গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ বলেছেন, দেশের গণমাধ্যমকে স্বাধীন, শক্তিশালী ও বস্তনিষ্ঠ করতেই সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ লক্ষ্যে সম্পাদক, প্রকাশক, সাংবাদিকসহ অংশীজনদের সঙ্গে কথা বলে তাদের মতামত নেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, পরিসংখ্যান অধিদপ্তরের মাধ্যমে পাঠক, দর্শক ও শ্রোতা হিসাবে জনমত জরিপ চলছে। অংশীজনদের মতামতের ভিত্তিতেই গণমাধ্যম সংস্কারে প্রয়োজনীয় সুপারিশ করবে এ কমিশন।
মঙ্গলবার তিন পার্বত্য জেলায় কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে রাঙামাটিতে অনুষ্ঠিত মতবিনিময়ে সভাপতির বক্তব্যে এ কথা বলেন সংস্কার কমিশন প্রধান।
বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় অনুষ্ঠানে কমিশনের সদস্য কামরুন্নোছা হাসান, মোস্তফা সবুজ ও আবদুল্লাহ আল মামুন উপস্থিত ছিলেন। এতে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলার ৮০ জন গণমাধ্যমকর্মী অংশ নেন।
এ সময় মফস্বল সংবাদকর্মীদের নিরাপত্তা সুরক্ষা, উপযুক্ত পারিশ্রমিকসহ পেশাগত সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার পক্ষে মত দেন তারা।
পরে সভাপতির বক্তব্যে কমিশন প্রধান বলেন, গত পনের বছরে দেশের গণমাধ্যমে ছিল নৈরাজ্যকর অবস্থা। স্বাধীন ও বস্তনিষ্ঠভাবে কাজ করতে পারেনি দেশের বহু গণমাধ্যম। আবার অনেক গণমাধ্যম ফ্যাসিস্টদের পক্ষে কাজ করে তাদেরকে উসকে দিয়েছিল।
তিনি বলেন, দেশের বিভিন্ন স্থানে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক মামলা দেওয়া হয়েছে। এসব মামলা প্রত্যাহারে সরকারকে সুপারিশ করা হয়েছে। এছাড়া সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে যাতে কোনো রকম ফৌজদারি মামলা নেওয়া না হয় এবং কারও বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ হলে সেগুলো দেওয়ানি মামলার মাধ্যমে নিষ্পত্তির জন্য সুপারিশ করবে কমিশন।
তিনি বলেন, মফস্বলের সাংবাদিকদের সব সময় নানা ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয়। তারা উপযুক্ত পারিশ্রমিকও পান না। সবচেয়ে ঝুঁকি নিয়ে কাজ করতে হয় পার্বত্য এলাকার সাংবাদিকদের। দুর্গম হওয়ার কারণে কোনো সংবাদের তথ্য সংগ্রহ করতে গিয়ে যাতায়াত ব্যয় যেমন প্রচুর, তেমনি ঝুঁকি অনেক। তাই পার্বত্য এলাকার বিষয়টি বিশেষ বিবেচনার পাশাপাশি মফস্বলের সাংবাদিকদের অর্থনৈতিক নিরাপত্তাসহ তাদের পেশাগত সুরক্ষায় সুপারিশ করবে সংস্কার কমিশন। বর্তমানে সম্পাদকীয় নীতিমালা নেই। অথচ তা হওয়া জরুরি।
তিনি বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের সময়ে আইনকে উপেক্ষা করে অনেকগুলো অযোগ্য সংবাদপত্র, টিভি চ্যানেল ও রেডিওর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। সেগুলো নানা অনিয়ম করে এসেছে। বর্তমানে রাজধানীতে পত্রিকা বিক্রি হয় ৪৬টির। কিন্তু রাজধানীতে সংবাদপত্রের সংখ্যা ৩০২ এবং সারা দেশের সংখ্যা ৫৯৮। এগুলোর বেশিরভাগ সংবাদপত্র আন্ডারগ্রাউন্ডে পড়ে থাকে। এগুলোর বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা দরকার।
কেকে