ঢাকা ০৫:১৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ ঢাকা আলিয়ার নেতৃত্বে রাকিব মন্ডল ও জিনাত নাটোরে শয়নকক্ষ থেকে যুবদল নেতার অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার অনলাইন স্ক্যাম ও জালিয়াতি প্রতিরোধে নতুন ফিচার আনল হোয়াটসঅ্যাপ অর্থনৈতিক অপরাধে জড়িতদের বিচারে কমিটি গঠন হবে : সৈয়দা রিজওয়ানা বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধে জড়াতে চায় না ভারত বাংলাদেশ-পাকিস্তান সরাসরি ফ্লাইট শিগগিরই চালু হচ্ছে বাংলাদেশের সঙ্গে বৈঠক পাকিস্তানের, যা বলছে গণমাধ্যম ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘নিরাপদ’ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ নাটেরের নলডাঙ্গায় ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে এক ব্যাক্তির মৃত্যু নাটোরে নিহত শিশু জুঁইয়ের পরিবারের পাশে দাঁড়ালেন তারেক রহমান

চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পণ্য খালাস বন্ধ

চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে জাহাজে সাত খুনের ঘটনায় প্রকৃত কারণ উদঘাটন, হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিতে দেশব্যাপী কর্মবিরতি শুরু করেছেন নৌযান শ্রমিকেরা। বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন এই ধর্মঘটের ডাক দেয়। গত বৃহস্পতিবার রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে শুরু হওয়া নৌযানের শ্রমিকদের এই কর্মবিরতিতে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙর থেকে সব ধরনের পণ্য খালাস বন্ধ হয়ে গেছে। কর্ণফুলী নদীর ১৬টি ঘাটসহ দেশের অভ্যন্তরীণ নৌরুটে পণ্য পরিবহন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। শত শত লাইটারেজ জাহাজ অলস বসে আছে। আমদানিকৃত পণ্য লাইটারিং বন্ধ হওয়ায় বহির্নোঙরে অলস বসে আছে ২০টির মতো বিদেশি মাদার ভ্যাসেলও। গত রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়া বা আলোচনার কোনো উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

সূত্র বলেছে, এমভি আল বাখেরা জাহাজে মাস্টারসহ ৭ শ্রমিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিপূরণ ও হত্যাকারীদের শনাক্তসহ বেশ কয়েকটি দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সারা দেশে নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতি চলছে। এতে করে সারা দেশের নদী পথে মালবাহী, তেল–গ্যাসবাহী, বালুবাহীসহ সব প্রকার পণ্যবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে যাত্রীবাহী লঞ্চগুলোকে কর্মবিরতির বাইরে রাখা হয়েছে।

এদিকে লাইটার জাহাজ নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বাংলাদেশ ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট কো–অর্ডিনেশন সেলের তথ্য অনুযায়ী, নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে দেশের ৪৫টি ঘাটে ৭৩৮টি জাহাজে আটকা পড়েছে প্রায় ১০ লাখ টন পণ্য। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জাহাজ আটকা পড়েছে যশোরের নোয়াপাড়া ঘাট, নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর ঘাট, মেঘনা ঘাট ও সিরাজগঞ্জের ঘোড়াশাল ঘাটে। কর্ণফুলী নদী এবং ঘাটেও বিপুল সংখ্যক লাইটারেজ জাহাজ পণ্য নিয়ে অলস ভাসছে।

এছাড়া বন্দরের বহির্নোঙরে বড় জাহাজ থেকে ৩৫টি জাহাজে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে নেয়ার জন্য বোঝাই করা হয়েছিল ৫০ হাজার টনের বেশি পণ্য। জাহাজগুলো আটকে আছে। আবার বন্দরের বহির্নোঙরে ২০টি মাদার ভ্যাসেল থেকে পণ্য খালাস বন্ধ হয়ে গেছে। এসব জাহাজে অন্তত ৫ লাখ টন পণ্য খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে।

নৌযান শ্রমিকদের লাগাতার কর্মবিরতির প্রথম দিনেই কার্যত অচল হয়ে পড়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙর। যা জাহাজজট সৃষ্টিসহ আমদানি বাণিজ্যে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে শংকা প্রকাশ করা হয়েছে।

সাত খুনের ঘটনার পরপরই প্রশাসনের কাছে চার দফা দাবি জানিয়ে তা বাস্তবায়নে ৭২ ঘণ্টা সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল নৌযান ফেডারেশন। এই চার দফা দাবি মেনে না নেয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে বলে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের নেতারা জানিয়েছেন। তারা বলেন, নিহত শ্রমিকদের প্রত্যেকের পরিবারের জন্য সরকারিভাবে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা, সব নৌপথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ডাকাতি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি। যতদিন পর্যন্ত হত্যার বিষয়ে সঠিক বিচার না হবে ততদিন এই কর্মবিরতি চলবে বলেও তারা জানান।

বাংলাদেশ নৌযান ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক নবী আলম সাংবাদিকদের জানান, দাবি বাস্তবায়নে প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ নেই। এ কারণে লাগাতার কর্মবিরতি চলবে।

