ঢাকা ০৭:৪২ অপরাহ্ন, শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ঢাকা আলিয়ার স্বাস্থ্যকর ক্যাম্পাস গড়ার লক্ষ্যে শিবিরের পরিচ্ছন্নতা অভিযান নোয়াখালীতে হামলার প্রতিবাদে বাগেরহাট পি.সি. কলেজে কোরআন বিতরণ বাগেরহাটে মাদ্রাসার গভর্নিং কমিটির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হুমকি-ধামকি ও মারধর সরকারি মাদ্রাসা-ই-আলিয়ার ফিকহ বিভাগে সাফল্যের জোয়ার শরীয়তপুরে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে হেযবুত তাওহীদের মতবিনিময় সভা নলডাঙ্গায় আন্তর্জাতিক দুর্যোগ প্রশমন দিবস ২০২৫ পালিত নাটোরের সিংড়ায় ৯ বছরের শিশু ধর্ষণের শিকার: অভিযুক্ত রানা পলাতক কুমিল্লায় পিআর পদ্ধতিসহ ৫দফা দাবিতে জামায়াতের গণমিছিল ও সমাবেশ নোবিপ্রবিতে শীঘ্রই হচ্ছে ছাত্রদলের কমিটি, আলোচনায় জুলাই যোদ্ধা হাসিব ঐশ্বরিয়ার প্রথম পারিশ্রমিক কত ছিল?

সর্দি-কাশি সারছে না? সেরে উঠুন ঘরোয়া চিকিৎসায়

ছবিঃ সংগৃহীত

ঠান্ডা লাগা বা সর্দি হওয়া আমাদের জন্য খুবই সাধারণ একটি বিষয়। শীত, গ্রীষ্ম কিংবা বর্ষা—যে কোনো মৌসুমে এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে ঠান্ডা-সর্দি অনেক দিন থাকতে পারে, আবার অনেকের ক্ষেত্রে দ্রুতই সেরে যায়।

সাধারণত ঋতু বদলের সময় ঠান্ডা-সর্দির মতো উপসর্গগুলো অনেকের ক্ষেত্রে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাদের ক্ষেত্রে এ সমস্যা আরও জটিল আকার ধারণ করে। হালকা তাপমাত্রার তারতম্য ও দূষণের প্রভাব সামলানো তাদের ক্ষেত্রে বেশ মুশকিল হয়ে যায়।

সর্দির লক্ষণগুলো কী কী? ঠান্ডা-সর্দির বেশ কিছু লক্ষণ থাকে, যেগুলো শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের একই রকম হয়ে থাকে। সেগুলো হলো নাক বন্ধ হওয়া, সর্দি থাকা, গলাব্যথা, মাথাব্যথা, মাংসপেশিতে ব্যথা, কাশি, হাঁচি, জ্বর, কানে ও মুখে চাপ অনুভব করা, স্বাদ ও ঘ্রাণের অনুভূতি কমে আসা।

সর্দি কেন হয়? বিশ্বের সবচেয়ে বেশি হওয়া রোগগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে ঠান্ডা-সর্দি। এ রোগের কারণ হলো ভাইরাসের সংক্রমণ। একসময় ধারণা করা হতো, সর্দি হওয়ার একমাত্র কারণ ছিল একটি বিশেষ গোত্রের ভাইরাস। পরে আশির দশকে সে ধারণা বদলে যায়। তখন বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হন, সাতটি গোত্রের ভাইরাসের কারণে সর্দি হয়ে থাকে।

শীতের সময় এ ভাইরাসগুলো দ্রুত সংক্রমিত বা ছড়িয়ে পড়ার মতো পরিবেশ পায়। তাই এ সময়টাতে মানুষের সর্দি হওয়ার আশঙ্কা থাকে বেশি। সর্দি থাকা অবস্থায় সংক্রমণকারী জীবাণু নাসারন্ধ্রের ভেতরে মিউকাস লাইনিং অতিক্রমের মাধ্যমে প্রবেশ করে। এতে নাসারন্ধ্রের ভেতর অতিরিক্ত সর্দি জমা হয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে ‘রাইনোরেয়া’ বলা হয়।

