নাটোর প্রতিনিধিঃ
নাটোরে গ্রাম আদালতের মাধ্যমে ৯৬ শতাংশ বিরোধ নিষ্পত্তি হচ্ছে। একই সঙ্গে ৯৬ শতাংশ মানুষ গ্রাম আদালতের বিচারিক কাজে সন্তুষ্ট। গ্রাম আদালতে আইনজীবী নিয়োগ করতে হয়না। মাত্র ১০ থেকে ২০ টাকা ফি প্রদান করে গ্রাম আদালতে অল্প টাকায় স্বল্প সময়ে সঠিক বিচার পাওয়া সম্ভব।
নাটোরের ৫২ টি ইউনিয়নের মধ্যে ৩৮ টি ইউনিয়নে গ্রাম আদালতের কার্যক্রম চলমান আছে, অবশিষ্ট ১৪ টি ইউনিয়নে অতি দ্রুত কার্যক্রম শুরু করা হবে।
সোমবার(১৩ জানুয়ারি) দুপুরে জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে আদালতের কার্যক্রম গতিশীল করতে জেলায় অংশীজনদের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় এসব তথ্য জানানো হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন।
সভায় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করে স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ পরিচালক মো:শামীম হোসেন বলেন, গ্রাম আদালত আইন ২০০৬ অনুযায়ী অনধিক ৩ লাখ টাকা মূল্যমানের ফৌজদারি ও দেওয়ানী বিরোধ নিষ্পত্তি করতে সব ইউনিয়ন পর্যায়ে গ্রাম আদালত কাজ করছে।
মাত্র ১০ টাকা ফি দিয়ে ফৌজদারি ক্ষেত্রে চুরি,দাঙ্গা,প্রতারণা, ঝগড়া-বিবাদ, কলহ বা মারামারি, মূল্যবান সম্পত্তি আত্মসাৎ করা, অন্যায় নিয়ন্ত্রণ ও আটক, ভয়ভীতি বা হুমকি দেওয়া এবং নারীর অমর্যাদা ও অসম্মান করার ক্ষেত্রে গ্রাম আদালত কাজ করে।
এছাড়া ২০ টাকা ফি প্রদান করে পাওনা টাকা আদায়, স্থাবর সম্পত্তি দখল থেকে উদ্ধার বা তার মূল্য আদায়, কোন অস্থাবর সম্পত্তি জবরদখল বা ক্ষতি করার জন্যে ক্ষতিপূরণ আদায়, গবাদি পশু অনধিকার প্রবেশের কারণে ক্ষতিপূরণ, কৃষিশ্রমিকদের পরিশোধযোগ্য মজুরি ও ক্ষতিপূরণ আদায়, স্ত্রী কর্তৃক বকেয়া ভরণপোষণ আদায় ও নিষ্পত্তি করে গ্রাম আদালত। মিথ্যা অভিযোগ দেওয়া হলে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা দেওয়ার বিধান রয়েছে।
সভায় উপ পরিচালক আরো বলেন, ইউএনডিপির রিপোর্ট অনুযায়ী গ্রাম আদালতের মাধ্যমে ৯৬ শতাংশ বিরোধ নিষ্পত্তি হচ্ছে এবং ৯৬ শতাংশ মানুষ গ্রাম আদালতের বিচারিক কাজে সন্তুষ্ট।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন বলেন, অল্প সময়ে স্বল্প খরচে স্থানীয় বিরোধ নিষ্পত্তি করার ক্ষেত্রে গ্রাম আদালতের কার্যক্রম প্রশংসিত। এই আদালতের সুফল পেতে প্রচারনার মাধ্যমে আদালতকে আরো সক্রিয় করতে সবাইকে ভূমিকা রাখতে হবে।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন, সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ পরিচালক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান, বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা “আলো’র নির্বাহী পরিচালক লাইজু নীলা, নাটোর প্রেসক্লাবের সভাপতি ফারাজি আহম্মদ রফিক বাবন প্রমুখ।
এমএস