ঢাকা ০৩:৩৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
থ্যাইল্যান্ডে বন্ধ হচ্ছে ফুডপান্ডা স্বপ্ন মানুষের মূল চাবিকাঠি, মানুষকে স্বপ্ন দেখতে হবে: প্রধান উপদেষ্টা প্রানের দাবী একটাই, ডিপ্লোমা নার্সিং কে ডিগ্রী চাই জয়পুরহাটের পাঁচবিবিতে ইয়াবাসহ গ্রেফতার সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল বারিক দুলাল সরকারের শিল্পবান্ধব পলিসি অর্থনৈতিক ক্ষেত্র বিশেষ ভূমিকা রাখবে- নাটোরে শিল্প ও বানিজ্য মেলার উদ্বোধনে- দুলু ঝিনাইদহে ২ এসএসসি পরীক্ষার্থীকে ছুরির আঘাত নদী খেকোদের দখলে মারাত্মক অস্তিত্ব সংকটে কুষ্টিয়ার নদীগুলো:প্রশাসন নির্বিকার কুমিল্লায় ট্রেনে কাটা পড়ে ৩ যুবকের মৃত্যু কুষ্টিয়ায় ৬০০ পিস ট্যাপেন্টা সহ যুবক গ্রেফতার বিকাশে সিনিয়র অফিসার পদে চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি

নদী খেকোদের দখলে মারাত্মক অস্তিত্ব সংকটে কুষ্টিয়ার নদীগুলো:প্রশাসন নির্বিকার

ছবি : সংগৃহীত

মোঃ বাবুল আক্তার, ভেড়ামারা (উপজেলা) প্রতিনিধি :

নদীমাতৃক বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার উপর দিয়ে বয়ে চলেছে ছোট বড় প্রায় আটটি নদী। কিন্তু কোন নিয়মের তোয়াক্কা না করে দফায় দফায় দখল বাজির কারণে এক সময়ের খরস্রোতা আর প্রাণ উচ্ছ্বল নদীগুলো তার তার যৌবন আর স্রোত হারিয়ে অনেকটাই অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। নাব্যতা না থাকায় এর মধ্যে বেশ কয়েকটা নদী মৃত খালে পরিণত হয়েছে। ফলে হুমকির মুখে রয়েছে এই অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য ও সমস্ত জনপদ। ভুক্তভোগী এলাকাবাসী ও নদী সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীর দাবি , প্রভাবশালী আর নদী খেকোরা অবৈধভাবে নদীর জায়গা ভরাট করে বড় বড় দালান বাড়ি, স্থাপনা ও শিল্প কারখানা নির্মাণ এবং নদীর জমিতে মাছ চাষ, কৃষিকাজ ও দখলবাজি করার কারণেই নদী গুলোর এই অবস্থা। এছাড়াও জেলা প্রশাসক কর্তৃক অধিকাংশ নদীতে মাছ চাষের জন্য ইজারা দেয়া হয়েছে। ইজারাদাররা আবার নদীর বিভিন্ন অংশ বিভিন্ন জনকে ভাগ করে দেয়। এতে করে নির্দিষ্ট দূরত্ব পরপর নদীতে বাঁধ দিয়ে এর প্রবাহ নষ্ট করা হয়েছে। যার ফলে নদী হারিয়েছে তার নাব্যতা। এছাড়াও প্রশাসন কর্তৃক নদী আইন না মেনে নদীর প্রস্তের চেয়ে কম জায়গা নিয়ে ব্রিজ তৈরি করেও নদীর গতিপথ নষ্ট করা হয়েছে। ভুক্তভোগীরা আরো দাবি করেন, প্রশাসনের অনীহা আর অবহেলার কারণেই প্রভাবশালীরা আরো সুযোগ পাচ্ছে।

