ঢাকা ০৮:১৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ ঢাকা আলিয়ার নেতৃত্বে রাকিব মন্ডল ও জিনাত নাটোরে শয়নকক্ষ থেকে যুবদল নেতার অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার অনলাইন স্ক্যাম ও জালিয়াতি প্রতিরোধে নতুন ফিচার আনল হোয়াটসঅ্যাপ অর্থনৈতিক অপরাধে জড়িতদের বিচারে কমিটি গঠন হবে : সৈয়দা রিজওয়ানা বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধে জড়াতে চায় না ভারত বাংলাদেশ-পাকিস্তান সরাসরি ফ্লাইট শিগগিরই চালু হচ্ছে বাংলাদেশের সঙ্গে বৈঠক পাকিস্তানের, যা বলছে গণমাধ্যম ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘নিরাপদ’ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ নাটেরের নলডাঙ্গায় ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে এক ব্যাক্তির মৃত্যু নাটোরে নিহত শিশু জুঁইয়ের পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন তারেক রহমান

বাগেরহাটের হারিয়ে ফেলা জুলাই কন্যা স্নেহা

ছবি : সংগৃহীত

বাগেরহাট প্রতিনিধি:

২৪ এর জুলাই-আগষ্ট বিপ্লব বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় ঘটনা। সারা বাংলাদেশের মানুষ একতা বদ্ধ হয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়তে বাধ্য করে। এই বিপ্লবের সফলতার পিছনে ছিলো বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের রাজপথে নেমে সকল ফ্যাসিবাদ বিরোধী শক্তিকে একতা বদ্ধ করা। এতে যেমন পুরুষদের অবদান ছিলো ঠিক একই ভাবে নারীদের ও অবদান ছিলো। আর এই নারীদেরকেই বলা হয় জুলাই কন্যা।

ঠিক তেমন এক জুলাই কন্যা বাগেরহাট জেলার স্নেহা জামান।জুলাই আগস্ট বিপ্লবের ৪ আগষ্ট বাগেরহাট কোর্ট চত্বরে সারাদেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে গণহত্যা চালানোর প্রতিবাদে এবং শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে বাগেরহাটের শিক্ষার্থী ও জনতা আন্দোলনের ডাক দেয়। ঠিক সেখানে সাহসী ভুমিকা রাখতে দেখা যায় বাগেরহাট নারী শিক্ষার্থী স্নেহা জামান কে।

স্নেহা জামান বাগেরহাট পৌরসভার মুনিগঞ্জ এলাকার এস এম নুরুজ্জামানের মেয়ে। তিনি বাগেরহাট সরকারি প্রফুল্ল চন্দ্র কলেজের অনার্স ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী।

বাগেরহাটের কতিপয় কয়েকজন মিলে সারা বাংলাদেশের শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের মৃত্যুর বিচার ও গণহত্যাকারী তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে কয়েকবার আন্দোলনের ডাক দেয়। বারাবার ব্যর্থ হওয়ার পর ২০২৪ সালের ৪ আগষ্ট চুড়ান্ত ভাবে ডাক দেয় আন্দোলনের। সেদিন স্নেহা জামান ঘরে বসে থাকতে পারেনি।সেও আন্দোলনে যোগ দিতে চলে আসে কোর্ট চত্বরে। সেখানেই দেখা যায় সামনের কাতার থেকে স্নেহা জামান একা একজন নারী শিক্ষার্থী হয়ে ছেলে শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণের সাথে একতাবদ্ধ হয়ে একদফা দাবিতে রাস্তায় এসে দাড়ায়। সেদিন তাকে ছাড়া অন্য কোন নারী শিক্ষার্থীকে এরকম সামনের সারিতে থেকে আন্দোলন করতে দেখা যায়নি। প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্য মতে আন্দোলকারীদের ভিতর শুধু তাকে নারী শিক্ষার্থী হিসেবে দেখছেন সবাই।

যখন বাগেরহাট কোর্ট চত্বরে আন্দোলনকারীদের উপর আওয়ামী বাহিনী সু-সজ্জিত হয়ে হাতে রামদা, লাঠি-সোঠা নিয়ে আক্রমণ চালায়। মূহুর্তেই রণক্ষেত্রে পরিণত হয় বাগেরহাট কোর্ট চত্বর। তখন স্নেহা জামান সামনের সারিতে থেকে সেই আক্রমণকে প্রতিহত করতে ছুটে যান আন্দোলনকারীদের সাথে।নিজের জীবনের কথা না ভেবে আন্দোলনে সবার সাথে একত্রিত হয়ে পাল্টা জবাব দেন তিনি আওয়ামী বাহিনীকে। এরপর যখন আওয়ামী বাহিনী চারদিক থেকে আন্দোলনকারীদের ঘিরে ফেলে আন্দোলনকারীদের উপর নৃশংস হামলা চালায় তখন কয়েকজনের সহায়তায় তাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়।

এরপর ৫ আগষ্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর তার নিজের বাড়িতে তাকে ফিরিয়ে আনা হয়। হয়তো স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ না করলে, আর জুলাই বিপ্লব ব্যর্থ হলে স্নেহা জামান লাঞ্চিত হতো আওয়ামী বাহিনীর কাছে।দেশদ্রোহীর মামলায় বিচারের কাঠগড়ায় দাড় করানো হতো তাকে।

