ঢাকা ০৫:৫৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫, ২৮ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জিভ দেখেলেই রোগ চিনেন চিকিৎসক

ছবিঃ সংগৃহীত

আপনি খাবার খাচ্ছেন, আবার সেই খাবারের স্বাদ নিচ্ছেন জিভের ওপর ভরসা করেই। খাবার কেমন তা বুঝে নিচ্ছেন জিভের ওপর নির্ভর করে। ঠিক তেমনই শরীরের হাল বুঝতেও কাজে আসে এই অঙ্গ। জিভের স্বাভাবিক হালকা গোলাপি রঙ বদলে গেলে তা বিভিন্ন সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। যেমন ভাইরাস জ্বর হোক কিংবা পেটব্যথা— চিকিৎসকদের কাছে গেলেই তারা সবার আগে রোগীর জিভ দেখতে চান। কেন বলুন তো?

কারণ খাবারের স্বাদ কেমন তা বুঝতে যেমন জিভের ওপরেই ভরসা রাখতে হয়, ঠিক তেমনই শরীরের হাল বুঝতেও নির্ভর করে জিভের ওপর। জিভের স্বাভাবিক হালকা গোলাপি রঙ বদলে গেলে তা বিভিন্ন সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। অনেক সময়ে জিভের ওপর সাদাটে আস্তরণ পড়তে দেখা যায়। কেন হয় এমন, তা জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।

চিকিৎসকদের মতে, মুখের স্বাস্থ্যের খেয়াল না রাখলে জিভের ওপর সাদা আস্তরণ পড়ে। ব্যাক্টেরিয়া ও ছত্রাকের আক্রমণে এমনটি হতে পারে। শরীরে পানির ঘাটতি হলেও জিভ সাদা হয়ে যায়। নিয়মিত মদপান ও ধূমপান করলেও জিভের ওপর সাদা স্তর পড়ে। এ ছাড়া কিছু রোগের ক্ষেত্রেও জিভে দেখেই যাচাই করেন চিকিৎসকরা। জেনে নিন কখন সাবধান হবেন।

যখন জিভ দেখেই যায় রোগ চেনা—

১. মুখের ভেতরেই ‘ক্যান্ডিডা ইস্ট’ নামে এক প্রকার ছত্রাক থাকে। এই ছত্রাকটি মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে গেলেও জিভে সাদাটে আস্তরণ তৈরি হতে পারে। বিজ্ঞানের ভাষায়, একেই বলে ওরাল থ্রাশ। সাধারণত এটি গুরুতর সমস্যা না হলেও ওরাল থ্রাশ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে। তাই এ সমস্যার আড়ালে লুকিয়ে থাকতে পারে কোনো গভীর সমস্যাও।

২. লিউকোপ্লাকিয়ার কারণে এমনটি হতে পারে। নাম খটমট হলেও সমস্যাটি সাধারণত খুব একটা উদ্বেগের নয়। জিভ বা মুখগহ্বরের ওপরের ত্বকের কোষের অত্যধিক বৃদ্ধির কারণে এ সমস্যা দেখা দেয়। এই কোষগুলো কেরাটিন নামের একটি প্রোটিনের সঙ্গে মিশে জিভে একটি সাদা আস্তরণ তৈরি করে। সাধারণত নিজে থেকে সেরে গেলেও কখনো কখনো লিউকোপ্লাকিয়া থেকে মুখের ক্যানসারের আশঙ্কা থাকে। তাই সময় থাকতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই ভালো।

৩. সিফিলিস একটি যৌন রোগ। জিভে সাদা রঙের আস্তরণ এই রোগের অন্যতম লক্ষণ। সাধারণত অসুরক্ষিত যৌন মিলনের মধ্য দিয়ে এই রোগের ব্যাক্টেরিয়া ছড়িয়ে পড়ে সুস্থ ব্যক্তির দেহে। সময়মতো চিকিৎসা না হলে এই রোগ মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে। তাই জিভে এ ধরনের কোনো সমস্যা দেখা দিলে দেরি না করে যেতে হবে চিকিৎসকের কাছে।

৪. জিভের রঙ হঠাৎ নীলচে বা বেগনি হয়ে গেলে বুঝতে হবে শরীরে অক্সিজেনের অভাব হচ্ছে। এ ছাড়া শ্বাসযন্ত্র কিংবা কার্ডিওভাসকুলার কোনো সমস্যা থাকলেও জিভের রঙ নীল হয়ে যেতে পারে।

৫. জিভের রঙ একেবারে ফ্যাকাশে হয়ে গেলে তা রক্তে আয়রনের অভাবকেই ইঙ্গিত করে। আবার জিভের ওপর লাল ও সাদা চাকা চাকা দাগ অটোইমিউন রোগের ইঙ্গিতও বহন করে।

