চায় ইরান মনপুরায় ভিজিএফ চাউলের চুরি ধরা পরায় সাংবাদিকদের হুমকি ওয়ার্ড মেম্বারের

হেঁচকি কেন উঠে? থামানোর উপায় কী?

ছবিঃ সংগৃহীত

খাবার খাওয়ার সময়, গুরুত্বপূর্ণ কোনো কাজের মধ্যে অথবা অবসর কাটানোর সময় হঠাৎ হেঁচকির প্রকোপ শুরু হওয়াটা খুব সাধারণ একটি বিষয়।

এমনকি কোনো কারণ ছাড়াই যখন তখন মানুষের হেঁচকি শুরু হলে তা নিয়ে অবাক হওয়ার কিছু নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিপাকতন্ত্রের গোলমালের কারণেই মানুষের হেঁচকি আসে।

মানুষের হেঁচকি আসে কেন?

বিজ্ঞানীরা শত শত বছর ধরে আপাতদৃষ্টিতে ক্ষতিহীন এই শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যার সুনির্দিষ্ট কারণ খোঁজার চেষ্টা করেছেন।

হেঁচকির সময় শ্বাসনালীতে সামান্য খিঁচুনির মত হয় যার ফলে শ্বাসযন্ত্রে দ্রুত বাতাস প্রবেশ করে। তখন ভোকাল কর্ড হঠাৎ বন্ধ হয়ে ‘হিক’ শব্দ তৈরি হয়। ফুসফুসের নীচের পাতলা মাংসপেশীর স্তর, যেটিকে ডায়াফ্রাম বলে, হঠাৎ সংকোচনের ফলেই হেঁচকি তৈরি হয়।

হেঁচকি ওঠার একশো’র বেশি মেডিক্যাল কারণ থাকতে পারে, তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেগুলো খুবই সামান্য কারণেই হয়ে থাকে।

ওষুধ নির্মাতা সংস্থা অ্যাকমের সিনিয়র ম্যানেজার ও চিকিৎসক আফরোজা আখতার বলেন, হেঁচকির সবচেয়ে সাধারণ কারণ দ্রুত খাবার গ্রহণ করা।

দ্রুত খাওয়ার কারণে খাবারের সঙ্গে সঙ্গে পেটের ভেতর বাতাস প্রবেশ করার কারণে ‘ভ্যাগাস’ নার্ভের কার্যকলাপ বাধাগ্রস্ত হয়, ফলে হেঁচকি তৈরি হয়।

চেতনানাশক, উত্তেজনাবর্ধক, পার্কিনসন্স রোগ বা কেমোথেরাপির বিভিন্ন ধরণের ওষুধ নেয়ার ফলেও হেঁচকি তৈরি হতে পারে। এছাড়া কিছু অসুখের ক্ষেত্রেও মানুষের হেঁচকি হতে পারে।

আখতার বলেন, কিডনি ফেল করলে, স্ট্রোকের ক্ষেত্রে, মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস বা মেনিনজাইটিসের ক্ষেত্রেও অনেকের হেঁচকি তৈরি হতে পারে। কিন্তু অধিকাংশ সময়ই হেঁচকি শুরু হওয়ার জন্য এসব কোনো কারণেরই দরকার হয় না।

হাসি বা কাশির মধ্যে, অতিরিক্ত মদ্যপান, অতিদ্রুত খাবার গ্রহণ করা বা ঝাঁঝসহ পানীয় বেশি পরিমাণে খেলে হেঁচকি শুরু হতে পারে, তবে কোনো ধরণের কারণ ছাড়াও হেঁচকি আসাটা একেবারেই অস্বাভাবিক কোনো বিষয় নয়।

হেঁচকি ওঠাটা খুবই স্বাভাবিক একটি ঘটনা এবং সাধারণত মিনিটখানেকের মধ্যেই তা স্বাভাবিক পর্যায়ে পৌঁছে যায়। তবে অতিরিক্ত মাত্রায় হেঁচকির উদাহরণও কিন্তু রয়েছে। যেমন সবচেয়ে বেশি সময় ধরে হেঁচকি ওঠার বিশ্ব রেকর্ডের উদাহরণ হিসেবে মনে করা হয় যুক্তরাষ্ট্রের চার্লস অসবোর্নের ঘটনাকে।

