ঢাকা ১১:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
ব্রিটিশ আমেরিকান সেন্টারে চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি আলবেনিয়ায় নিষিদ্ধ করা হয়েছে টিকটক বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গকে শিক্ষা নেওয়ার পরামর্শ দিলেন মিঠুন চক্রবর্তী রাশিয়া-যুক্তরাষ্ট্র এবং অন্যান্য পশ্চিমা দেশের সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে শর্ত দিলেন পুতিন কনসার্টের মঞ্চে হাসিনার বিচার দাবি, ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান সারজিস আলমের শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে পঙ্গু করে দিয়েছে: শিক্ষা উপদেষ্টা ৬০ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ নিয়ে যা জানালেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন তিতুমীর কলেজ শিক্ষার্থীর জীবন বাঁচাতে প্রয়োজন ১০ লাখ টাকা লালপুরে স্কুলের জায়গা দখল করে নির্মাণ হচ্ছে ওয়ার্ড বিএনপি’র কার্যালয় লালপুরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে সাংবাদিকের ছেলের মৃত্যু

বিজয় অনুষ্ঠানে দাওয়াত না পেয়ে ছাত্রদলের হট্টগোল, অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি

বিজয় অনুষ্ঠানে দাওয়াত না পেয়ে ছাত্রদলের হট্টগোল, অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি

রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে দাওয়াত না পাওয়ায় হট্টগোল করেছেন তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। পরে তারা অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিও জানান।

সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) তিতুমীর কলেজের শহীদ বরকত মিলনায়তনে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানের শেষ দিকে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাংস্কৃতিক পর্ব শেষ হওয়ার পর খাবার বিতরণ পর্ব শুরু হওয়ার আগেই ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা মিলনায়তনের সামনের গেটে এসে রাজনৈতিক স্লোগান দিতে থাকেন। এরপর তারা দলবেঁধে মিলনায়তনের ভেতরে ঢুকে স্লোগান দেন। ফলে খাবার বিতরণ পর্ব সফলভাবে শেষ করা সম্ভব হয়নি। তাদের হট্টগোলের কারণে অনেক শিক্ষক মিলনায়তন ত্যাগ করেন। এরপর ভিড় ঠেলে শিক্ষার্থীরাও মিলনায়তন ছেড়ে চলে যান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, কিছুক্ষণ পর ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা অধ্যক্ষের কার্যালয়ে গিয়ে অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবি জানান।

তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আরিফুর রহমান এমদাদ বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের রুম থেকে শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনার অর্ধশতাধিক বই এবং নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের বিভিন্ন ছবি উদ্ধার করে। আমাদের কলেজে একটি কর্মসূচি চলাকালে ঘটনাটি শুনে আমরাও অধ্যক্ষের রুমে গিয়ে ওইসব বই ও ছবি দেখতে পাই। এতে স্পষ্ট হয় যে অধ্যক্ষ আওয়ামী ফ্যাসিবাদের সহযোগী হিসেবে বিভিন্ন প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন। তার টেবিলে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচির ছবিও পাওয়া যায়। ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষোভে ফেটে পড়ে এবং অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবি জানায়।

তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন বলেন, আমরা ছোট ভাইদের মাধ্যমে জানতে পারি যে অধ্যক্ষের রুমে ২৪’র ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও তার বাবা শেখ মুজিবের বই এবং নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ছবি পাওয়া গেছে। অথচ শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, মাওলানা ভাসানী এবং শেরে বাংলা এ.কে. ফজলুল হকসহ জাতীয় নেতাদের কোনো ছবি তার রুমে নেই। তিনি আরও বলেন, যদি সে তার ভুলগুলো সংশোধন না করে, তাহলে আমরা তার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করব।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ অধ্যাপক শিপ্রা রানী মন্ডল বলেন, আমার হারানোর কিছু নেই। আমি মেধার জোরে অধ্যক্ষ হয়েছি, কোনো রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে নয়। আমি কখনো কাউকে রাজনৈতিক সুবিধা দেইনি, ভবিষ্যতেও দেব না। তিনি আরও বলেন, আমার বিরুদ্ধে ওদের অভিযোগ কী? সেটা স্পষ্ট করে বলুক। ওরা হইচই করতে করতে রুমে ঢুকেছে এবং কলেজের পুরাতন অ্যালবামগুলো বের করে আমার সামনে রেখে ছবি তুলেছে। আগের অধ্যক্ষ কী করেছেন, তার দায় আমি নেব না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজের এক সহকারী অধ্যাপক বলেন, বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে তাদের (ছাত্রদল) দাওয়াত না দেওয়ার কারণে তারা অধ্যক্ষের রুমে আসে। অধ্যক্ষের টেবিলের ওপর কোনো শেখ মুজিবের ছবি ছিল না। তবে তাদের কয়েকজন নেতাকর্মী রুমের পুরাতন আলমারি থেকে শেখ মুজিবের কিছু বই এবং বিগত সরকারের আমলের কিছু ছবি বের করে টেবিলের ওপর রাখে। তিনি আরও বলেন, পুরাতন আলমারিগুলো কলেজের আর্কাইভ হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যেখানে কলেজের পুরাতন সবকিছু সংরক্ষণ করে রাখা হয়।

আজকের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, ক্যাম্পাস রাজনীতি মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল সব ধরনের রাজনৈতিক স্লোগান, মিছিল ইত্যাদি নিষিদ্ধ। তারপরও তারা এভাবে প্রতিনিয়ত স্লোগান, মিছিল, পোস্টারে ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে।

শিক্ষার্থীরা বলেন, শহীদ বরকত মিলনায়তনে যে ঘটনা ঘটেছে তার নিন্দা জানাই। যুক্তিসম্মত কোন ঘটনা ঘটলে পদত্যাগের দাবি শিক্ষার্থীরা জানাতে পারে, এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের হস্তক্ষেপ দৃষ্টিকটু।

এই বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না জানতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসিরের মুঠোফোন একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন ধরেননি।

এ এস

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ব্রিটিশ আমেরিকান সেন্টারে চাকরির নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি

বিজয় অনুষ্ঠানে দাওয়াত না পেয়ে ছাত্রদলের হট্টগোল, অধ্যক্ষের পদত্যাগ দাবি

আপডেট সময় : ০৭:৩১:১৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪

রাজধানীর সরকারি তিতুমীর কলেজে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে আনুষ্ঠানিকভাবে দাওয়াত না পাওয়ায় হট্টগোল করেছেন তিতুমীর কলেজ ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। পরে তারা অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবিও জানান।

সোমবার (১৬ ডিসেম্বর) তিতুমীর কলেজের শহীদ বরকত মিলনায়তনে বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানের শেষ দিকে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাংস্কৃতিক পর্ব শেষ হওয়ার পর খাবার বিতরণ পর্ব শুরু হওয়ার আগেই ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা মিলনায়তনের সামনের গেটে এসে রাজনৈতিক স্লোগান দিতে থাকেন। এরপর তারা দলবেঁধে মিলনায়তনের ভেতরে ঢুকে স্লোগান দেন। ফলে খাবার বিতরণ পর্ব সফলভাবে শেষ করা সম্ভব হয়নি। তাদের হট্টগোলের কারণে অনেক শিক্ষক মিলনায়তন ত্যাগ করেন। এরপর ভিড় ঠেলে শিক্ষার্থীরাও মিলনায়তন ছেড়ে চলে যান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আরও জানান, কিছুক্ষণ পর ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা অধ্যক্ষের কার্যালয়ে গিয়ে অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবি জানান।

তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রদলের সভাপতি আরিফুর রহমান এমদাদ বলেন, সাধারণ শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষের রুম থেকে শেখ মুজিব ও শেখ হাসিনার অর্ধশতাধিক বই এবং নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের বিভিন্ন ছবি উদ্ধার করে। আমাদের কলেজে একটি কর্মসূচি চলাকালে ঘটনাটি শুনে আমরাও অধ্যক্ষের রুমে গিয়ে ওইসব বই ও ছবি দেখতে পাই। এতে স্পষ্ট হয় যে অধ্যক্ষ আওয়ামী ফ্যাসিবাদের সহযোগী হিসেবে বিভিন্ন প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করেছেন। তার টেবিলে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন কর্মসূচির ছবিও পাওয়া যায়। ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্ষোভে ফেটে পড়ে এবং অধ্যক্ষের পদত্যাগের দাবি জানায়।

তিতুমীর কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক ইমাম হোসেন বলেন, আমরা ছোট ভাইদের মাধ্যমে জানতে পারি যে অধ্যক্ষের রুমে ২৪’র ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও তার বাবা শেখ মুজিবের বই এবং নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের ছবি পাওয়া গেছে। অথচ শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান, মাওলানা ভাসানী এবং শেরে বাংলা এ.কে. ফজলুল হকসহ জাতীয় নেতাদের কোনো ছবি তার রুমে নেই। তিনি আরও বলেন, যদি সে তার ভুলগুলো সংশোধন না করে, তাহলে আমরা তার পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করব।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ অধ্যাপক শিপ্রা রানী মন্ডল বলেন, আমার হারানোর কিছু নেই। আমি মেধার জোরে অধ্যক্ষ হয়েছি, কোনো রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে নয়। আমি কখনো কাউকে রাজনৈতিক সুবিধা দেইনি, ভবিষ্যতেও দেব না। তিনি আরও বলেন, আমার বিরুদ্ধে ওদের অভিযোগ কী? সেটা স্পষ্ট করে বলুক। ওরা হইচই করতে করতে রুমে ঢুকেছে এবং কলেজের পুরাতন অ্যালবামগুলো বের করে আমার সামনে রেখে ছবি তুলেছে। আগের অধ্যক্ষ কী করেছেন, তার দায় আমি নেব না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলেজের এক সহকারী অধ্যাপক বলেন, বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে তাদের (ছাত্রদল) দাওয়াত না দেওয়ার কারণে তারা অধ্যক্ষের রুমে আসে। অধ্যক্ষের টেবিলের ওপর কোনো শেখ মুজিবের ছবি ছিল না। তবে তাদের কয়েকজন নেতাকর্মী রুমের পুরাতন আলমারি থেকে শেখ মুজিবের কিছু বই এবং বিগত সরকারের আমলের কিছু ছবি বের করে টেবিলের ওপর রাখে। তিনি আরও বলেন, পুরাতন আলমারিগুলো কলেজের আর্কাইভ হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যেখানে কলেজের পুরাতন সবকিছু সংরক্ষণ করে রাখা হয়।

আজকের ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, ক্যাম্পাস রাজনীতি মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছিল। বলা হয়েছিল সব ধরনের রাজনৈতিক স্লোগান, মিছিল ইত্যাদি নিষিদ্ধ। তারপরও তারা এভাবে প্রতিনিয়ত স্লোগান, মিছিল, পোস্টারে ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল করে তুলেছে।

শিক্ষার্থীরা বলেন, শহীদ বরকত মিলনায়তনে যে ঘটনা ঘটেছে তার নিন্দা জানাই। যুক্তিসম্মত কোন ঘটনা ঘটলে পদত্যাগের দাবি শিক্ষার্থীরা জানাতে পারে, এ বিষয়ে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের হস্তক্ষেপ দৃষ্টিকটু।

এই বিষয়ে কোন ব্যবস্থা নেয়া হবে কি না জানতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব ও সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসিরের মুঠোফোন একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন ধরেননি।

এ এস