প্রশ্ন: বেশিরভাগ আন্তনগর ট্রেনে বেশিরভাগ নামাজের কক্ষ আছে। তবে ট্রেন চলা অবস্থায় দাঁড়িয়ে নামাজ পড়া কঠিন হয়। কারণ ঝাঁকুনির দরুণ পড়ে যাওয়ার উপক্রম হয় বা পড়েও যাই। আবার নামাজ অবস্থায় ট্রেন দিক পরিবর্তন করলে কেবলা ঠিক রাখা মুশকিল হয়।নামাজের ভেতর কেবলা পরিবর্তন হয়ে গেলে সেক্ষেত্রে কি করব? নামাজ কি আবার নতুন করে পড়ব?
উত্তর: স্থির ভূমিতে নামাজ পড়ার সময় কোন কারনে নামাজী ব্যক্তির সিনা কেবলার দিক হতে উভয় দিকে ৪৫ ডিগ্রির মধ্যে ঘুরে গেলেও নামাজ হয়ে যাবে।আর যদি নামাজী ব্যক্তির সিনা ৪৫ ডিগ্রির বাইরে ঘুরে যায় তাহলে নামাজ নষ্ট হয়ে যাবে।
ট্রেনে নামাজ শুরু করার সময় কেবলার দিক নিশ্চিত করে সেদিকে ফিরে নামাজ পড়তে হবে। অতপর নামাজ অবস্থায় ট্রেন ঘুরে যাওয়ার কারণে কিবলার দিক পরিবর্তন হয়ে গেলে নামাজী তা বুঝামাত্র কিবলার দিকে ঘুরে যাবে।
কিবলার দিক পরিবর্তন হয়ে গেছে জানা সত্ত্বেও নামাজে কিবলার দিকে না ঘুরলে ওই নামাজ পুনরায় পড়ে নিতে হবে। তবে শুরুতে কিবলামুখী হয়ে দাঁড়ানোর পর নামাজের ভিতর কিবলা পরিবর্তনের বিষয়ে জানতে না পারার কারণে যদি ওভাবেই নামাজ শেষ করে তার নামাজ আদায় হয়ে যাবে।
উল্লেখ্য যে, চলন্ত ট্রেনে ওই সময় নামাজে দাঁড়ানো উচিত যখন ট্রেনটি একদিকে চলতে থাকে তাহলে নামাজের ভিতর কিবলা পরিবর্তন করতে হবে না।
চলন্ত লঞ্চ, জাহাজ, ট্রেন ও বিমানে ফরজ নামাজ সম্ভব হলে কেবলামুখী হয়ে দাঁড়িয়ে রুকু-সিজদাসহ আদায় করবেন। দাঁড়ানো যদি কষ্টকর হয় তাহলে বসে স্বাভাবিক রুকু-সিজদা করে নামাজ আদায় করবেন। এভাবে নামাজ আদায় করতে পারলে পরবর্তী সময়ে তা পুনরায় পড়তে হবে না।
আর যদি কেবলামুখী হয়ে রুকু-সিজদার সঙ্গে নামাজ আদায় করা সম্ভব না হয় তাহলে যেভাবে সম্ভব বসে বা ইশারায় নামাজ পড়ে নিবেন। এ ক্ষেত্রে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে এলে সতর্কতামূলক ওই ফরজ নামাজ পরবর্তী সময়ে আবার পড়ে নিবেন।
আর বাসে যেহেতু সাধারণত দাঁড়িয়ে স্বাভাবিকভাবে নামাজ পড়া যায় না তাই কাছাকাছি যাতায়াতের ক্ষেত্রে ওয়াক্ত শেষ হওয়ার পূর্বে গন্তব্যে পৌঁছে নামাজ আদায় করা সম্ভব হবে না বলে মনে হলে এবং নেমে যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ অথবা অসুবিধাজনক না হলে পথিমধ্যে নেমে ফরজ নামাজ পড়ে নিবেন।
আর দূরের যাত্রা হলে অথবা যে ক্ষেত্রে নেমে গেলে ঝুঁকি অথবা সমস্যায় পড়ার আশঙ্কা থাকে সে ক্ষেত্রে বাস না থামলে সিটেই যেভাবে সম্ভব বসে বা ইশারায় নামাজ আদায় করে নিবেন এবং সতর্কতামূলক পরবর্তী সময়ে এর কাজা করে নেবেন।
সূত্র: মুসান্নাফ আবদুর রাযযাক ২/৮১; ফাতাওয়া তাতারখানিয়া ২/৫৪১; ফাতাওয়া হিন্দিয়া ১/১৪৪; ফাতাওয়া খানিয়া ১/৭৬ বাদায়েউস সানায়ে ১/২৯১; রদ্দুল মুহতার ২/১০২
কেকে