১৯২২ সালে হেঁচকি তোলা শুরু করেন তিনি, কথিত আছে সেসময় তিনি একটি শূকর ওজন করার চেষ্টা করছিলেন। অসবোর্ন হেঁচকি তোলা থামান ১৯৯০ সালের ফেব্রুয়ারিতে – মোট ৬৮ বছর পর।

হেঁচকি থামানোর উপায়ঃ

১. শ্বাস নিয়ে যতক্ষণ পারা যায় বন্ধ রেখে আস্তে আস্তে প্রশ্বাস ছাড়তে হবে। এটা করতে হবে বেশ কয়েকবার। বিরতি দিয়ে প্রয়োজনে বারবার করতে হবে।

২. কাগজের ব্যাগ দিয়ে মাথা ও মুখ ঢেকে শ্বাস নিতে হবে এবং ছাড়তে হবে একাধারে বেশ কয়েকবার। তবে সাবধান, পলিথিনের ব্যাগ ব্যবহার করবেন না।

৩. নাক–মুখ বন্ধ রেখে নিশ্বাস ফেলতে চেষ্টা করুন, এটাকে ভালসালভা মেনুভার বলা হয়। কয়েকবার করুন।

৪. ঠান্ডা পানি পান করতে পারেন।

৫. গরম দুধ পান করতে পারেন।

৬. এক চামচ চিনি জিবে নিয়ে সামান্য সময় পর গিলে খাওয়ার চেষ্টা করুন।

৭. নাক চেপে ধরে পানি পান করতে পারেন।

৮. গরম পানি দিয়ে গোসল করে দেখতে পারেন।

দুই দিনের মধ্যে হেঁচকি চলে না গেলে পরিপাকতন্ত্র ও লিভার বিশেষজ্ঞ অথবা মেডিসিন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা

কেকে

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

জনপ্রিয় সংবাদ

শিক্ষার্থীদের জন্য ড্রাইভিং প্রশিক্ষন চালু করলো বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি

হেঁচকি কেন উঠে? থামানোর উপায় কী?

আপডেট সময় : ০৩:২২:৫০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪

খাবার খাওয়ার সময়, গুরুত্বপূর্ণ কোনো কাজের মধ্যে অথবা অবসর কাটানোর সময় হঠাৎ হেঁচকির প্রকোপ শুরু হওয়াটা খুব সাধারণ একটি বিষয়।

এমনকি কোনো কারণ ছাড়াই যখন তখন মানুষের হেঁচকি শুরু হলে তা নিয়ে অবাক হওয়ার কিছু নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, পরিপাকতন্ত্রের গোলমালের কারণেই মানুষের হেঁচকি আসে।

মানুষের হেঁচকি আসে কেন?

বিজ্ঞানীরা শত শত বছর ধরে আপাতদৃষ্টিতে ক্ষতিহীন এই শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত সমস্যার সুনির্দিষ্ট কারণ খোঁজার চেষ্টা করেছেন।

হেঁচকির সময় শ্বাসনালীতে সামান্য খিঁচুনির মত হয় যার ফলে শ্বাসযন্ত্রে দ্রুত বাতাস প্রবেশ করে। তখন ভোকাল কর্ড হঠাৎ বন্ধ হয়ে ‘হিক’ শব্দ তৈরি হয়। ফুসফুসের নীচের পাতলা মাংসপেশীর স্তর, যেটিকে ডায়াফ্রাম বলে, হঠাৎ সংকোচনের ফলেই হেঁচকি তৈরি হয়।

হেঁচকি ওঠার একশো’র বেশি মেডিক্যাল কারণ থাকতে পারে, তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেগুলো খুবই সামান্য কারণেই হয়ে থাকে।

ওষুধ নির্মাতা সংস্থা অ্যাকমের সিনিয়র ম্যানেজার ও চিকিৎসক আফরোজা আখতার বলেন, হেঁচকির সবচেয়ে সাধারণ কারণ দ্রুত খাবার গ্রহণ করা।

