মোনালিসার চিত্রকর্ম দেখেননি কিংবা নাম শুনেননি এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর। অন্তত রেপ্লিকা ছবি হলেও এটি দেখেছেন। বলা হয়ে থাকে, পৃথিবীর সবচেয়ে রহস্যজনক একটি ছবি হচ্ছে মোনালিসার ছবি।
মোনালিসার চিত্রকর্মটি লিওনার্দো দা ভিঞ্চির একটি অমর সৃষ্টি, যা তার রহস্যময় গুণাবলির জন্য বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত। এর অন্যতম আকর্ষণ হলো মোনালিসার অমোঘ হাসি, যা একসঙ্গে আনন্দ, বিষণ্নতা এবং রহস্যের অনুভূতি প্রকাশ করে।
জানা যায়, মোনালিসার ছবিটি আঁকা হয়েছিল একজন সিল্ক ব্যবসায়ীর অনুরোধে। ভিঞ্চির লেখা তার বইয়ে জানান, সিল্ক ব্যবসায়ী ফ্রান্সেসকো ডেল গিওকোন্ডো লিওনার্দোকে তার স্ত্রী লিসা গেরারদিনির প্রোট্রেট আঁকতে অনুরোধ করেন। মজার ব্যাপার হচ্ছে, ইতালিতে যে কোনো নারীকে ‘মোনা’ বলে সম্বোধন করা হতো। আর ছবিতে থাকা নারীর নাম লিসা। শব্দ দু’টো মিলিয়েই ছবিটির নাম দেওয়া হয় ‘মোনালিসা’।
দা ভিঞ্চি তার “সফুমাতো” পদ্ধতি ব্যবহার করে মুখমণ্ডল এবং গভীরতা ও জীবন্ততা এনেছেন, যা চিত্রকর্মটিকে অনন্য করে তুলেছে। মোনালিসার চোখের দৃষ্টি এমনভাবে আঁকা যে, মনে হয় সে সরাসরি দর্শকের দিকে তাকিয়ে আছে, যেকোনো কোণ থেকে এটি দেখলেও।
১৯১১ সালে লুভর মিউজিয়াম থেকে এটি চুরি হওয়ার ঘটনা আন্তর্জাতিক আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয় এবং এর জনপ্রিয়তা আরও বাড়িয়ে তোলে। লিওনার্দো দা ভিঞ্চির রেনেসাঁ যুগের প্রভাব এবং তার অসাধারণ দক্ষতা এই শিল্পকর্মকে কালজয়ী করেছে।
মোনালিসার পেছনের রহস্যময় প্রাকৃতিক দৃশ্য এবং লুভর মিউজিয়ামে এর প্রদর্শন এটিকে আরও বেশি আকর্ষণীয় করে তুলেছে। যুগে যুগে সাহিত্য, ফিল্ম এবং বিজ্ঞাপনে এর উপস্থিতি এটিকে শুধুমাত্র একটি চিত্রকর্ম নয়, বরং বিশ্ব-ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
আল ইয়ামিন আবির/এমএস