সোমবার, ২ সেপ্টেম্বর, ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে গত ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় ছাত্র-জনতাকে হত্যার পর আগুনে পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ঢাকা জেলার সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস) মোহাম্মদ আব্দুল্লাহিল কাফিকে আটক করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের এক সুত্র জানায়, ‘আব্দুল্লাহিল কাফি একজন পুলিশ কর্মকর্তা।তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে গেলে কিছু প্রক্রিয়াগত ব্যাপার আছে’। গত ৫ আগস্ট আশুলিয়ার ঘটনার সাথে তার জড়িত থাকার প্রমাণ রয়েছে কিনা তা তদন্ত সাপেক্ষে বলা যাবে। তারপর যা করনীয় তা উর্ধতন কর্মকর্তারা সিদ্ধান্ত নেবেন।
অতি সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়ার একটি ভিডিওতে দেখা যায় পুলিশ সদস্যরা একটি মরদেহ ভ্যানে তুলে সেগুলোকে ব্যানার দিয়ে ঢেকে দিচ্ছেন। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনা পালিয়ে দেশ ছাড়ার পরে অনেক আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী,সরকারি আমলা,কিছু পুলিশ সদস্য আত্মগোপনে চলে যায়।
ভিডিওটির এক মিনিট ছয় সেকেন্ড একটি পোস্টে দেয়ালে সাঁটানো একটি পোস্টার দেখা যায় যা স্থানীয় ধানসোনা ইউনিয়ন সভাপতি প্রার্থী ও ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বার প্রার্থী আবুল হোসেনের। সেই পোস্টার দেখে নিশ্চিত হওয়া গেছে ভিডিওটি আশুলিয়া থানার আশেপাশে।
মহাসড়ক থেকে থানা দিকে অগ্রসর হয়ে এসবি অফিসের দিকে চৌরাস্তায় এই ঘটনা ঘটেছে। ভেতরে ভিডিওতে থাকা বালুর বস্তাগুলো এসবি অফিসের দিকে যেতে থাকা-ভবনের সামনে স্তুপ করা ছিল। কিন্তু থানা পরিস্কারের সময় সেগুলো অপসারণ করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, একটি ড্রোন উড়িয়ে আন্দোলনরত ছাত্র-জনতার অবস্থান সনাক্ত করা হয়। থানার বিভিন্ন গলিতে ছাত্র-জনতা প্রবেশ করলে তাদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে পুলিশ। এ সময় বেশ কয়েকজন আন্দোলনকারী গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যায়। পুলিশ লাশগুলো তাদের থানার সামনে নিয়ে যায়। সেখানে একটি পুলিশভ্যানে লাশগুলো রেখে আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেয়া হয়।
এ ব্যাপারে ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক রিয়াজউদ্দিন আহমেদ বিপ্লব সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা সেদিন ঢাকা জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আব্দুল্লাহিল কাফির নির্দেশনা পালন করেছি’।
এর আগে ঢাকার মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা (ডিবি) কার্যালয়ে সহকারী পুলিশ কমিশনার ও ধানমন্ডি জুনের অতিরিক্ত উপ-কমিশনের দায়িত্বে ছিলেন কাফি। তখন থেকেই তিনি বেপরোয়া ছিলেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের ছেলের বন্ধুর পরিচয় দিয়ে তিনি প্রভাব বিস্তার করতেন।তাকে পুলিশের মধ্যে অনেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর ক্যাশিয়ার হিসেবেও চিনতেন। অপেক্ষাকৃত জুনিয়র কর্মকর্তা হয়েও সিনিয়রদের সাথে খবরদারি করার অভিযোগ ছিল তার বিরুদ্ধে।