সিরাজুল মনির/এমএস

ট্যাগস :

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ ঢাকা আলিয়ার নেতৃত্বে রাকিব মন্ডল ও জিনাত

চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙরে পণ্য খালাস বন্ধ

আপডেট সময় : ০৮:২৮:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪

চাঁদপুরে মেঘনা নদীতে জাহাজে সাত খুনের ঘটনায় প্রকৃত কারণ উদঘাটন, হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার ও নিহত ব্যক্তিদের পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবিতে দেশব্যাপী কর্মবিরতি শুরু করেছেন নৌযান শ্রমিকেরা। বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশন এই ধর্মঘটের ডাক দেয়। গত বৃহস্পতিবার রাত ১২টা ১ মিনিট থেকে শুরু হওয়া নৌযানের শ্রমিকদের এই কর্মবিরতিতে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙর থেকে সব ধরনের পণ্য খালাস বন্ধ হয়ে গেছে। কর্ণফুলী নদীর ১৬টি ঘাটসহ দেশের অভ্যন্তরীণ নৌরুটে পণ্য পরিবহন পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। শত শত লাইটারেজ জাহাজ অলস বসে আছে। আমদানিকৃত পণ্য লাইটারিং বন্ধ হওয়ায় বহির্নোঙরে অলস বসে আছে ২০টির মতো বিদেশি মাদার ভ্যাসেলও। গত রাতে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত শ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়া বা আলোচনার কোনো উদ্যোগ পরিলক্ষিত হয়নি বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

সূত্র বলেছে, এমভি আল বাখেরা জাহাজে মাস্টারসহ ৭ শ্রমিক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ক্ষতিপূরণ ও হত্যাকারীদের শনাক্তসহ বেশ কয়েকটি দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সারা দেশে নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতি চলছে। এতে করে সারা দেশের নদী পথে মালবাহী, তেল–গ্যাসবাহী, বালুবাহীসহ সব প্রকার পণ্যবাহী নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে যাত্রীবাহী লঞ্চগুলোকে কর্মবিরতির বাইরে রাখা হয়েছে।

এদিকে লাইটার জাহাজ নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা বাংলাদেশ ওয়াটার ট্রান্সপোর্ট কো–অর্ডিনেশন সেলের তথ্য অনুযায়ী, নৌযান শ্রমিকদের কর্মবিরতির কারণে দেশের ৪৫টি ঘাটে ৭৩৮টি জাহাজে আটকা পড়েছে প্রায় ১০ লাখ টন পণ্য। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি জাহাজ আটকা পড়েছে যশোরের নোয়াপাড়া ঘাট, নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর ঘাট, মেঘনা ঘাট ও সিরাজগঞ্জের ঘোড়াশাল ঘাটে। কর্ণফুলী নদী এবং ঘাটেও বিপুল সংখ্যক লাইটারেজ জাহাজ পণ্য নিয়ে অলস ভাসছে।

এছাড়া বন্দরের বহির্নোঙরে বড় জাহাজ থেকে ৩৫টি জাহাজে দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে নেয়ার জন্য বোঝাই করা হয়েছিল ৫০ হাজার টনের বেশি পণ্য। জাহাজগুলো আটকে আছে। আবার বন্দরের বহির্নোঙরে ২০টি মাদার ভ্যাসেল থেকে পণ্য খালাস বন্ধ হয়ে গেছে। এসব জাহাজে অন্তত ৫ লাখ টন পণ্য খালাসের অপেক্ষায় রয়েছে।

নৌযান শ্রমিকদের লাগাতার কর্মবিরতির প্রথম দিনেই কার্যত অচল হয়ে পড়েছে চট্টগ্রাম বন্দরের বহির্নোঙর। যা জাহাজজট সৃষ্টিসহ আমদানি বাণিজ্যে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে শংকা প্রকাশ করা হয়েছে।

সাত খুনের ঘটনার পরপরই প্রশাসনের কাছে চার দফা দাবি জানিয়ে তা বাস্তবায়নে ৭২ ঘণ্টা সময়সীমা বেঁধে দিয়েছিল নৌযান ফেডারেশন। এই চার দফা দাবি মেনে না নেয়া পর্যন্ত কর্মবিরতি চলবে বলে বাংলাদেশ নৌযান শ্রমিক ফেডারেশনের নেতারা জানিয়েছেন। তারা বলেন, নিহত শ্রমিকদের প্রত্যেকের পরিবারের জন্য সরকারিভাবে ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ ঘোষণা, সব নৌপথে সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ডাকাতি বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি। যতদিন পর্যন্ত হত্যার বিষয়ে সঠিক বিচার না হবে ততদিন এই কর্মবিরতি চলবে বলেও তারা জানান।

বাংলাদেশ নৌযান ফেডারেশনের যুগ্ম সম্পাদক নবী আলম সাংবাদিকদের জানান, দাবি বাস্তবায়নে প্রশাসনের কোনো উদ্যোগ নেই। এ কারণে লাগাতার কর্মবিরতি চলবে।

সিরাজুল মনির/এমএস