ঢাকা ০৩:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ২৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
আমরা বাংলাদেশের জনগণের মহত্ত্ব ভুলব না : ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত চীন পণ্যে ১০৪ শতাংশ শুল্কারোপের হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের ‘দাগি’র বিশেষ প্রদর্শনীতে ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদ নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আফ্রিকান ইউনিয়নের সম্মেলন থেকে বহিষ্কার ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত নেতানিয়াহুর বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এড়াতে নতুন কৌশল নেতানিয়াহুর গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে জয়পুরহাটে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ ফিলিস্তিনে গ’ণ’হ’ত্যার প্রতিবাদে শাজাহানপুর উপজেলা জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল বৈশাখে পান্তা-ইলিশ খাওয়া সংস্কৃতির অংশ নয়: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

জাতিসংঘে রাশিয়ার পক্ষে অবস্থান নিল যুক্তরাষ্ট্র

ছবি : সংগৃহীত

ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যকার যুদ্ধ তিন বছর পূর্ণ হতে চলেছে। এই প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘে অনুষ্ঠিত দুটি পৃথক ভোটাভুটিতে রাশিয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন নীতিতে এটিকে বড় ধরনের পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের তৃতীয় বার্ষিকী উপলক্ষে জাতিসংঘে ভোটাভুটিতে যুক্তরাষ্ট্র দুবার রাশিয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এটি ট্রাম্প প্রশাসনের যুদ্ধ সম্পর্কিত নীতিতে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়।

প্রথম ভোটে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া একসঙ্গে ইউরোপীয় দেশগুলোর প্রস্তাবের বিরোধিতা করে, যেখানে মস্কোর কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানানো হয়েছিল এবং ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি সমর্থন দেওয়া হয়েছিল। তবে প্রস্তাবটি শেষ পর্যন্ত নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে পাস হয়।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘে ইউরোপ সমর্থিত আরও একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়, যাতে দাবি করা হয় যে রাশিয়াকে ইউক্রেনের ভূখণ্ড থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। এই প্রস্তাব পাস হওয়াকে মস্কোর জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

অন্যদিকে, জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে একটি পৃথক প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়, যেখানে যুদ্ধের সমাপ্তির কথা বলা হলেও রাশিয়ার আগ্রাসনের বিষয়টি সরাসরি উল্লেখ করা হয়নি। তবে এই প্রস্তাব জাতিসংঘের সাধারণ সভায় প্রত্যাখ্যাত হয়, যা ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে মনে করা হচ্ছে।

এ ছাড়া ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের নিন্দাসংবলিত আরেকটি প্রস্তাবের বিরোধিতায় যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি রাশিয়ার পাশে দাঁড়ায়। এই প্রস্তাবে মার্কিন দেশের সঙ্গে ছিল বেলারুশ, উত্তর কোরিয়া ও সুদান।

জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন প্রতিনিধি ইউক্রেনকে অনুরোধ করেন যেন তারা নিজেদের প্রস্তাব তুলে নেয় এবং মার্কিন প্রস্তাবকে সমর্থন দেয়। তবে ইউক্রেন তার অবস্থানে অনড় থাকে। মার্কিন খসড়া প্রস্তাবে ইউরোপীয় পক্ষের কিছু দাবিকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবও দেওয়া হয়, যেখানে রাশিয়ার আগ্রাসনকে জাতিসংঘ সনদের লঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল।

পরবর্তীতে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ভোটে ইউক্রেনপন্থি সমর্থন তুলনামূলকভাবে কম দেখা গেছে। মোট ৯৩টি দেশ ইউক্রেনের পক্ষে ভোট দিয়েছে, ১৮টি দেশ বিরোধিতা করেছে এবং ৬৫টি দেশ ভোটদানে বিরত ছিল।

এর আগে জাতিসংঘে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক সমর্থন অনেক বেশি ছিল। ১৪০টি দেশ রাশিয়ার নিন্দা করেছিল, কিন্তু এবার ইউক্রেনের পক্ষে ভোটের সংখ্যা হ্রাস পাওয়াকে তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, মার্কিন নীতির এই পরিবর্তন আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ সৃষ্টি করতে পারে, যা ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ কৌশল ও কূটনৈতিক আলোচনায় প্রভাব ফেলবে।

