কুমিল্লা প্রতিনিধিঃ
কুমিল্লা নগরীর ফল দোকানগুলোতে উঠতে শুরু করেছে গ্রীষ্মের রসালো ফল লিচু। বেশি লাভের আশায় অপরিপক্ক লিচু ও রাসায়নিক দিয়ে পাকানো লিচু বাজারে নিয়ে আসছেন ব্যবসায়ীরা। সিজন শুরুর আগেই লিচু বিক্রি করার দামও অনেক চড়া।
সাধ্যের বাইরে হওয়ার কিনতে পারছেন না সাধারণ ক্রেতারা। কিছু ক্রেতা মৌসুমের প্রথম ফল হিসেবে কিনলেও ফিরে যাচ্ছেন অনেকেই। কৃষি অফিস সূত্রে মাধ্যমে জানা গেছে, সাধারণত জুন মাসের প্রথম দিকে লিচুর সিজন শুরু হয়।
এসব অপরিপক্ক ও রাসায়নিক দিয়ে পাকানো লিচু খাওয়ার অনেক স্বাস্থ্য ঝুকি রয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।
গতকাল বুধবার কুমিল্লা নগরীর টমছমব্রীজ,কান্দিরপাড়,রাজগঞ্জ,চকবাজার, শাসনগাছা এলাকার ফল দোকানগুলোতে লিচু বিক্রি হতে দেখা গেছে।
লিচু কিনতে আসা ফাইমা আক্তার ফৌজি জানান, লিচু বিক্রি হতে দেখে কিনতে আসলাম। তবে এগুলো দেখে অপরিপক্ক মনে হয়েছে দামও অনেক চড়া নিবো না। তবে বাজারে নতুন লিচু দেখে অনেকেই শখ করে কিনছেন। আমার মত অনেকেই দাম শুনে কেটে পড়ছেন।
সরিজমিনে দোকানগুলো ঘুরে দেখা গেছে, বাজারে প্রকারভেদ লিচু দাম ভিন্ন ভিন্ন। যেটি বড় এবং একটু ভালো পেকেছে প্রতি ১০০ লিচু বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা পর্যন্ত। এর থেকে ছোট লিচু একদমই কাঁচা সেই লিচুগুলোর ৩০০ থেকে ৩৫০ এর মধ্যে বিক্রি হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যবসায়ী বলেন, দীর্ঘদিনের খরার কারণে অনেক দেরিতে পাকতে শুরু করেছে লিচু। সময়মতো বৃষ্টি না হওয়ার এ বছর লিচুর শাঁস ও স্বাদ কম। লিচু পাকতেও সময় লাগছে বেশি। তবও লাভের আশায় অপরিপক্ক লিচু বিক্রি শুরু করেছেন ব্যবসায়ী ও বাগান মালিকারা। তাই আমাদেও চড়া দাম দিয়ে কিনে আনতে হয়।
ক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, আজ হঠাৎ করেই বাজারে লিচু দেখে চোখ আটকে গেল। কিন্তু দাম অনেক চড়া। ১০০ লিচুর দাম হচ্ছে ৪৫০ টাকা। পরে দরদাম করেও ৪০০ টাকায় কিনলাম। আরও বেশি নেওয়ার ইচ্ছে ছিল তবে টক ও তুলনামূলক আঁটির আক্রান্ত বড়,রয়েছে পোকার আক্রমণও তাই বেশি কেনা হয়নি।
এ বিষয় জানতে চাইলে আর্দশ সদর উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ নিজাম উদ্দিন বলেন , কুমিল্লার বাজারে সাধারণত উত্তর বঙ্গ থেকে লিচু আসে। লিচুর সিজন শুরু হয় জুন মাসের প্রথম দিকে। তাই বাজারে এখন যেসব লিচু পাওয়া যায় সেগুলো অপরিপক্ক। এ ধরনের লিচু ক্রয় করা বা বিক্রয় করা কোনটাই উচিত নয় বলে মনে করি। এ বিষয়ে ক্রেতা ও বিক্রেতা দের সচেতন করা উচিত।
স্বাস্থ্য জন্য অপরিপক্ক ক্ষতিকর এ বিষয় জানতে মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা: মো: শাইনুর ইসলাম বলেন, এসব অপরিপক্ক ও রাসায়নিক দিয়ে পাকানো ফল খাওয়ার ফলে পেটে খিঁচুনি ও ব্যাথা হতে পারে। বমি বা মাথা ঘোরানো হতে পারে। লিভার ও কিডনি সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্ক লোকদের জন্য এসব ফল খুব ঝঁকিপূর্ন বলে মনে করেন তিনি।
কুমিল্লার নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক অফিসার জুয়েল মিয়া জানান, অপরিপক্ক অথবা রাসায়নিক দিয়ে পাকানো ফল বিক্রি একটি গুরুতর অপরাধ। এ অপরাধে ৩ লক্ষ টাকা থেকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। আমরা বাজার নজরদারি বাড়াবো এবং কয়েকদিনের মধ্যে সচেননতা মূলক লিফলেট বিতরণের উদ্যোগ নিবো।
এমএস