এক্ষেত্রে রাজনৈতিক পালাবদলে বদল হয় দখলবাজও। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে নদীর ভাগ্য বদল হয় না। তাই কুষ্টিয়া অঞ্চলের জীব বৈচিত্র্যের ভারসাম্য রক্ষা,নদী কেন্দ্রিক জনবসতি গুলোর অস্তিত্ব রক্ষা,খরা ও দুর্ভিক্ষের থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নদীগুলোকে দ্রুত পুনরুদ্ধাররের দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ও নদী বিশ্লেষকরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,পদ্মা,গড়াই,হিসনাসহ ছোট-বড় প্রায় ৮ টি নদী রয়েছে কুষ্টিয়া জেলায়। নদীকে কেন্দ্র করে তীরর্বতী এলাকায় গড়ে উঠেছে ব্যবসা-বাণিজ্য আর জনবহুল জনপদ। জেলার যে জায়গায় নদী রয়েছে তার তীরবর্তী জায়গাতেই এক সময় গড়ে উঠেছিল বিভিন্ন শিল্প কারখানা আর প্রতিষ্ঠান।নদীপথেই সে সময় কলকাতাসহ খুলনা, বাগেরহাট, যশোর থেকে বাণিজ্য জাহাজ ও পালতোলা নৌকা মালামাল আসতো। কিন্তু প্রভাবশালীদের দখলবাজির কারণে
এই সব খরস্রোতা নদীতে এখন নৌকাও চলে না। নদীর কিছু কিছু জায়গা এখন মৃত খালে পরিণত হয়েছে। ভুক্তভোগীদের দাবি, এভাবে চলতে থাকলে খুব কম সময়ের মধ্যেই প্রতিটি নদী তার অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলবে। এক সময় হয়তো বোঝাও যাবে না, এখানে নদী ছিল।এছাড়াও জানা গেছে, ১৯৫৬-৫৭ সালে অনেকেই “স্থায়ী বন্দোবস্ত”(পিআর) এর মাধ্যমে নদীর জমি সরকারের থেকে লিজ নিয়ে ১৯৭৬ সালে আর. এস (রিভিশনাল সার্ভে) এর মাধ্যমে তা নিজ নামে রেকর্ড করে নেয়।তাই প্রশাসনের এখনই উচিত জরুরী জোর তাগিদ দেওয়া।

জেলার বিভিন্ন উপজেলায় গিয়ে দেখা যায়,শুকনো মৌসুমে নদীতে পানি নেই বললেই চলে। অথচ একসময় এই নদীতে মাছ ধরেই শতশত জেলে তাদের জীবিকা নির্বাহ করত। বর্তমানে মাছ চাষের জন্য ইজারা দেয়া হয়েছে এসব নদী। কিছুদূর পরপরই ইজারাদাররা নিজ মত নদীতে বাধ দিয়ে মাছ চাষ করছে। যার ফলে নদীর স্রোত প্রবাহ নষ্ট হয়ে গেছে। নদীর যে সমস্ত খাস জমি আছে সেগুলো দখল করে দখলবাজরা শুষ্ক মৌসুমে চাষ করছে ধানসহ বিভিন্ন ফসলাদি।ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলের ক্ষমতা বদলের ফলে বদল হয় দখলবাজও। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে নদীর ভাগ্য বদল হয় না।

জেলার বিভিন্ন উপজেলায় আরেকটি দৃশ্যমান হল, নদীর ওপর নির্মিত প্রায় প্রতিটি ব্রীজের দৈর্ঘ্য নদীর প্রস্থ অপেক্ষা অনেক কম। যা নদী আইন দ্বারা সিদ্ধ নয়।পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, নদীর ওপর নির্মিত প্রতিটি ব্রিজের দৈর্ঘ্য নদীর প্রস্থের সমান হতে হবে। কিছু কিছু জায়গায় দেখা গেছে নদীর ওপর নির্মিত ব্রীজের দৈর্ঘ্য, নদীর প্রস্থের ৮ ভাগের ১ ভাগ।

আরেকটি বিশেষভাবে লক্ষ্যনীয় বিষয় হল, অনেকেই নদীর ঠিক পাড় থেকেই তাদের বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। যা নদী আইনে নিষিদ্ধ। নদীর পাড় থেকে কমপক্ষে ১০ মিটার বা ৩০ ফিট জায়গা ব্যক্তিগত হলেও সেটা কেউ দাবি করতে পারবে না।এবং নদীর ১ নং খাস খতিয়ানের সমস্ত জায়গা জেলা প্রশাসনের আওতাধীন।

