ঢাকা ০৪:৫১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ০৮ জুন ২০২৫, ২৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
শিক্ষার্থীদের জন্য ড্রাইভিং প্রশিক্ষন চালু করলো বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি ১২০০ বস্তা চাল নিয়ে গুজব ছড়ানো হয়েছে: উপদেষ্টা আসিফ বাসে ওঠার সময় যাত্রীদের ছবি তুলে রাখা হবে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ পর্যালোচনায় কমিটি হচ্ছে : আইন উপদেষ্টা ফারুকের মনোনয়ন বাতিল ও আমিনুলের মনোনয়ন কেন অবৈধ নয়: হাইকোর্ট সেপ্টেম্বর নাগাদ মূল্যস্ফীতি ৭ শতাংশে নামবে : গভর্নর বিভিন্ন দেশের ভিসা বন্ধ হওয়ার জন্য দেশের মানুষ ও ব্যবসায়ীরাই দায়ী: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আমরা ক্ষমতা নেইনি, দায়িত্ব নিয়েছি: অর্থ উপদেষ্টা নতুন চুক্তি নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে নিশ্চয়তা চায় ইরান মনপুরায় ভিজিএফ চাউলের চুরি ধরা পরায় সাংবাদিকদের হুমকি ওয়ার্ড মেম্বারের

লুৎফুজ্জামান বাবরের খালাস চাইলেন আইনজীবী শিশির মনির

ছবিঃ সংগৃহীত

সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস চেয়েছেন তার আইনজীবী।

বুধবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরীন আক্তারের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানিতে বাবরের আইনজীবী শিশির মনির এ আবেদন করেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসিফ ইমরান জিসান। অন্য পাঁচজন আসামির পক্ষে শুনানিতে রয়েছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান। এর আগে ৬ নভেম্বর এ শুনানি শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষ প্রয়োজনীয় নথি উপস্থাপনে পর যুক্তি উপস্থাপন করেন। এরপর আসামিপক্ষ যুক্তি তর্ক উপস্থাপন শুরু করেন।

আইনজীবী শিশির মনির বলেন, লুৎফুজ্জামান বাবর মূলত এ মামলার আসামি ছিলেন না।

২৮টি সাক্ষী হয়ে যাওয়ার পরে পুনরায় তদন্তের জন্য একটি নির্দেশনা দেওয়া হয়। পুনরায় তদন্ত করা হয়। ওই তদন্তের মাধ্যমে বাবরসহ ১১ জনকে নতুন করে আসামি করা হয়। পরে ৫৩ জনের সাক্ষী নিয়ে বাবরকে নিম্ন আদালতে ফাঁসি দেওয়া হয়।

আমরা বলেছি, এভাবে মামলা চলা অবস্থায় ২৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষ হয়ে যাওয়ার পর যে তদন্তের আদেশ দেওয়া হয়েছে, তা আইন অনুযায়ী হয়নি, বেআইনিভাবে করা হয়েছে। তার নামে কোনো সরাসরি এভিডেন্স ও কোনো দেখা সাক্ষী নেই।

রাষ্ট্রপক্ষকে উদ্দেশ্যে করে শিশির মনির বলেন, তারা বলেছেন- তার (বাবর) নির্দেশে ৫ জনকে জেল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সাক্ষ্যপ্রমাণ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ৫ জনের কাউকে ছাড়া হয়নি। সবাই জেলে আছে।

এ আইনজীবী আরও বলেন, তার (বাবর) বিরুদ্ধে তিনি তদন্ত রিপোর্টকে প্রভাবিত করেছেন। কিন্তু এ বিষয়ে তৎকালীন তদন্ত কমিটির সভাপতি ও সচিব বিপরীত বক্তব্য দিয়েছেন।

শিশির মনিরের মতে, যেহেতু কোনো সাক্ষ্য প্রমাণ নেই, তাই অতিদ্রুত যেন এ মামলা থেকে তাকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার ঘটনা ঘটেছে এটা সঠিক। কিন্তু প্রকৃত দোষীকে নির্ধারণ করতে পারেনি। ফলে আমরা আদালতের সামনের লুৎফুজ্জামান বাববের বেকসুর খালাস দাবি করেছি।

২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি ১০ ট্রাক অস্ত্র আটক সংক্রান্ত দুটি মামলার মধ্যে চোরাচালান মামলায় (বিশেষ ক্ষমতা আইনে) সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী (ফাঁসির দণ্ড কার্যকর), সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর এবং ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়াসহ ১৪ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন চট্টগ্রামের স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক এসএম মজিবুর রহমানের আদালত।

মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত অন্য ১১ জন হলেন, এনএসআইর সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, এনএসআইর সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুর রহিম, ডিজিএফআইর সাবেক পরিচালক (নিরাপত্তা) অবসরপ্রাপ্ত উইং কমান্ডার সাহাবুদ্দিন আহমেদ, এনএসআইর সাবেক উপপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর লিয়াকত হোসেন, এনএসআইর সাবেক মাঠ কর্মকর্তা আকবর হোসেন খান, রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানা চিটাগং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের (সিইউএফএল) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহসিন উদ্দিন তালুকদার, সিইউএফএলের সাবেক মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) কে এম এনামুল হক, সাবেক ভারপ্রাপ্ত শিল্পসচিব নুরুল আমিন, চোরাচালানি হিসেবে অভিযুক্ত হাফিজুর রহমান, অস্ত্র খালাসের জন্য শ্রমিক সরবরাহকারী দীন মোহাম্মদ ও ট্রলার মালিক হাজী আবদুস সোবহান। পরে ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি কারাবন্দি আসামিরা আপিল করেন।