স্নেহা জামানের মতো সহস্র জুলাই কন্যা হারিয়ে গেছে সময়ের সঙ্গে। স্নেহা জামানসহ সত্যিকারের জুলাই কন্যা কালের স্রোতে হারিয়ে যেনো না যায় সেই প্রত্যাশা সবার।

এমএস

ট্যাগস :

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ ঢাকা আলিয়ার নেতৃত্বে রাকিব মন্ডল ও জিনাত

বাগেরহাটের হারিয়ে ফেলা জুলাই কন্যা স্নেহা

আপডেট সময় : ০৪:৩৪:২৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ মার্চ ২০২৫

বাগেরহাট প্রতিনিধি:

২৪ এর জুলাই-আগষ্ট বিপ্লব বাংলাদেশের ইতিহাসে এক অবিস্মরণীয় ঘটনা। সারা বাংলাদেশের মানুষ একতা বদ্ধ হয়ে ফ্যাসিস্ট সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়তে বাধ্য করে। এই বিপ্লবের সফলতার পিছনে ছিলো বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের রাজপথে নেমে সকল ফ্যাসিবাদ বিরোধী শক্তিকে একতা বদ্ধ করা। এতে যেমন পুরুষদের অবদান ছিলো ঠিক একই ভাবে নারীদের ও অবদান ছিলো। আর এই নারীদেরকেই বলা হয় জুলাই কন্যা।

ঠিক তেমন এক জুলাই কন্যা বাগেরহাট জেলার স্নেহা জামান।জুলাই আগস্ট বিপ্লবের ৪ আগষ্ট বাগেরহাট কোর্ট চত্বরে সারাদেশের সাধারণ শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে গণহত্যা চালানোর প্রতিবাদে এবং শেখ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে বাগেরহাটের শিক্ষার্থী ও জনতা আন্দোলনের ডাক দেয়। ঠিক সেখানে সাহসী ভুমিকা রাখতে দেখা যায় বাগেরহাট নারী শিক্ষার্থী স্নেহা জামান কে।

স্নেহা জামান বাগেরহাট পৌরসভার মুনিগঞ্জ এলাকার এস এম নুরুজ্জামানের মেয়ে। তিনি বাগেরহাট সরকারি প্রফুল্ল চন্দ্র কলেজের অনার্স ২য় বর্ষের শিক্ষার্থী।

বাগেরহাটের কতিপয় কয়েকজন মিলে সারা বাংলাদেশের শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের মৃত্যুর বিচার ও গণহত্যাকারী তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনার পদত্যাগের দাবিতে কয়েকবার আন্দোলনের ডাক দেয়। বারাবার ব্যর্থ হওয়ার পর ২০২৪ সালের ৪ আগষ্ট চুড়ান্ত ভাবে ডাক দেয় আন্দোলনের। সেদিন স্নেহা জামান ঘরে বসে থাকতে পারেনি।সেও আন্দোলনে যোগ দিতে চলে আসে কোর্ট চত্বরে। সেখানেই দেখা যায় সামনের কাতার থেকে স্নেহা জামান একা একজন নারী শিক্ষার্থী হয়ে ছেলে শিক্ষার্থী ও সাধারণ জনগণের সাথে একতাবদ্ধ হয়ে একদফা দাবিতে রাস্তায় এসে দাড়ায়। সেদিন তাকে ছাড়া অন্য কোন নারী শিক্ষার্থীকে এরকম সামনের সারিতে থেকে আন্দোলন করতে দেখা যায়নি। প্রত্যক্ষদর্শীদের তথ্য মতে আন্দোলকারীদের ভিতর শুধু তাকে নারী শিক্ষার্থী হিসেবে দেখছেন সবাই।

যখন বাগেরহাট কোর্ট চত্বরে আন্দোলনকারীদের উপর আওয়ামী বাহিনী সু-সজ্জিত হয়ে হাতে রামদা, লাঠি-সোঠা নিয়ে আক্রমণ চালায়। মূহুর্তেই রণক্ষেত্রে পরিণত হয় বাগেরহাট কোর্ট চত্বর। তখন স্নেহা জামান সামনের সারিতে থেকে সেই আক্রমণকে প্রতিহত করতে ছুটে যান আন্দোলনকারীদের সাথে।নিজের জীবনের কথা না ভেবে আন্দোলনে সবার সাথে একত্রিত হয়ে পাল্টা জবাব দেন তিনি আওয়ামী বাহিনীকে। এরপর যখন আওয়ামী বাহিনী চারদিক থেকে আন্দোলনকারীদের ঘিরে ফেলে আন্দোলনকারীদের উপর নৃশংস হামলা চালায় তখন কয়েকজনের সহায়তায় তাকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়।

এরপর ৫ আগষ্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনা পদত্যাগ করার পর তার নিজের বাড়িতে তাকে ফিরিয়ে আনা হয়। হয়তো স্বৈরাচারী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ না করলে, আর জুলাই বিপ্লব ব্যর্থ হলে স্নেহা জামান লাঞ্চিত হতো আওয়ামী বাহিনীর কাছে।দেশদ্রোহীর মামলায় বিচারের কাঠগড়ায় দাড় করানো হতো তাকে।

স্নেহা জামানের মতো সহস্র জুলাই কন্যা হারিয়ে গেছে সময়ের সঙ্গে। স্নেহা জামানসহ সত্যিকারের জুলাই কন্যা কালের স্রোতে হারিয়ে যেনো না যায় সেই প্রত্যাশা সবার।

এমএস