এক্ষেত্রে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বক্তব্য চাইলে তারা বলেন,২০ একরের উপরে যে সমস্ত জলাধার রয়েছে, সেগুলোর দায়িত্ব জেলা প্রশাসনের অধীনে। তাছাড়া উপজেলা প্রশাসনের ইজারা দেয়ার কোন ক্ষমতা নেই।

নদী গবেষক গৌতম কুমার রায় বলেন,নদীকে স্বাভাবিকভাবে চলতে দিচ্ছে না বলেই প্রাকৃতির হিংস্রতা দিন দিন বেড়ে চলেছে। এর গতিধারা স্বাভাবিক থাকলে প্রাকৃতিকভাবে মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধি ও কৃষিক্ষেত্রে চাষাবাদে নদীর পানি ব্যবহার করা যেত। এক্ষেত্রে নদী বড় রকমের অবদান রাখতে পারতো। এছাড়াও নদী থেকে বালু তোলার ফলেও নদীর নাব্যতা নষ্ট হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান প্রকল্পের বাজেট প্রাপ্তি সাপেক্ষে নদীর পাশে গড়ে ওঠা নদীখেকোদের অবৈধ স্থাপনা দূর ও নদীর নাব্যতা ফেরানোর কাজ শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন। এর আগে তিনি জানিয়েছিলেন, মাছ চাষের ক্ষেত্রে নদীর ইজারা সাধারণত জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে থেকে দেওয়া হয়ে থাকে। তিনি আরো বলেন, নদী আইনে নদীর উপর নির্মিত কোন ব্রিজের দৈর্ঘ্য অবশ্যই নদীর প্রস্থের সমান হতে হবে। এ ছাড়াও নদী আইনে সিকস্তি ও পয়স্তি যেটাই হোক, নদীর জায়গা কেউই দখল করতে পারবে না। অতিসম্প্রতি মহামান্য আদালত একটি রায়ে বলেছেন, নদীর পাড় থেকে ১০ মিটার বা ৩০ ফিট জায়গা ব্যক্তিগত হলেও সেটা কেউ দাবি করতে পারবে না। নদীর খাস জায়গাতে ব্যক্তি উদ্যোগে কৃষি চাষের ব্যাপারে তিনি বলেন, নদীর ১ নং খাস খতিয়ানের জায়গা জেলা প্রশাসনের আওতাধীন। তারাই ব্যবস্থা নিতে পারে। তিনি বললেই কেবল আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি।

এমএস

ট্যাগস :

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

জনপ্রিয় সংবাদ

থ্যাইল্যান্ডে বন্ধ হচ্ছে ফুডপান্ডা

নদী খেকোদের দখলে মারাত্মক অস্তিত্ব সংকটে কুষ্টিয়ার নদীগুলো:প্রশাসন নির্বিকার

আপডেট সময় : ১২:৫৩:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৫

মোঃ বাবুল আক্তার, ভেড়ামারা (উপজেলা) প্রতিনিধি :

নদীমাতৃক বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার উপর দিয়ে বয়ে চলেছে ছোট বড় প্রায় আটটি নদী। কিন্তু কোন নিয়মের তোয়াক্কা না করে দফায় দফায় দখল বাজির কারণে এক সময়ের খরস্রোতা আর প্রাণ উচ্ছ্বল নদীগুলো তার তার যৌবন আর স্রোত হারিয়ে অনেকটাই অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে। নাব্যতা না থাকায় এর মধ্যে বেশ কয়েকটা নদী মৃত খালে পরিণত হয়েছে। ফলে হুমকির মুখে রয়েছে এই অঞ্চলের জীববৈচিত্র্য ও সমস্ত জনপদ। ভুক্তভোগী এলাকাবাসী ও নদী সংশ্লিষ্ট জনগোষ্ঠীর দাবি , প্রভাবশালী আর নদী খেকোরা অবৈধভাবে নদীর জায়গা ভরাট করে বড় বড় দালান বাড়ি, স্থাপনা ও শিল্প কারখানা নির্মাণ এবং নদীর জমিতে মাছ চাষ, কৃষিকাজ ও দখলবাজি করার কারণেই নদী গুলোর এই অবস্থা। এছাড়াও জেলা প্রশাসক কর্তৃক অধিকাংশ নদীতে মাছ চাষের জন্য ইজারা দেয়া হয়েছে। ইজারাদাররা আবার নদীর বিভিন্ন অংশ বিভিন্ন জনকে ভাগ করে দেয়। এতে করে নির্দিষ্ট দূরত্ব পরপর নদীতে বাঁধ দিয়ে এর প্রবাহ নষ্ট করা হয়েছে। যার ফলে নদী হারিয়েছে তার নাব্যতা। এছাড়াও প্রশাসন কর্তৃক নদী আইন না মেনে নদীর প্রস্তের চেয়ে কম জায়গা নিয়ে ব্রিজ তৈরি করেও নদীর গতিপথ নষ্ট করা হয়েছে। ভুক্তভোগীরা আরো দাবি করেন, প্রশাসনের অনীহা আর অবহেলার কারণেই প্রভাবশালীরা আরো সুযোগ পাচ্ছে।