ঘরোয়া উপায়ে সেরে উঠুন ঠান্ডা-সর্দির হাত থেকে সাধারণত কয়েক দিনের মধ্যেই ঠান্ডা-সর্দি ভালো হয়ে যায়। তবে কয়েকটি ঘরোয়া উপায়ে স্বাভাবিকের চেয়ে আরও দ্রুত সময়ে এ সমস্যা দূর করা সম্ভব। চলুন, একনজরে উপায়গুলো জেনে নেওয়া যাক—

গরম পানির ভাপঃ

সর্দির সমস্যায় ভুগলে প্রথমেই গরম পানির ভাপ বা স্টিম ইনহেল করা প্রয়োজন। যদি সমস্যা বেশি হয় তাহলে দিনে ২-৩ বার এ গরম পানির ভাপ নিতে পারেন। যাদের সাইনোসাইটিসের সমস্যা আছে, তাদের পোস্ট নেজাল ড্রিপিং হয় এবং সেই পানি গলায় প্রবেশ করে কাশির সমস্যা আরও বাড়িয়ে দেয়। এ ক্ষেত্রে স্টিম ইনহেলেশন ভালো কাজ করে।

পানীয় তৈরি করুনঃ

আদা, কাঁচা হলুদ, গোলমরিচ, তেজপাতা, লবঙ্গ আর মেথি একটি পাত্রে একসঙ্গে ভালো করে ফুটিয়ে নিন। পানি ফুটে অর্ধেক হয়ে গেলে নামিয়ে নিন। এরপর কয়েক মিনিট রেখে দিন। তীব্র গরম ভাব কেটে গেলে অর্ধেক পাতিলেবুর রস মিশিয়ে চায়ের মতো পান করুন। এতে খুশখুশে কাশি থাকলে তো কমবেই, সেই সঙ্গে ইনফ্লামেশনও চলে যাবে।

তরল পানীয় পান করুনঃ

সর্দি কমাতে সারা দিন গরম পানি পান করতে পারেন। সেই সঙ্গে স্যুপ, আদা ও মধু দেওয়া চা খেতে পারেন। তবে শরীরে আর্দ্রতার যেন কোনো ঘাটতি না হয়, সেদিকেও নজর রাখতে হবে।

গার্গল করুনঃ

গরম পানি গার্গল করলে সর্দি অনেকটা কমে যায়। এ জন্য লবণ দেওয়া গরম পানি দিয়ে সকালে ও রাতে গার্গল করুন। এতে সর্দি কমার পাশাপাশি গলার খুশখুশে ভাব কেটে যাবে।

আমলকী বা লেবু খানঃ

আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ভিটামিন সি। তাই আমলকী বা লেবুর মতো ফল প্রতিদিন নিয়ম করে খেলে সর্দি থেকে মুক্তি মিলতে পারে।

পেঁয়াজঃ

সর্দির সমস্যা দূর করার জন্য পেঁয়াজ হতে পারে একটি কার্যকর উপাদান। এটি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করার সঙ্গে শরীরে উপস্থিত ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াও ধ্বংস করে দেয়। একটি পাত্রে কয়েক টুকরো পেঁয়াজ কেটে তাতে মধু মেশান। এরপর সারারাত পাত্রটি ঢেকে রাখুন। সকালে খালি পেটে এর থেকে বেরিয়ে আসা সামান্য তরলটুকু পান করলেই উপকার মিলবে।