অস্ত্র আইনে দায়ের করা অন্য মামলাটিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ পেয়েছেন একই আসামিরা। এছাড়া অস্ত্র আটক মামলার অপর ধারায় সাত বছর কারাদণ্ড দেন বিচারক। দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে ৫ লাখ টাকা করে জরিমানাও করা হয়।

কেকে

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

জনপ্রিয় সংবাদ

শিক্ষার্থীদের জন্য ড্রাইভিং প্রশিক্ষন চালু করলো বাংলাদেশ মেরিটাইম ইউনিভার্সিটি

লুৎফুজ্জামান বাবরের খালাস চাইলেন আইনজীবী শিশির মনির

আপডেট সময় : ০৭:১১:৩২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪

সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের আলোচিত ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলায় মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস চেয়েছেন তার আইনজীবী।

বুধবার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি নাসরীন আক্তারের হাইকোর্ট বেঞ্চে শুনানিতে বাবরের আইনজীবী শিশির মনির এ আবেদন করেন।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সুলতানা আক্তার রুবী ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসিফ ইমরান জিসান। অন্য পাঁচজন আসামির পক্ষে শুনানিতে রয়েছেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এস এম শাহজাহান। এর আগে ৬ নভেম্বর এ শুনানি শুরু হয়। রাষ্ট্রপক্ষ প্রয়োজনীয় নথি উপস্থাপনে পর যুক্তি উপস্থাপন করেন। এরপর আসামিপক্ষ যুক্তি তর্ক উপস্থাপন শুরু করেন।

আইনজীবী শিশির মনির বলেন, লুৎফুজ্জামান বাবর মূলত এ মামলার আসামি ছিলেন না।

২৮টি সাক্ষী হয়ে যাওয়ার পরে পুনরায় তদন্তের জন্য একটি নির্দেশনা দেওয়া হয়। পুনরায় তদন্ত করা হয়। ওই তদন্তের মাধ্যমে বাবরসহ ১১ জনকে নতুন করে আসামি করা হয়। পরে ৫৩ জনের সাক্ষী নিয়ে বাবরকে নিম্ন আদালতে ফাঁসি দেওয়া হয়।

আমরা বলেছি, এভাবে মামলা চলা অবস্থায় ২৮ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষ হয়ে যাওয়ার পর যে তদন্তের আদেশ দেওয়া হয়েছে, তা আইন অনুযায়ী হয়নি, বেআইনিভাবে করা হয়েছে। তার নামে কোনো সরাসরি এভিডেন্স ও কোনো দেখা সাক্ষী নেই।

রাষ্ট্রপক্ষকে উদ্দেশ্যে করে শিশির মনির বলেন, তারা বলেছেন- তার (বাবর) নির্দেশে ৫ জনকে জেল থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। সাক্ষ্যপ্রমাণ বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, ৫ জনের কাউকে ছাড়া হয়নি। সবাই জেলে আছে।

এ আইনজীবী আরও বলেন, তার (বাবর) বিরুদ্ধে তিনি তদন্ত রিপোর্টকে প্রভাবিত করেছেন। কিন্তু এ বিষয়ে তৎকালীন তদন্ত কমিটির সভাপতি ও সচিব বিপরীত বক্তব্য দিয়েছেন।

শিশির মনিরের মতে, যেহেতু কোনো সাক্ষ্য প্রমাণ নেই, তাই অতিদ্রুত যেন এ মামলা থেকে তাকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়। ১০ ট্রাক অস্ত্র মামলার ঘটনা ঘটেছে এটা সঠিক। কিন্তু প্রকৃত দোষীকে নির্ধারণ করতে পারেনি। ফলে আমরা আদালতের সামনের লুৎফুজ্জামান বাববের বেকসুর খালাস দাবি করেছি।

২০১৪ সালের ৩০ জানুয়ারি ১০ ট্রাক অস্ত্র আটক সংক্রান্ত দুটি মামলার মধ্যে চোরাচালান মামলায় (বিশেষ ক্ষমতা আইনে) সাবেক শিল্পমন্ত্রী ও জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামী (ফাঁসির দণ্ড কার্যকর), সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর এবং ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফার সামরিক কমান্ডার পরেশ বড়ুয়াসহ ১৪ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেন চট্টগ্রামের স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক এসএম মজিবুর রহমানের আদালত।

মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত অন্য ১১ জন হলেন, এনএসআইর সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, এনএসআইর সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুর রহিম, ডিজিএফআইর সাবেক পরিচালক (নিরাপত্তা) অবসরপ্রাপ্ত উইং কমান্ডার সাহাবুদ্দিন আহমেদ, এনএসআইর সাবেক উপপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর লিয়াকত হোসেন, এনএসআইর সাবেক মাঠ কর্মকর্তা আকবর হোসেন খান, রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানা চিটাগং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডের (সিইউএফএল) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহসিন উদ্দিন তালুকদার, সিইউএফএলের সাবেক মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) কে এম এনামুল হক, সাবেক ভারপ্রাপ্ত শিল্পসচিব নুরুল আমিন, চোরাচালানি হিসেবে অভিযুক্ত হাফিজুর রহমান, অস্ত্র খালাসের জন্য শ্রমিক সরবরাহকারী দীন মোহাম্মদ ও ট্রলার মালিক হাজী আবদুস সোবহান। পরে ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে পাঠানো হয়। পাশাপাশি কারাবন্দি আসামিরা আপিল করেন।

অস্ত্র আইনে দায়ের করা অন্য মামলাটিতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ পেয়েছেন একই আসামিরা। এছাড়া অস্ত্র আটক মামলার অপর ধারায় সাত বছর কারাদণ্ড দেন বিচারক। দণ্ডপ্রাপ্ত প্রত্যেক আসামিকে ৫ লাখ টাকা করে জরিমানাও করা হয়।

কেকে