এক্ষেত্রে রাজনৈতিক পালাবদলে বদল হয় দখলবাজও। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে নদীর ভাগ্য বদল হয় না। তাই কুষ্টিয়া অঞ্চলের জীব বৈচিত্র্যের ভারসাম্য রক্ষা,নদী কেন্দ্রিক জনবসতি গুলোর অস্তিত্ব রক্ষা,খরা ও দুর্ভিক্ষের থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নদীগুলোকে দ্রুত পুনরুদ্ধাররের দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ও নদী বিশ্লেষকরা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়,পদ্মা,গড়াই,হিসনাসহ ছোট-বড় প্রায় ৮ টি নদী রয়েছে কুষ্টিয়া জেলায়। নদীকে কেন্দ্র করে তীরর্বতী এলাকায় গড়ে উঠেছে ব্যবসা-বাণিজ্য আর জনবহুল জনপদ। জেলার যে জায়গায় নদী রয়েছে তার তীরবর্তী জায়গাতেই এক সময় গড়ে উঠেছিল বিভিন্ন শিল্প কারখানা আর প্রতিষ্ঠান।নদীপথেই সে সময় কলকাতাসহ খুলনা, বাগেরহাট, যশোর থেকে বাণিজ্য জাহাজ ও পালতোলা নৌকা মালামাল আসতো। কিন্তু প্রভাবশালীদের দখলবাজির কারণে
এই সব খরস্রোতা নদীতে এখন নৌকাও চলে না। নদীর কিছু কিছু জায়গা এখন মৃত খালে পরিণত হয়েছে। ভুক্তভোগীদের দাবি, এভাবে চলতে থাকলে খুব কম সময়ের মধ্যেই প্রতিটি নদী তার অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলবে। এক সময় হয়তো বোঝাও যাবে না, এখানে নদী ছিল।এছাড়াও জানা গেছে, ১৯৫৬-৫৭ সালে অনেকেই “স্থায়ী বন্দোবস্ত”(পিআর) এর মাধ্যমে নদীর জমি সরকারের থেকে লিজ নিয়ে ১৯৭৬ সালে আর. এস (রিভিশনাল সার্ভে) এর মাধ্যমে তা নিজ নামে রেকর্ড করে নেয়।তাই প্রশাসনের এখনই উচিত জরুরী জোর তাগিদ দেওয়া।

জেলার বিভিন্ন উপজেলায় গিয়ে দেখা যায়,শুকনো মৌসুমে নদীতে পানি নেই বললেই চলে। অথচ একসময় এই নদীতে মাছ ধরেই শতশত জেলে তাদের জীবিকা নির্বাহ করত। বর্তমানে মাছ চাষের জন্য ইজারা দেয়া হয়েছে এসব নদী। কিছুদূর পরপরই ইজারাদাররা নিজ মত নদীতে বাধ দিয়ে মাছ চাষ করছে। যার ফলে নদীর স্রোত প্রবাহ নষ্ট হয়ে গেছে। নদীর যে সমস্ত খাস জমি আছে সেগুলো দখল করে দখলবাজরা শুষ্ক মৌসুমে চাষ করছে ধানসহ বিভিন্ন ফসলাদি।ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, এক্ষেত্রে রাজনৈতিক দলের ক্ষমতা বদলের ফলে বদল হয় দখলবাজও। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে নদীর ভাগ্য বদল হয় না।