তুলসী পাতাঃ

তুলসী পাতাকে অনেক রোগের ওষুধ হিসেবে ধরা হয়। বিশেষ করে সর্দি-কাশিতে তুলসী পাতা বেশ উপকারী একটি উপাদান। প্রথমে তুলসী পাতা ও আদা একসঙ্গে গরম পানিতে ফুটিয়ে নিন। এবার গরম পানিতে কয়েক ফোঁটা মধু মিশিয়ে চায়ের মতো পান করুন। অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগলে মিশ্রণটি দিনে দুবার পান করলে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন।

ঠান্ডাজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুনঃ

যে কোনো ঠান্ডাজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন। যেমন : দই, শরবত ও আইসক্রিম—এসব খাবার খেলে সর্দি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

কেকে

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ঢাকা আলিয়ার স্বাস্থ্যকর ক্যাম্পাস গড়ার লক্ষ্যে শিবিরের পরিচ্ছন্নতা অভিযান

সর্দি-কাশি সারছে না? সেরে উঠুন ঘরোয়া চিকিৎসায়

আপডেট সময় : ০২:১৪:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪

ঠান্ডা লাগা বা সর্দি হওয়া আমাদের জন্য খুবই সাধারণ একটি বিষয়। শীত, গ্রীষ্ম কিংবা বর্ষা—যে কোনো মৌসুমে এ সমস্যা দেখা দিতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে ঠান্ডা-সর্দি অনেক দিন থাকতে পারে, আবার অনেকের ক্ষেত্রে দ্রুতই সেরে যায়।

সাধারণত ঋতু বদলের সময় ঠান্ডা-সর্দির মতো উপসর্গগুলো অনেকের ক্ষেত্রে মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে। যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম, তাদের ক্ষেত্রে এ সমস্যা আরও জটিল আকার ধারণ করে। হালকা তাপমাত্রার তারতম্য ও দূষণের প্রভাব সামলানো তাদের ক্ষেত্রে বেশ মুশকিল হয়ে যায়।

সর্দির লক্ষণগুলো কী কী? ঠান্ডা-সর্দির বেশ কিছু লক্ষণ থাকে, যেগুলো শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের একই রকম হয়ে থাকে। সেগুলো হলো নাক বন্ধ হওয়া, সর্দি থাকা, গলাব্যথা, মাথাব্যথা, মাংসপেশিতে ব্যথা, কাশি, হাঁচি, জ্বর, কানে ও মুখে চাপ অনুভব করা, স্বাদ ও ঘ্রাণের অনুভূতি কমে আসা।

সর্দি কেন হয়? বিশ্বের সবচেয়ে বেশি হওয়া রোগগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে ঠান্ডা-সর্দি। এ রোগের কারণ হলো ভাইরাসের সংক্রমণ। একসময় ধারণা করা হতো, সর্দি হওয়ার একমাত্র কারণ ছিল একটি বিশেষ গোত্রের ভাইরাস। পরে আশির দশকে সে ধারণা বদলে যায়। তখন বিজ্ঞানীরা নিশ্চিত হন, সাতটি গোত্রের ভাইরাসের কারণে সর্দি হয়ে থাকে।

শীতের সময় এ ভাইরাসগুলো দ্রুত সংক্রমিত বা ছড়িয়ে পড়ার মতো পরিবেশ পায়। তাই এ সময়টাতে মানুষের সর্দি হওয়ার আশঙ্কা থাকে বেশি। সর্দি থাকা অবস্থায় সংক্রমণকারী জীবাণু নাসারন্ধ্রের ভেতরে মিউকাস লাইনিং অতিক্রমের মাধ্যমে প্রবেশ করে। এতে নাসারন্ধ্রের ভেতর অতিরিক্ত সর্দি জমা হয়। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে ‘রাইনোরেয়া’ বলা হয়।

ঘরোয়া উপায়ে সেরে উঠুন ঠান্ডা-সর্দির হাত থেকে সাধারণত কয়েক দিনের মধ্যেই ঠান্ডা-সর্দি ভালো হয়ে যায়। তবে কয়েকটি ঘরোয়া উপায়ে স্বাভাবিকের চেয়ে আরও দ্রুত সময়ে এ সমস্যা দূর করা সম্ভব। চলুন, একনজরে উপায়গুলো জেনে নেওয়া যাক—