কেকে

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

জনপ্রিয় সংবাদ

আমরা বাংলাদেশের জনগণের মহত্ত্ব ভুলব না : ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত

জাতিসংঘে রাশিয়ার পক্ষে অবস্থান নিল যুক্তরাষ্ট্র

আপডেট সময় : ১০:৪৩:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫

ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যকার যুদ্ধ তিন বছর পূর্ণ হতে চলেছে। এই প্রেক্ষাপটে জাতিসংঘে অনুষ্ঠিত দুটি পৃথক ভোটাভুটিতে রাশিয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন নীতিতে এটিকে বড় ধরনের পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়।

প্রতিবেদন থেকে আরও জানা যায়, ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের তৃতীয় বার্ষিকী উপলক্ষে জাতিসংঘে ভোটাভুটিতে যুক্তরাষ্ট্র দুবার রাশিয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এটি ট্রাম্প প্রশাসনের যুদ্ধ সম্পর্কিত নীতিতে পরিবর্তনের ইঙ্গিত দেয়।

প্রথম ভোটে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়া একসঙ্গে ইউরোপীয় দেশগুলোর প্রস্তাবের বিরোধিতা করে, যেখানে মস্কোর কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানানো হয়েছিল এবং ইউক্রেনের আঞ্চলিক অখণ্ডতার প্রতি সমর্থন দেওয়া হয়েছিল। তবে প্রস্তাবটি শেষ পর্যন্ত নিউইয়র্কে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে পাস হয়।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) জাতিসংঘে ইউরোপ সমর্থিত আরও একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়, যাতে দাবি করা হয় যে রাশিয়াকে ইউক্রেনের ভূখণ্ড থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। এই প্রস্তাব পাস হওয়াকে মস্কোর জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে দেখা হচ্ছে।

অন্যদিকে, জাতিসংঘে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে একটি পৃথক প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়, যেখানে যুদ্ধের সমাপ্তির কথা বলা হলেও রাশিয়ার আগ্রাসনের বিষয়টি সরাসরি উল্লেখ করা হয়নি। তবে এই প্রস্তাব জাতিসংঘের সাধারণ সভায় প্রত্যাখ্যাত হয়, যা ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে মনে করা হচ্ছে।

এ ছাড়া ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের নিন্দাসংবলিত আরেকটি প্রস্তাবের বিরোধিতায় যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি রাশিয়ার পাশে দাঁড়ায়। এই প্রস্তাবে মার্কিন দেশের সঙ্গে ছিল বেলারুশ, উত্তর কোরিয়া ও সুদান।

জাতিসংঘে নিযুক্ত মার্কিন প্রতিনিধি ইউক্রেনকে অনুরোধ করেন যেন তারা নিজেদের প্রস্তাব তুলে নেয় এবং মার্কিন প্রস্তাবকে সমর্থন দেয়। তবে ইউক্রেন তার অবস্থানে অনড় থাকে। মার্কিন খসড়া প্রস্তাবে ইউরোপীয় পক্ষের কিছু দাবিকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাবও দেওয়া হয়, যেখানে রাশিয়ার আগ্রাসনকে জাতিসংঘ সনদের লঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল।

পরবর্তীতে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ভোটে ইউক্রেনপন্থি সমর্থন তুলনামূলকভাবে কম দেখা গেছে। মোট ৯৩টি দেশ ইউক্রেনের পক্ষে ভোট দিয়েছে, ১৮টি দেশ বিরোধিতা করেছে এবং ৬৫টি দেশ ভোটদানে বিরত ছিল।

এর আগে জাতিসংঘে ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের বিরুদ্ধে বৈশ্বিক সমর্থন অনেক বেশি ছিল। ১৪০টি দেশ রাশিয়ার নিন্দা করেছিল, কিন্তু এবার ইউক্রেনের পক্ষে ভোটের সংখ্যা হ্রাস পাওয়াকে তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তন হিসেবে দেখা হচ্ছে।

বিশ্লেষকদের মতে, মার্কিন নীতির এই পরিবর্তন আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন সমীকরণ সৃষ্টি করতে পারে, যা ইউক্রেন যুদ্ধের ভবিষ্যৎ কৌশল ও কূটনৈতিক আলোচনায় প্রভাব ফেলবে।

কেকে