ঢাকা ০৩:১৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুলাই ২০২৫, ১০ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তামাক কোম্পানির সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি প্রজ্ঞার

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে তামাক কোম্পানির মতামত গ্রহণের জন্য স্টেকহোল্ডার সভা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অর্থ উপদেষ্টার নেতৃত্বে গঠিত উপদেষ্টা কমিটি। সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তামাকবিরোধী গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান)। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি)-এর আর্টিকেল ৫.৩ এবং এর গাইডলাইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হবে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪’-এর খসড়া পর্যালোচনার জন্য গঠিত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকটি গত ১৩ জুলাই অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) এ বিষয়ে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ‘প্রজ্ঞা’ জানিয়েছে, এফসিটিসি আর্টিকেল ৫.৩ অনুযায়ী, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন, বিধিমালা বা নীতি প্রণয়নের প্রক্রিয়ায় তামাক কোম্পানি বা তাদের সংশ্লিষ্ট কোনো পক্ষের প্রস্তাব, মতামত বা অংশগ্রহণ গ্রহণযোগ্য নয়। বিশ্বের অন্যতম প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ২০০৩ সালে এই আন্তর্জাতিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে এবং ২০০৮ সালে আর্টিকেল ৫.৩-এর গাইডলাইন অনুস্বাক্ষর করেছে। উল্লেখ্য, সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে আর্টিকেল ৫.৩ অনুসরণে গাইডলাইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করছে। ‘প্রজ্ঞা’ মনে করে, এই চুক্তির ব্যত্যয় হলে আন্তর্জাতিক মহলে নেতিবাচক বার্তা যাবে এবং দেশের সুনাম ক্ষুণ্ণ হতে পারে।

এ বিষয়ে প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের বলেন, এফসিটিসির স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়নে তামাক কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা ও মতামত গ্রহণ আর্টিকেল ৫.৩-এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে। উপদেষ্টা কমিটির এই সিদ্ধান্ত বাতিল করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া সংশোধনী পাস করার দাবি জানান তিনি।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে অধিকতর শক্তিশালী করতে ২০২১ সালে এটি সংশোধনীর উদ্যোগ নেয়। এ লক্ষ্যে একটি খসড়া সংশোধনী প্রণয়ন, ওয়েবসাইটে প্রকাশ, অংশীজনের মতামত গ্রহণ ও আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের পর ৭ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে এটি উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করা হয়। পরে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন উপদেষ্টা কমিটি গঠন করে খসড়াটি পুনরায় পরিমার্জনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং ৯ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে কমিটি প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশিত হয়। বাংলাদেশে ৩৫.৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন। তামাকজনিত রোগে বছরে ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করে, পঙ্গুত্ববরণ করে আরও কয়েক লাখ মানুষ।

কেকে

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

তামাক কোম্পানির সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি প্রজ্ঞার

আপডেট সময় : ০৯:২৬:৪১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ জুলাই ২০২৫

তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনে তামাক কোম্পানির মতামত গ্রহণের জন্য স্টেকহোল্ডার সভা আয়োজনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে অর্থ উপদেষ্টার নেতৃত্বে গঠিত উপদেষ্টা কমিটি। সম্প্রতি গণমাধ্যমে প্রকাশিত এমন খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তামাকবিরোধী গবেষণা ও অ্যাডভোকেসি প্রতিষ্ঠান প্রজ্ঞা (প্রগতির জন্য জ্ঞান)। এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে তা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল (এফসিটিসি)-এর আর্টিকেল ৫.৩ এবং এর গাইডলাইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন হবে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৪’-এর খসড়া পর্যালোচনার জন্য গঠিত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকটি গত ১৩ জুলাই অনুষ্ঠিত হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) এ বিষয়ে গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ‘প্রজ্ঞা’ জানিয়েছে, এফসিটিসি আর্টিকেল ৫.৩ অনুযায়ী, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন, বিধিমালা বা নীতি প্রণয়নের প্রক্রিয়ায় তামাক কোম্পানি বা তাদের সংশ্লিষ্ট কোনো পক্ষের প্রস্তাব, মতামত বা অংশগ্রহণ গ্রহণযোগ্য নয়। বিশ্বের অন্যতম প্রথম দেশ হিসেবে বাংলাদেশ ২০০৩ সালে এই আন্তর্জাতিক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে এবং ২০০৮ সালে আর্টিকেল ৫.৩-এর গাইডলাইন অনুস্বাক্ষর করেছে। উল্লেখ্য, সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে আর্টিকেল ৫.৩ অনুসরণে গাইডলাইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করছে। ‘প্রজ্ঞা’ মনে করে, এই চুক্তির ব্যত্যয় হলে আন্তর্জাতিক মহলে নেতিবাচক বার্তা যাবে এবং দেশের সুনাম ক্ষুণ্ণ হতে পারে।

এ বিষয়ে প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের বলেন, এফসিটিসির স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন প্রণয়নে তামাক কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা ও মতামত গ্রহণ আর্টিকেল ৫.৩-এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে। উপদেষ্টা কমিটির এই সিদ্ধান্ত বাতিল করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের খসড়া সংশোধনী পাস করার দাবি জানান তিনি।

স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে অধিকতর শক্তিশালী করতে ২০২১ সালে এটি সংশোধনীর উদ্যোগ নেয়। এ লক্ষ্যে একটি খসড়া সংশোধনী প্রণয়ন, ওয়েবসাইটে প্রকাশ, অংশীজনের মতামত গ্রহণ ও আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকের পর ৭ নভেম্বর ২০২৪ তারিখে এটি উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদনের জন্য উত্থাপন করা হয়। পরে একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন উপদেষ্টা কমিটি গঠন করে খসড়াটি পুনরায় পরিমার্জনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় এবং ৯ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে কমিটি প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশিত হয়। বাংলাদেশে ৩৫.৩ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ তামাক ব্যবহার করেন। তামাকজনিত রোগে বছরে ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ মৃত্যুবরণ করে, পঙ্গুত্ববরণ করে আরও কয়েক লাখ মানুষ।

কেকে