গরম পানির ভাপঃ

সর্দির সমস্যায় ভুগলে প্রথমেই গরম পানির ভাপ বা স্টিম ইনহেল করা প্রয়োজন। যদি সমস্যা বেশি হয় তাহলে দিনে ২-৩ বার এ গরম পানির ভাপ নিতে পারেন। যাদের সাইনোসাইটিসের সমস্যা আছে, তাদের পোস্ট নেজাল ড্রিপিং হয় এবং সেই পানি গলায় প্রবেশ করে কাশির সমস্যা আরও বাড়িয়ে দেয়। এ ক্ষেত্রে স্টিম ইনহেলেশন ভালো কাজ করে।

পানীয় তৈরি করুনঃ

আদা, কাঁচা হলুদ, গোলমরিচ, তেজপাতা, লবঙ্গ আর মেথি একটি পাত্রে একসঙ্গে ভালো করে ফুটিয়ে নিন। পানি ফুটে অর্ধেক হয়ে গেলে নামিয়ে নিন। এরপর কয়েক মিনিট রেখে দিন। তীব্র গরম ভাব কেটে গেলে অর্ধেক পাতিলেবুর রস মিশিয়ে চায়ের মতো পান করুন। এতে খুশখুশে কাশি থাকলে তো কমবেই, সেই সঙ্গে ইনফ্লামেশনও চলে যাবে।

তরল পানীয় পান করুনঃ

সর্দি কমাতে সারা দিন গরম পানি পান করতে পারেন। সেই সঙ্গে স্যুপ, আদা ও মধু দেওয়া চা খেতে পারেন। তবে শরীরে আর্দ্রতার যেন কোনো ঘাটতি না হয়, সেদিকেও নজর রাখতে হবে।

গার্গল করুনঃ

গরম পানি গার্গল করলে সর্দি অনেকটা কমে যায়। এ জন্য লবণ দেওয়া গরম পানি দিয়ে সকালে ও রাতে গার্গল করুন। এতে সর্দি কমার পাশাপাশি গলার খুশখুশে ভাব কেটে যাবে।

আমলকী বা লেবু খানঃ

আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ভিটামিন সি। তাই আমলকী বা লেবুর মতো ফল প্রতিদিন নিয়ম করে খেলে সর্দি থেকে মুক্তি মিলতে পারে।

পেঁয়াজঃ

সর্দির সমস্যা দূর করার জন্য পেঁয়াজ হতে পারে একটি কার্যকর উপাদান। এটি শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করার সঙ্গে শরীরে উপস্থিত ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়াও ধ্বংস করে দেয়। একটি পাত্রে কয়েক টুকরো পেঁয়াজ কেটে তাতে মধু মেশান। এরপর সারারাত পাত্রটি ঢেকে রাখুন। সকালে খালি পেটে এর থেকে বেরিয়ে আসা সামান্য তরলটুকু পান করলেই উপকার মিলবে।

তুলসী পাতাঃ

তুলসী পাতাকে অনেক রোগের ওষুধ হিসেবে ধরা হয়। বিশেষ করে সর্দি-কাশিতে তুলসী পাতা বেশ উপকারী একটি উপাদান। প্রথমে তুলসী পাতা ও আদা একসঙ্গে গরম পানিতে ফুটিয়ে নিন। এবার গরম পানিতে কয়েক ফোঁটা মধু মিশিয়ে চায়ের মতো পান করুন। অতিরিক্ত ঠান্ডা লাগলে মিশ্রণটি দিনে দুবার পান করলে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন।

ঠান্ডাজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুনঃ

যে কোনো ঠান্ডাজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন। যেমন : দই, শরবত ও আইসক্রিম—এসব খাবার খেলে সর্দি বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে।

কেকে