জেলার বিভিন্ন উপজেলায় আরেকটি দৃশ্যমান হল, নদীর ওপর নির্মিত প্রায় প্রতিটি ব্রীজের দৈর্ঘ্য নদীর প্রস্থ অপেক্ষা অনেক কম। যা নদী আইন দ্বারা সিদ্ধ নয়।পানি উন্নয়ন বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, নদীর ওপর নির্মিত প্রতিটি ব্রিজের দৈর্ঘ্য নদীর প্রস্থের সমান হতে হবে। কিছু কিছু জায়গায় দেখা গেছে নদীর ওপর নির্মিত ব্রীজের দৈর্ঘ্য, নদীর প্রস্থের ৮ ভাগের ১ ভাগ।

আরেকটি বিশেষভাবে লক্ষ্যনীয় বিষয় হল, অনেকেই নদীর ঠিক পাড় থেকেই তাদের বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করেছেন। যা নদী আইনে নিষিদ্ধ। নদীর পাড় থেকে কমপক্ষে ১০ মিটার বা ৩০ ফিট জায়গা ব্যক্তিগত হলেও সেটা কেউ দাবি করতে পারবে না।এবং নদীর ১ নং খাস খতিয়ানের সমস্ত জায়গা জেলা প্রশাসনের আওতাধীন।

এক্ষেত্রে উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বক্তব্য চাইলে তারা বলেন,২০ একরের উপরে যে সমস্ত জলাধার রয়েছে, সেগুলোর দায়িত্ব জেলা প্রশাসনের অধীনে। তাছাড়া উপজেলা প্রশাসনের ইজারা দেয়ার কোন ক্ষমতা নেই।

নদী গবেষক গৌতম কুমার রায় বলেন,নদীকে স্বাভাবিকভাবে চলতে দিচ্ছে না বলেই প্রাকৃতির হিংস্রতা দিন দিন বেড়ে চলেছে। এর গতিধারা স্বাভাবিক থাকলে প্রাকৃতিকভাবে মৎস্য সম্পদ বৃদ্ধি ও কৃষিক্ষেত্রে চাষাবাদে নদীর পানি ব্যবহার করা যেত। এক্ষেত্রে নদী বড় রকমের অবদান রাখতে পারতো। এছাড়াও নদী থেকে বালু তোলার ফলেও নদীর নাব্যতা নষ্ট হচ্ছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাশিদুর রহমান প্রকল্পের বাজেট প্রাপ্তি সাপেক্ষে নদীর পাশে গড়ে ওঠা নদীখেকোদের অবৈধ স্থাপনা দূর ও নদীর নাব্যতা ফেরানোর কাজ শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন। এর আগে তিনি জানিয়েছিলেন, মাছ চাষের ক্ষেত্রে নদীর ইজারা সাধারণত জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে থেকে দেওয়া হয়ে থাকে। তিনি আরো বলেন, নদী আইনে নদীর উপর নির্মিত কোন ব্রিজের দৈর্ঘ্য অবশ্যই নদীর প্রস্থের সমান হতে হবে। এ ছাড়াও নদী আইনে সিকস্তি ও পয়স্তি যেটাই হোক, নদীর জায়গা কেউই দখল করতে পারবে না। অতিসম্প্রতি মহামান্য আদালত একটি রায়ে বলেছেন, নদীর পাড় থেকে ১০ মিটার বা ৩০ ফিট জায়গা ব্যক্তিগত হলেও সেটা কেউ দাবি করতে পারবে না। নদীর খাস জায়গাতে ব্যক্তি উদ্যোগে কৃষি চাষের ব্যাপারে তিনি বলেন, নদীর ১ নং খাস খতিয়ানের জায়গা জেলা প্রশাসনের আওতাধীন। তারাই ব্যবস্থা নিতে পারে। তিনি বললেই কেবল আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি।

এমএস