কেকে

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

জনপ্রিয় সংবাদ

জিভ দেখেলেই রোগ চিনেন চিকিৎসক

আপডেট সময় : ০৩:৫৪:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫

আপনি খাবার খাচ্ছেন, আবার সেই খাবারের স্বাদ নিচ্ছেন জিভের ওপর ভরসা করেই। খাবার কেমন তা বুঝে নিচ্ছেন জিভের ওপর নির্ভর করে। ঠিক তেমনই শরীরের হাল বুঝতেও কাজে আসে এই অঙ্গ। জিভের স্বাভাবিক হালকা গোলাপি রঙ বদলে গেলে তা বিভিন্ন সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। যেমন ভাইরাস জ্বর হোক কিংবা পেটব্যথা— চিকিৎসকদের কাছে গেলেই তারা সবার আগে রোগীর জিভ দেখতে চান। কেন বলুন তো?

কারণ খাবারের স্বাদ কেমন তা বুঝতে যেমন জিভের ওপরেই ভরসা রাখতে হয়, ঠিক তেমনই শরীরের হাল বুঝতেও নির্ভর করে জিভের ওপর। জিভের স্বাভাবিক হালকা গোলাপি রঙ বদলে গেলে তা বিভিন্ন সমস্যার লক্ষণ হতে পারে। অনেক সময়ে জিভের ওপর সাদাটে আস্তরণ পড়তে দেখা যায়। কেন হয় এমন, তা জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।

চিকিৎসকদের মতে, মুখের স্বাস্থ্যের খেয়াল না রাখলে জিভের ওপর সাদা আস্তরণ পড়ে। ব্যাক্টেরিয়া ও ছত্রাকের আক্রমণে এমনটি হতে পারে। শরীরে পানির ঘাটতি হলেও জিভ সাদা হয়ে যায়। নিয়মিত মদপান ও ধূমপান করলেও জিভের ওপর সাদা স্তর পড়ে। এ ছাড়া কিছু রোগের ক্ষেত্রেও জিভে দেখেই যাচাই করেন চিকিৎসকরা। জেনে নিন কখন সাবধান হবেন।

যখন জিভ দেখেই যায় রোগ চেনা—

১. মুখের ভেতরেই ‘ক্যান্ডিডা ইস্ট’ নামে এক প্রকার ছত্রাক থাকে। এই ছত্রাকটি মাত্রাতিরিক্ত বেড়ে গেলেও জিভে সাদাটে আস্তরণ তৈরি হতে পারে। বিজ্ঞানের ভাষায়, একেই বলে ওরাল থ্রাশ। সাধারণত এটি গুরুতর সমস্যা না হলেও ওরাল থ্রাশ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে। তাই এ সমস্যার আড়ালে লুকিয়ে থাকতে পারে কোনো গভীর সমস্যাও।

২. লিউকোপ্লাকিয়ার কারণে এমনটি হতে পারে। নাম খটমট হলেও সমস্যাটি সাধারণত খুব একটা উদ্বেগের নয়। জিভ বা মুখগহ্বরের ওপরের ত্বকের কোষের অত্যধিক বৃদ্ধির কারণে এ সমস্যা দেখা দেয়। এই কোষগুলো কেরাটিন নামের একটি প্রোটিনের সঙ্গে মিশে জিভে একটি সাদা আস্তরণ তৈরি করে। সাধারণত নিজে থেকে সেরে গেলেও কখনো কখনো লিউকোপ্লাকিয়া থেকে মুখের ক্যানসারের আশঙ্কা থাকে। তাই সময় থাকতে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই ভালো।

৩. সিফিলিস একটি যৌন রোগ। জিভে সাদা রঙের আস্তরণ এই রোগের অন্যতম লক্ষণ। সাধারণত অসুরক্ষিত যৌন মিলনের মধ্য দিয়ে এই রোগের ব্যাক্টেরিয়া ছড়িয়ে পড়ে সুস্থ ব্যক্তির দেহে। সময়মতো চিকিৎসা না হলে এই রোগ মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে। তাই জিভে এ ধরনের কোনো সমস্যা দেখা দিলে দেরি না করে যেতে হবে চিকিৎসকের কাছে।

৪. জিভের রঙ হঠাৎ নীলচে বা বেগনি হয়ে গেলে বুঝতে হবে শরীরে অক্সিজেনের অভাব হচ্ছে। এ ছাড়া শ্বাসযন্ত্র কিংবা কার্ডিওভাসকুলার কোনো সমস্যা থাকলেও জিভের রঙ নীল হয়ে যেতে পারে।

৫. জিভের রঙ একেবারে ফ্যাকাশে হয়ে গেলে তা রক্তে আয়রনের অভাবকেই ইঙ্গিত করে। আবার জিভের ওপর লাল ও সাদা চাকা চাকা দাগ অটোইমিউন রোগের ইঙ্গিতও বহন করে।

কেকে