দ্রুত খাওয়ার কারণে খাবারের সঙ্গে সঙ্গে পেটের ভেতর বাতাস প্রবেশ করার কারণে ‘ভ্যাগাস’ নার্ভের কার্যকলাপ বাধাগ্রস্ত হয়, ফলে হেঁচকি তৈরি হয়।

চেতনানাশক, উত্তেজনাবর্ধক, পার্কিনসন্স রোগ বা কেমোথেরাপির বিভিন্ন ধরণের ওষুধ নেয়ার ফলেও হেঁচকি তৈরি হতে পারে। এছাড়া কিছু অসুখের ক্ষেত্রেও মানুষের হেঁচকি হতে পারে।

আখতার বলেন, কিডনি ফেল করলে, স্ট্রোকের ক্ষেত্রে, মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস বা মেনিনজাইটিসের ক্ষেত্রেও অনেকের হেঁচকি তৈরি হতে পারে। কিন্তু অধিকাংশ সময়ই হেঁচকি শুরু হওয়ার জন্য এসব কোনো কারণেরই দরকার হয় না।

হাসি বা কাশির মধ্যে, অতিরিক্ত মদ্যপান, অতিদ্রুত খাবার গ্রহণ করা বা ঝাঁঝসহ পানীয় বেশি পরিমাণে খেলে হেঁচকি শুরু হতে পারে, তবে কোনো ধরণের কারণ ছাড়াও হেঁচকি আসাটা একেবারেই অস্বাভাবিক কোনো বিষয় নয়।

হেঁচকি ওঠাটা খুবই স্বাভাবিক একটি ঘটনা এবং সাধারণত মিনিটখানেকের মধ্যেই তা স্বাভাবিক পর্যায়ে পৌঁছে যায়। তবে অতিরিক্ত মাত্রায় হেঁচকির উদাহরণও কিন্তু রয়েছে। যেমন সবচেয়ে বেশি সময় ধরে হেঁচকি ওঠার বিশ্ব রেকর্ডের উদাহরণ হিসেবে মনে করা হয় যুক্তরাষ্ট্রের চার্লস অসবোর্নের ঘটনাকে।

১৯২২ সালে হেঁচকি তোলা শুরু করেন তিনি, কথিত আছে সেসময় তিনি একটি শূকর ওজন করার চেষ্টা করছিলেন। অসবোর্ন হেঁচকি তোলা থামান ১৯৯০ সালের ফেব্রুয়ারিতে – মোট ৬৮ বছর পর।

হেঁচকি থামানোর উপায়ঃ

১. শ্বাস নিয়ে যতক্ষণ পারা যায় বন্ধ রেখে আস্তে আস্তে প্রশ্বাস ছাড়তে হবে। এটা করতে হবে বেশ কয়েকবার। বিরতি দিয়ে প্রয়োজনে বারবার করতে হবে।

২. কাগজের ব্যাগ দিয়ে মাথা ও মুখ ঢেকে শ্বাস নিতে হবে এবং ছাড়তে হবে একাধারে বেশ কয়েকবার। তবে সাবধান, পলিথিনের ব্যাগ ব্যবহার করবেন না।

৩. নাক–মুখ বন্ধ রেখে নিশ্বাস ফেলতে চেষ্টা করুন, এটাকে ভালসালভা মেনুভার বলা হয়। কয়েকবার করুন।

৪. ঠান্ডা পানি পান করতে পারেন।

৫. গরম দুধ পান করতে পারেন।

৬. এক চামচ চিনি জিবে নিয়ে সামান্য সময় পর গিলে খাওয়ার চেষ্টা করুন।

৭. নাক চেপে ধরে পানি পান করতে পারেন।

৮. গরম পানি দিয়ে গোসল করে দেখতে পারেন।

দুই দিনের মধ্যে হেঁচকি চলে না গেলে পরিপাকতন্ত্র ও লিভার বিশেষজ্ঞ অথবা মেডিসিন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।

তথ্যসূত্র: বিবিসি বাংলা

কেকে