ঢাকা ০৩:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ এপ্রিল ২০২৫, ২৫ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম ::
আমরা বাংলাদেশের জনগণের মহত্ত্ব ভুলব না : ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত চীন পণ্যে ১০৪ শতাংশ শুল্কারোপের হুঁশিয়ারি ট্রাম্পের ‘দাগি’র বিশেষ প্রদর্শনীতে ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদ নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ আফ্রিকান ইউনিয়নের সম্মেলন থেকে বহিষ্কার ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত নেতানিয়াহুর বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা এড়াতে নতুন কৌশল নেতানিয়াহুর গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে জয়পুরহাটে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ ফিলিস্তিনে গ’ণ’হ’ত্যার প্রতিবাদে শাজাহানপুর উপজেলা জামায়াতের বিক্ষোভ মিছিল বৈশাখে পান্তা-ইলিশ খাওয়া সংস্কৃতির অংশ নয়: মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

তীব্র জনবল সংকট নিয়ে চলছে দেশের একমাত্র মহিষ প্রজনন খামার

ছবি : সংগৃহীত

খালিদ হাসান, বাগেরহাট প্রতিনিধি:

নানা সমস্যায় জর্জরিত দেশের একমাত্র সরকারি মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামার। খামারে বিভিন্ন জাতের মহিষ থাকলেও নেই পর্যাপ্ত জনবল। মাত্র ১০ শতাংশ মহিষ পরিচর্যাকারী দিয়ে খামারের ৪১৮টি মহিষের খাদ্য ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্যসেবা ও পরিচর্যা যথাযথভাবে করা সম্ভব হচ্ছে না, ফলে তৈরি হয়েছে স্থবিরতা। এর ফলে মহিষের রুগ্নতা ও মৃত্যুর হার বেড়ে যাচ্ছে, যা দেশের মাংস ও দুগ্ধ উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

দেশের একমাত্র মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামারটি গড়ে উঠেছে বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার খুলনা-মোংলা মহাসড়কের সুখদাড়ায়। (১৯৮৪-৮৫) সালে ১১১টি বিভিন্ন জাতের মহিষ নিয়ে এর যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে প্রায় ১০০ একর জমিতে মুররা, নিলিরাভিসহ অন্যান্য জাতের ছোট-বড় ৪১৮টি মহিষ রয়েছে। খামারের মূল উদ্দেশ্য ৫০ শতাংশ ভর্তুকি মূল্যে চাষিদের ষাঁড়-মহিষ সরবরাহ করা। গত অর্থবছরে ১৪২টি মহিষ বিক্রয় করা হয়েছে। তবে ৪১৮টি মহিষের সরাসরি পরিচর্যার জন্য ৩৮টি চতুর্থ শ্রেণির পদের বিপরীতে মাত্র চারজন কর্মী কাজ করছেন। ফলে যথাযথভাবে সেড পরিষ্কার করা, সময়মতো খাবার দেওয়া ও যত্ন নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া, দুধ দোহন ও বিক্রয় কার্যক্রমসহ অন্যান্য কাজও ব্যাহত হচ্ছে।

সরেজমিনে মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামারে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে একাধিক শেডে মহিষ রাখা হয়েছে। ষাঁড় ও গাভী মহিষের পাশাপাশি বাচ্চাদের জন্যও রয়েছে আলাদা শেড। মহিষের স্বাস্থ্য দেখলেই পরিচর্যার ঘাটতি স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

মহিষের খাবারের জন্য খামার চত্বরে বিশেষভাবে ঘাস রোপণ করা হয়েছে। এখানকার উৎপাদিত দুধের গুণগত মান ভালো হওয়ায় প্রতিদিন সকালে ক্রেতাদের লাইন পড়ে। মহিষের দুধ গরুর দুধের চেয়ে চারগুণ বেশি ঘন এবং খাঁটি হওয়ায় ক্রেতারা ভিড় করেন। বর্তমানে প্রতি লিটার দুধ ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এখানে বছরে ৭০ থেকে ৮০ হাজার লিটার দুধ উৎপাদিত হয়।

এ বিষয়ে মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামারের সিনিয়র সহকারী পরিচালক শেখ আল মামুন বলেন, “প্রতিষ্ঠানটি শুরুর সময় ৫২ জন জনবল দেওয়া হয়েছিল। তবে গত ৪-৫ বছরে অবসরজনিত কারণে জনবলের সংখ্যা কমে গেছে। মহিষ উন্নয়ন প্রকল্পের জনবল থাকায় এতদিন এই অভাব অনুভূত হয়নি। কিন্তু প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে এখন জনবল সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে।

এমতাবস্থায় খামারের কার্যক্রম পরিচালনা করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। বিষয়টি গত জুন মাসের পর থেকে চিঠির মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। তবে চিঠি পাঠানোর ৮-৯ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো কোনো নতুন জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়নি। বর্তমানে অন্তত ৩০ জন নতুন জনবল পেলেই খামারের কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হবে।”

এমএস

ট্যাগস :

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

জনপ্রিয় সংবাদ

আমরা বাংলাদেশের জনগণের মহত্ত্ব ভুলব না : ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রদূত

তীব্র জনবল সংকট নিয়ে চলছে দেশের একমাত্র মহিষ প্রজনন খামার

আপডেট সময় : ০৯:২২:৪৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ মার্চ ২০২৫

খালিদ হাসান, বাগেরহাট প্রতিনিধি:

নানা সমস্যায় জর্জরিত দেশের একমাত্র সরকারি মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামার। খামারে বিভিন্ন জাতের মহিষ থাকলেও নেই পর্যাপ্ত জনবল। মাত্র ১০ শতাংশ মহিষ পরিচর্যাকারী দিয়ে খামারের ৪১৮টি মহিষের খাদ্য ব্যবস্থাপনা, স্বাস্থ্যসেবা ও পরিচর্যা যথাযথভাবে করা সম্ভব হচ্ছে না, ফলে তৈরি হয়েছে স্থবিরতা। এর ফলে মহিষের রুগ্নতা ও মৃত্যুর হার বেড়ে যাচ্ছে, যা দেশের মাংস ও দুগ্ধ উৎপাদনে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।

দেশের একমাত্র মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামারটি গড়ে উঠেছে বাগেরহাটের ফকিরহাট উপজেলার খুলনা-মোংলা মহাসড়কের সুখদাড়ায়। (১৯৮৪-৮৫) সালে ১১১টি বিভিন্ন জাতের মহিষ নিয়ে এর যাত্রা শুরু হয়। বর্তমানে প্রায় ১০০ একর জমিতে মুররা, নিলিরাভিসহ অন্যান্য জাতের ছোট-বড় ৪১৮টি মহিষ রয়েছে। খামারের মূল উদ্দেশ্য ৫০ শতাংশ ভর্তুকি মূল্যে চাষিদের ষাঁড়-মহিষ সরবরাহ করা। গত অর্থবছরে ১৪২টি মহিষ বিক্রয় করা হয়েছে। তবে ৪১৮টি মহিষের সরাসরি পরিচর্যার জন্য ৩৮টি চতুর্থ শ্রেণির পদের বিপরীতে মাত্র চারজন কর্মী কাজ করছেন। ফলে যথাযথভাবে সেড পরিষ্কার করা, সময়মতো খাবার দেওয়া ও যত্ন নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এছাড়া, দুধ দোহন ও বিক্রয় কার্যক্রমসহ অন্যান্য কাজও ব্যাহত হচ্ছে।

সরেজমিনে মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামারে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে একাধিক শেডে মহিষ রাখা হয়েছে। ষাঁড় ও গাভী মহিষের পাশাপাশি বাচ্চাদের জন্যও রয়েছে আলাদা শেড। মহিষের স্বাস্থ্য দেখলেই পরিচর্যার ঘাটতি স্পষ্ট হয়ে ওঠে।

মহিষের খাবারের জন্য খামার চত্বরে বিশেষভাবে ঘাস রোপণ করা হয়েছে। এখানকার উৎপাদিত দুধের গুণগত মান ভালো হওয়ায় প্রতিদিন সকালে ক্রেতাদের লাইন পড়ে। মহিষের দুধ গরুর দুধের চেয়ে চারগুণ বেশি ঘন এবং খাঁটি হওয়ায় ক্রেতারা ভিড় করেন। বর্তমানে প্রতি লিটার দুধ ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এখানে বছরে ৭০ থেকে ৮০ হাজার লিটার দুধ উৎপাদিত হয়।

এ বিষয়ে মহিষ প্রজনন ও উন্নয়ন খামারের সিনিয়র সহকারী পরিচালক শেখ আল মামুন বলেন, “প্রতিষ্ঠানটি শুরুর সময় ৫২ জন জনবল দেওয়া হয়েছিল। তবে গত ৪-৫ বছরে অবসরজনিত কারণে জনবলের সংখ্যা কমে গেছে। মহিষ উন্নয়ন প্রকল্পের জনবল থাকায় এতদিন এই অভাব অনুভূত হয়নি। কিন্তু প্রকল্পটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে এখন জনবল সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে।

এমতাবস্থায় খামারের কার্যক্রম পরিচালনা করা অত্যন্ত কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে। বিষয়টি গত জুন মাসের পর থেকে চিঠির মাধ্যমে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। তবে চিঠি পাঠানোর ৮-৯ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো কোনো নতুন জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়নি। বর্তমানে অন্তত ৩০ জন নতুন জনবল পেলেই খামারের কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হবে।”

এমএস